ভন্ড নবীদের প্রতিহতকরন ও তুলাইহার তওবা
তুলাইহা নামে বনু আসাদে এক লোক ছিল । একদা তার মাথায় নবুয়্যতের কু-চিন্তা ঢুকে বিদায় হজ্জ হতে ফিরে এসে । তুলাইহা নিজ কওমের মাঝে নবুয়্যতের দাবি করার পর তার কওমের লোক তার অনুগত হয় । তার বন্ধুত্ব চুক্তি ছিল ‘আসাদ’ গোত্র আর ‘তাই’ গোত্রের মধ্যে । অরা সবাই তার সাথে হাত মিলিয়ে শরীক হল এবং গাফতান প্রচুর লোক তার সাথে শরীক হল । তুলাইহা বিশাল এক সৈন্যবাহিনী নিয়ে নজরদের বারাকা ঝর্নার কাছে ছাউনি স্থাপন করলেন ।
তুলাইহার মকাবেলা করার জন্য হযরত আবু বকর (রাঃ) হযরত খালেদ বিন ওয়ালীদ (রাঃ)-কে প্রেরন করলেন । ‘তাই’ গোত্রের নেত্রিস্থানীয় লোকদের মধ্যে ছিলেন হযরত আদী বিন হাতেম তাঈ । হাতেম তাঈ ঐ সময় মদিনায় অবস্থান করেছিলেন । হযরত আদী বিন হাতেম তাঈ হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ)-কে বলেন, আপনি আমাকে অনুমতি দিন , আমি আমার গোত্রকে এ ফিতনা হতে মুক্ত করবো । হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) অনুমতি প্রদান করলেন । এরপর হযরত আদীর চেষ্টায় সে গোত্রের সমস্ত লোক তুলাইহাকে ত্যাগ করল । একই প্রচেষ্টা হযরত আদী জদীলা গোত্রে করেও সেখানে সফলতা লাভ করল । তুলাইহা বাহিনীর সঙ্গে প্রচণ্ড যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে হযরত খালেক (রাঃ)- এর বাহিনীর সঙ্গে ‘বযাখা’ পৌঁছে । যখন তুলাইহা বাহিনীর পরাজিত হওয়ার আশংকা দেখা দিল । তখনই তুলাইহার সহযোগী তাগফানের সরদার উয়াইনা বিন হুসাইন ফাযারী তাঁর কাছে আসল । সে সময় তুলাইহা চাদর মুড়া দিয়ে এমন ভাবে বসেছিল তাতে মনে হচ্ছিল আসমানী বানী নাযিল হচ্ছে তাঁর ওপর । ঠিক সে মুহূর্তে সে প্রশ্ন করল যে, তোমার কাছে কোন আসমানী বানী এসেছে নাকি ? তখন তুলাইহা বলল, হ্যা । এ কথা বলে তিনি তাকে একটা ছন্দময়ী কথা শুনাল । যার প্রকৃত অর্থ হল, সফলতা আমাদের শেষ পর্যন্ত হবেই । এ কথা উয়াইনা শুনে বিশ্বাস না করে বলে যে এ লোক আসলে মিথ্যুক । এ কথা বলে উয়াইনা তাঁর নিজেদের লোকদের নিয়ে তুলাইহার বাহিনী হতে আলাদা হয়ে যায় । তুলাইহা তাঁর পরাজয় হবে জেনে পরিবার-পরিজন নিয়ে সিরিয়ার দিকে পালিয়ে যায় । এরপর সে কুফর হতে তওবা করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করলেন । ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে তুলাইহা ইরাক বিজয়ের সময়ে খুব বীরত্ব দেখিয়ে নিজের পাপের কাফফারা আদায়ের জন্য চেষ্টা করলেন ।