হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর মূর্তি ভাঙ্গার ঘটনা-১ম পর্ব
তখনকার দিনে আরব দেশে বছরে দুটি বিরাট মেলা বসত। এটা ছিল তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অন্যতম অংশ বিশেষ। এখানে আরবী অনারবী সকল ধরনের মানুষের সমাগণ হত। এ অনুষ্ঠানের প্রধান করণীয় বিষয় ছিল পূজা-অর্চনা, গান বাজনা, মদ্যপান ইত্যাদি এবং একাজগুলো তাদের নিকট যথেষ্ট পুণ্যের বলে বিবেচিত হত।
হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর দাওয়াতি কাজের তিন বছর পর একদা মেলার তারিখ সমাগত হল। মানুষ মেলায় যাত্রার উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি নিতে আরম্ভ করে। কেউ টাকা পয়সা সংগ্রহে ব্যস্ত থাকে। কেউ সেখানে ব্যবসার উদ্দেশ্যে পণ্যসামগ্রী আমদানির কাজে ব্যস্ত থাকে আবার কেউ গান বাজনার মহড়া প্রদান শুরু করে।
মেলা আরম্ভ হলে সেখানে অন্তত এক দিন কাটানো সকল মানুষের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল। তাই মেলার প্রথম দিনে সকল মানুষ নতুন সাজে সজ্জিত হয়ে সেখানে যাত্রা আরাম্ভ করে। হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-কে মেলায় উপস্থিত হওয়ার জন্য সকলে দাওয়াত দিতে লাগল। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কারো কথায় কোন জবাব দিতেন না । সর্বশেষ যখন তাঁর পিতা আজর ইব্রাহীম (আঃ) কে তাঁর সাথে মেলায় যাত্রার জন্য বলল, তখন তিনি আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, আমার স্বাস্থ্য খারাপ। মেলায় যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আজর কয়েকবার বলে, শেষে নিজে একা চলে গেল।
এদিকে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) যখন দেখলেন সকল মানুষ মেলায় গিয়েছে। তখন তিনি একখানি লোহার কুড়াল নিয়ে মন্দির অভিমুখে যাত্রা করেন এবং মন্দিরে ঢুকে বলেন হে ছোট বড় দেব দেবিগন ! তোমরা যদি সত্য এবং মহান প্রভুর মনোনীত হও তবে কলেমা পাঠ কর। এতপর তিনি বল্লেন, তোমরা যদি সত্য হও তবে আমার সঙ্গে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হও। আমি তোমাদেরকে ধ্বংস করতে এসেছি । এই বলে তিনি ছোট ছোট দেবতাগুলোকে হাত পা গুড়িয়ে দিলেন। ঝন ঝন আওয়াজে সবগুলো চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেল। তখন তিনি বড় দেবতা গুলোকেও ভেঙ্গে দিলেন। শুধু একটি দেবতাকে অক্ষত রেখে তাঁর কাধের উপর কুড়ালখানি রেখে দিয়ে বিদায় হলেন।
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর মূর্তি ভাঙ্গার ঘটনা- দ্বিতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন