হযরত ছোলায়মান (আঃ)-এর জন্ম ও রাজত্ব -শেষ পর্ব
হযরত ছোলায়মান (আঃ)-এর জন্ম ও রাজত্ব -২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বিচার কে তিনি ইবাদাত মনে করতেন। তাই তিনি ওখানে বসে আল্লাহ তায়ালাকে সাক্ষী রেখে বিচারের রায় প্রদান করতেন। তাঁর রাজ মহলের মাঝে ছিল এক বিশাল মেহমান খান। সেখানে প্রতি দিন হাজার জাহার মানুষ খাওয়াত। প্রতিদিন সেখান থেকে সাতাশ মণ জবেহকৃত পাখির পালক ও জিব জন্তুর চামড়া ফেলে দেওয়া হত। এ থেকেই মেহমান খানার মেহমানদের সংখ্যা কিছুটা অনুমান কর যায়।
এতদষত্বেও হযরত ছোলায়মান (আঃ ) রাজকোষ থেকে নিজে খাদ্য বাবদ কিছু গ্রহন করতেন না। তাঁর নিজ শ্রম দ্বারা উপার্জিত অতি সামান্য উপার্জন দ্বারা নিজ আহার সংগ্রহ করতেন। কথিত আছে তিনি ব্যাগ তৈরির ছোট একটি ব্যবসা করতেন। উহা দ্বারা তিনি দৈনিক যা আয় করতেন তাই দিয়ে নিজের আহার যোগাতেন।
হযরত ছোলায়মান (আঃ) সারা পৃথিবীর উপর রাজত্ব করতেন। সমস্ত পশু–পক্ষী ও প্রাণী জগতের উপর ছিল তাঁর কর্তৃত্ব। আগুন বাতাস পানি ছিল তাঁর অধিন। জিন-পরি ছিল তাঁর আজ্ঞাবহ। এছাড়া তিনি আল্লাহর দরবারে যা চাইতেন তাৎক্ষণিকভাবে তা মঞ্জুর হত। এতদসত্ত্বের তিনি সারা রাত আল্লাহর দরবারে কান্না করে নিজের উম্মতের মঙ্গল কামনা করতেন। রিজিকের স্বল্পতা, দায়িত্ব থেকে অহংকার জাতীয় ক্ষতিকারক থেকে রিপু থেকে আল্লাহর দরবারে সর্বদা আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। কথিত আছে হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর বিচার ছিল অত্যান্ত কঠোর। যে বাদি হয়ে মামলা দায়ের করত সে যদি কোন মিথ্যা মামলা দায়ের করত আর যদি প্রামান হত তাহলে তাঁর শাস্তি হত। মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে অনেক সময় বাদিকে মৃত্যু প্রদান করা হত। আর যারা আসামি তারা অপরাধী সাব্যস্ত হলে তাদের জন্য ছিল ভিবিন্ন মেয়াদী কারাদণ্ড এবং মৃত্যুদন্ড। জিনদের ক্ষেত্রে যারা বড় অপরাধী সাব্যস্ত হত তাদেরকে সমুদ্রের তলদেশে পুতে ফেলা হত। আর যারা ছোট অপরাধী বলে গন্য হত তাদেরকে অঙ্গহানি ও ক্ষমতা রহিত জনিত শাস্তি প্রদান কর হত।
পশু- পক্ষীদের অপরাধের জন্য তাদের কে জবেহ করার বিধান ছিল। এভাবে তিনি আগুন, পানি, বাতাস, আলো সকলের প্রতি সমদৃষ্টি করে শাসন করতেন। হযরত ছোলায়মান (আঃ) তাঁর পিতা হযরত দাউদ (আঃ) কে দিয়ে বাতাসকে হাজির করে বিচার করে ছিলেন।
হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর সিংহাসনের সৌন্দর্য বর্ণনায় আরো বহু বিলাশী ও সোভাবর্শক উপাদানের কথা বহু লেখক তাদের বর্ণনায় করেছেন। যার সমুদয় বিবরণ এখানে বর্ণনা করা সম্ভব হল না।
হযরত ছোলায়মান (আঃ)-এর জন্ম ও রাজত্ব -১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন