হযরত শামাউন (আঃ)-এর শারীরিক গঠন ও নবুয়ত লাভ-১ম পর্ব

হযরত জারজীস (আঃ) এর বেশ কিছুদিন পর আল্লাহ্‌ পাক হযরত শামাউন (আঃ) কে নবুয়ত প্রদান করেন। তার ব্যক্তিগত গুনাগুন সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে যে, তিনি অত্যন্ত খোদাভীরু ছিলেন, তাঁর দেহে আল্লাহ্‌ পাক অভূতপূর্ব শক্তিদান করেছিলেন। তৎকালের লোকজন তাঁর বিস্ময়কর দৈহিক শক্তি দেখে হয়রান হয়ে যেত। তাছাড়া তাঁর জন্য একটি বৈশিষ্ট্য ছিল এই যে, তাঁর সারা শরীরে মাথার চুলের মত লম্বা লম্বা পশম ছিল। তা ছিল এক দৃষ্টান্তহীন ঘটনা।

হযরত শামাউন (আঃ) এর সময় আমুজিয়া নামক রাজ্যে ফুতা নামক এক প্রবল পরাক্রান্ত বাদশাহ রাজত্ব করত। ঐ রাজ্যটি রোম সাগরের তীরে অবস্থিত।

বাদশাহ ফুতা ছিল যেমনি জালিম তেমনি আল্লাহ্‌ পাকের ঘোর বিরোধী। আল্লাহ্‌ পাককে ছেড়ে সে দেব-দেবীর পূজা করত। যার ফলে হযরত শামাউন (আঃ) এর সাথে তাঁর সংঘাত শুরু হল। হযরত শামাউন (আঃ) বহু চেষ্টা করেও তাঁকে সৎ পথে আনতে পারলেন না।

বাদশাহ ফুতা একদিকে যেমন প্রবল প্রতাপশালী ছিল অন্যদিকে সে আবার যতেষ্ট বিলাসী ও সৌখিন ছিল। সে মুক্ত বায়ু সেবন কেন্দ্র এবং স্বাস্থ্য নিবাস হিসাবে রোম সাগরের তীরে একটি বিরাট প্রসাদ তৈরী করেছিল। প্রতি বছর একাধারে চার মাস বাদশাহ ঐ স্বাস্থ্য নিবাসে অবস্থান করাত। এ সময় সে সেখানে এক বিরাট মল্লযুদ্ধ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হত। অনুষ্ঠানে বাদশাহের সৈন্যবাহিনীর হাজার হজার মল্লবাসীর সমবেত থাকত।

আল্লাহ্‌র নবী হযরত শামাউন (আঃ) বাদশাহ ফুতার আয়োজিত এক মল্লযুদ্ধ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে চারমাস তাতে লিপ্ত ছিলেন। এ প্রতিযোগিতায় তিনি এক সাথে বাদশাহর প্রায় ছয় হাজার মল্লবীরের মোকাবেলা করে অনায়াসে তাঁদের সাথে জয়যুক্ত হতেন। বাদশাহর বহু সৈন্য মল্লযুদ্ধেই হযরত শামাউন (আঃ) কর্তৃক জাহান্নামে প্রেরিত হত।

একাধারে চার মাস এভাবে যুদ্ধে কাটিয়ে সগৌরবে হযরত শামাউন (আঃ) নিজের গৃহে প্রত্যাবর্তন করতেন। অতঃপর স্বীয় প্রতিপালকের ইবাদাতে লিপ্ত হয়ে একাধারে চার মাস গভীরভাবে নিমগ্ন থাকতেন। এভাবে চার মাস একান্ত নির্জনে একনিষ্ট ইবাদাত সাধনার পরে একাধারে পরে একাধারে চার মাস জনসাধারণকে হেদায়েত করার কাজে আত্ননিয়োগ করতেন। বাদশাহকে খাঁটি ধর্মে আসার আহ্বান করায় বাদশাহ হযরত শামাউন (আঃ) এর প্রতি বিরক্তি এবং ক্রোধে অধীর হয়ে নবী হযরত শামাউন (আঃ) কে ধ্বংস করে ফেলতে বদ্ধপরিকর হল। কিন্তু হযরত শামাউন (আঃ) এর শক্তির অবস্থা দেখে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়লাভের আশা করা বৃথা। তাই বাদশাহ হযরত শামাউন (আঃ) কে কুটকৌশলে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করল। বাদশাহর পরিষদবর্গ বাদশাহকে পরামর্শ দিল যে, হযরত শামাউন (আঃ) কে প্রকাশ্যে আক্রমণ করে কাবু করা যাবে না বরং তাতে উল্টা তাঁদের ক্ষতি হবে। অতএব অতি গোপনে খুব কৌশলে তাঁর নিজস্ব কোন কেশ দ্বারাই তাঁকে হত্যা করতে হবে।

হযরত শামাউন (আঃ)-এর শারীরিক গঠন ও নবুয়ত লাভ- ২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।