
বিশ্ব জগতের রহমত নবুওয়াতের আলোক ধারায় স্নাত হলো হেরা গিরিগুহা! নবুওয়াত লাভ করলেন মহানবী (সাঃ)। অভূতপূর্ব আবেগ-উত্তেজনায় অভিভূত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ফিরে এলেন হেরা গিরিগুহা থেকে খাদিজার কুটিরে। সহধর্মিণী খাদিজাও উদ্বেগাকুল। শুনলেন তিনি মহানবীর (সাঃ) এর কাছ থেকে হেরা গিরিগুহার সব কথা।
তারপর সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, “আপনি নিশ্চিত হোন, আনন্দিত হন, আল্লাহ আপনাকে কখনই বিপর্যস্ত করবেন না। স্বজনদের চির শুভাকাঙ্ক্ষী বন্ধু আপনি, পর দুঃখভার বহনকারী মহাজন আপনি, দরিদ্রের সেবক আপনি, যার কেউ নেই টার আপনজন আপনি- আল্লাহ আপনাকে কখনও বিপর্যস্ত করবেন না।”
কিন্তু সান্ত্বনা দেয়ার পর খাদিজাও যেন সান্ত্বনা পেতে চাইলেন। তাই মহানবীকে (সাঃ) সাথে নিয়ে খাদিজা (রাঃ) এলেন চাচাত ভাই খৃষ্টান শাস্ত্র বিশেষজ্ঞ ওয়ারাকা ইবন নওফলের কাছে। এসে বললেন, “ভাই, তোমার ভ্রাতুষ্পুত্র কি বলছেন শুন।”
ওয়ারাকা সব কথা শুনলেন নবীর (সাঃ) কাছ থেকে। শুনে তিনি উচ্ছসিত স্বরে বলে উঠলেন, “কুদ্দুসুন কুদ্দুসুন, মুসার কাছে আল্লাহ যে ‘নামুস’ পাঠিয়েছিলেন, এ সেই নামুস।” বৃদ্ধ ওয়ারাকা একটু দম নিলেন। বোধ হয় ভাবনার গহিনে একটু ডুব দিলেন। তারপর বলে উঠলেন, “হায় হায়, আজ যদি আমি যুবাবস্থায় থাকতাম! যখন তোমার স্বজাতীয়রা তোমাকে দেশান্তরিত করবে, তখন যদি আমি বেঁচে থাকতাম!”
ওয়ারাকার কথা শুনে বিস্মিত মোহাম্মাদ (সাঃ) বললেন, “আমাকে কি তারা দেশ থেকে বের করে দেবে?”
ওয়ারাকা জবাব দিলেন। বললেন, “নিশ্চয়ই, আর এটা শুধু তোমার ব্যাপার নয়। তুমি যে সত্য পেয়েছ, তা যারাই পেয়েছে তারা দেশবাসীর কোপানলে পড়েছে। হায়, আমি যদি ততদিন বেঁচে থাকি, তাহলে আমি নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমার পাশে দাঁড়াবো।”