হযরত আদম (আঃ) – এর বিবাহ-১ম পর্ব
হযরত আদম (আঃ)-এর সিংহাসনখানি আল্লাহ তায়ালার আদেশক্রমে জান্নাতুল ফেরদাউসে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে হযরত আদম (আঃ)-কে পূর্ণ স্বাধীনভাবে চলা, থাকা ও উপভোগের অধিকার দেওয়া হল । হযরত আদম (আঃ) বেহেস্তের অফুরন্ত নেয়ামতের মধ্য থেকে দিনরাত শুধু ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে কাটতেন । বেহেস্তের হুর- গেলমানেরা তাঁকে ভ্রমণের আনন্দ গ্রহণের জন্য নতুন নতুন পথ দেখালেন । কিন্তু হযরত আদম (আঃ) কোন কিছুর দিকে তেমন আকৃষ্ট হলেন না । শুধু ইবাদত বন্দেগী ও নিরবে বসে সময় কাটিয়ে দিতেন ।
প্রাণী জগতের চিরাচরিত স্বভাব থেকে তিনি মুক্ত থাকতে পারলেন না । তিনি বেহেস্তের অফুরন্ত নেয়ামতের মধ্যে থেকেও সঙ্গী সাথীর অভাব বোধ করলেন । তাই তিনি নিরাপদ জীবনযাপন করে যেতে লাগলেন । আল্লাহ তায়ালা এ বিষয় অবগত ছিলেন । তাই একদিন তিনি জিব্রাইল (আঃ)-কে আদম (আঃ)-এর নিকট প্রেরণ করলেন । জিব্রাইল (আঃ)-কে আদম (আঃ)-এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ভাই আদম বেহেস্তে আপনার কি রকম লাগছে । উত্তরে আদম (আঃ) বললেন, সবই ভালো লাগে, চতুর্দিকে তৃপ্তিকর পরিবেশ, হুল-গেলমানের পরিচর্যা প্রশংসাযোগ্য ।
তবু ও প্রাণে যেন কিসের এক অভাব অনুভব করছি । যা আমি আপনাকে বুঝিয়ে বলতে পারব না । আপনি আল্লাহ তায়ালার নিকট থেকে জেনে নিবেন এটা কিসের অভাব অনুভব করছি । জিব্রাইল (আঃ) বললেন , হ্যাঁ আমি আপনার এ অভাবের খবর জানি । আল্লাহ তায়ালা আমাকে এ আভাব পূরণ করে দিবার পদ্ধতি বলে দিয়েছেন । আমি শীঘ্রই সে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি । এ বলে জিব্রাইল (আঃ) সেদিনের মত চলে গেলেন ।
পরের দিন ফজরের পূর্বে জিব্রাইল (আঃ) আল্লাহ তায়ালার নির্দেশক্রমে হযরত আদম (আঃ)-এর ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর নিকট এসে বিনা অস্ত্রপাচারে কুদরতি কায়দায় তাঁর বাম পাঁজরের একখানি হাড় বের করে নিলেন । অতপর উহার উপর রক্ত, মাংস ও চামড়ার আবারন দিয়ে সজোরে ফুঁক দিলেন । অমনি এক অপরূপ নারী আকৃতিতে পরিণত হল । অতপর তিনি দ্বিতীয় বার তাঁর মুখে ফুঁক দিলেন অমনি তাঁর রুহ শরীরে প্রবিষ্ট হল । তৃতীয় বার তিনি যখন আর একটি ফুঁক দিলেন তখন সে নারী উঠে বসলেন এবং নিজের মুখে পর্দা দিয়ে লজ্জার অনুভূতি প্রকাশ করলেন ।
সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী