শেরেবাংলা

আমাদের জনপ্রিয় নেতা ফজলুল হক সাহেবকে বলা হতো শেরেবাংলা। শেরেবাংলা মানে বাংলার বাঘ।
বাংলার বাঘ দুনিয়ার সবচাইতে বড় বাঘ। তার যেমন গায়ের জোর, তেমন বুকের সাহস।
শেরেবাংলার সাহস ছিল বাঘের মতো। এমনকি বাঘের চাইতেও বেশি।
এখন তাঁর সাহসের একটা ঘটনা বলছি। কিসসা নয়, এটা সত্য ঘটনা।
আমাদের নেতা শেরেবাংলা সব মানুষকেই ভালবাসতেন। স্বজাতির জন্য ছিল তাঁর বুকভরা দরদ। তখন পাক-ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশ-রাজ কায়েম ছিল। ইংরেজরা মুসলমানদের ওপর নানা রকম জুলুম চালাত। শেরেবাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হক ছিলেন একজন খাঁটি মুসলমান। মুসলমানদের ওপর ইংরেজের জুলুম দেখে তিনি মনে খুব দুঃখ পেতেন। কারণ সব মুসলমান ভাই ভাই। এক ভাই আর এক ভাইয়ের দুঃখে দুঃখিত না হলে খাঁটি মুসলমান হতে পারে না।
একদিন তিনি শুনতে পেলেন, মুসলমানদের গুলি করে মারার জন্য ইংরেজ সৈন্য কলকাতার বড় মসজিদের সামনে মেশিনগান পেতেছে। মেশিনগানের গুলিতে নিরীহ মুসলমানদের খুন করা হবেÑ এই কথা শুনতে পেয়ে শেরেবাংলা বাঘের মতো গর্জন করে উঠলেন। আর বললেন : শিগগির আমার গাড়ি নিয়ে এসো। কোনো মুসলমান মরার আগে আমি মরব।
গাড়িতে উঠে ঝড়ের বেগে তিনি সেই মসজিদের সামনে গেলেন। সেখানে গিয়ে দেখতে পেলেন, সত্যিই মুসলমানদের মারার জন্য অনেক ইংরেজ সৈন্য মসজিদের সামনে জমায়েত হয়েছে। আর মসজিদের ভেতরে অনেক মুসলমান চুপ করে বসে আছে। তাদের হাতে কোনো হাতিয়ার নেই। সামনে ইংরেজের মেশিনগান পাতা। এখনই গুলি ছোড়া হবে।
শেরেবাংলা গাড়ির ভেতর থেকেই সব দেখতে পেলেন। তিনি আর সহ্য করতে পারলেন না, লাফ দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে এলেন। আর মেশিনগানের সামনে চওড়া বুক পেতে দিয়ে বললেন : কোনো মুসলমানকে মারার আগে আমাকে গুলি করো।
শেরেবাংলার সাহস দেখে তখন ইংরেজ সৈন্যরা ভয় পেয়ে গেল। তারা আর গুলি করতে সাহস করল না।

দুঃখিত!