হযরত আদম (আঃ) – এর সৃষ্টির কাহিনী-১ম পর্ব
আল্লাহ তায়ালা হযরত আদম (আঃ) কে সৃষ্টির কয়েক লক্ষ বছর পূর্বে শয়তানকে ফেরেশতাগনের মোয়াল্লেম হিসাবে নিয়োগদান করেন । শয়তানের আসল নাম আজাজিল । সে জিন জাতীয় প্রানী । আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর সৃষ্টির পরে জিন জাতিকে সৃষ্টি করেন । অতপর তাদের দ্বারা পৃথিবী আবাদ করেন । তাদেরকে পৃথিবীতে রাজত্ব করার অধিকার দান করেন । এক একজন জিন রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে হাজার হাজার বছর যাবত রাজত্ব করে পরিশেষে আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে নাফারমানি আরম্ভ করে দিত । যে অপরাধের জন্য একজনকে অপসারণ করে আল্লাহ তায়ালা নতুন ভক্ত আর একজন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দান করতেন । এভাবে কয়েক হাজার বছর পর পর রাষ্ট্র প্রধানগণ অপসারিত হত অথবা ধ্বংস হয়ে যেত । কেউ খোদায়ী দাবী করে বসত কেউ দেশে জেনা ব্যবিচার অবাধ করে আনন্দ ভোগ করত । আবার কেউ আল্লাহ তায়ালার আইন কানুনকে সমুলে উৎখাত করে নিজ প্রবর্তিত আইন জাতির ওপর চাপিয়ে দিত ।
এভাবে কয়েক লক্ষ বছর জিন জাতির রাজত্ব বহাল থাকে । এর মধ্যে ইমানদার , ন্যায়পরায়ণ রাজার আবির্ভাব আদৌ ঘটেনি বললেই চলে । সকলেই আল্লাহ তায়ালার সাথে ইমানদারির ওয়াদা করে পরে ওয়াদা ভঙ্গ করেছে । আল্লাহ তায়ালা জীনদের এ আচারনের খবর অবশ্যই পূর্বে থেকে অবগত ছিলেন । তবুও প্রকাশ্যে তাদের নাফারমানির সাক্ষ্য ব্যবহার করার লক্ষে তাদেরকে শাসন ক্ষমতা প্রদান করেছিলেন ।
যখন তারা বেইমানী ও খোদাদ্রোহীতার চরমে গিয়ে পৌছাল তখন তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য ফেরেশতাদিগকে হুকুম দিলেন । একদা কিছু সংখ্যক ফেরেস্তা পৃথিবীতে এসে জিন জাতিকে প্রায় সমুলে ধ্বংস করে দিলেন । মাত্র গুটি কতক বাচ্চা জিনকে জীবিত রেখে দিলেন । তার মধ্যে আজাজিল ও রক্ষা পেল । আজাজিল দেখতে যেমন সুন্দর ছিল তেমন বিদ্যাবুদ্ধতিতে খুবই সুচতুর ছিল । ফেরেশতাগণ তার সাথে কিছু কথা বলে আনন্দ পেলেন । তখন তাকে পৃথিবী থেকে আসমানে তুলে নিলেন ।
সেখানে আল্লাহ তায়ালার দরবারে তাকে পেশ করে তার গুনের কথা বললেন । তখন আল্লাহ তায়ালা তাকে বেহেস্তে বসবাসের হুকুম দিলেন । পরবর্তী সময়ে তাকে বাইতুল মামুরে রক্ষিত অক্ষর জ্ঞানবিজ্ঞানের লিপি অধ্যায়নের নির্দেশ দিলেন । আজাজিল আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ অনুসারে দিবারাত্র উক্ত জ্ঞান বিজ্ঞানের বিদ্যা অর্জনের লক্ষ্যে অসাধারণ পরিশ্রম আরম্ভ করে দিল । কয়েক বছরের মধ্যে যে জ্ঞানবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অসাধারণ বুৎপত্তি অর্জন করে ফেলল । যা ইতিপূর্বে কোন ফেরেস্তা দ্বারা কখনই সম্ভব হয় নি ।
সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী