খন্দকের যুদ্ধে শীত, ক্ষুধা ও ভয়-ভীতি সহ্য করা – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
একজন কালো মোটা সোটা লোক সেই আগুনে হাত গরম করিয়া কোমরের উপর বুলাইতেছে, আর বলিতেছে, পালাও পালাও। ইতিপূর্বে আমি আবু সুফিয়ানকে চিনিতাম না। আমি (সুবর্ণ সুযোগ মনে করিয়া) আগুনের আলোতে তাঁহার উপর তীর নিক্ষেপের উদ্দেশ্যে আপন তীরদান হইতে সাদা পর যুক্ত একটি তীর বাহির করিয়া ধনুকে জুড়িলাম।
কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশ ‘তাহাদের মধ্যে নতুন কিছু ঘটাইও না’ স্মরণ হইতেই থামিয়া গেলাম এবং তীর পুনরায় তীরদানে রাখিয়া দিলাম। তারপর নিজের মনে আরো একটু সাহজ সঞ্চয় করিয়া শত্রুবাহিনীর ভিতর ঢুকিয়া পড়িলাম। আমার নিকতবর্তী বনু আমিরের লোকেরা বলিতেছিল, হে আমের গোত্র, পালাও পালাও, এখন আর তোমাদের জন্য এখানে থাকা সমীচীন নহে। শত্রুবাহিনীর উপর প্রচণ্ডবেগে বাতাস ছিল না।
আল্লাহ্র কসম, প্রচণ্ড বাতাস পাথরসমুহ উড়াইয়া তাহাদের বিছানা ও অবস্থানের উপর ফেলিতেছিল আর আমি উহার আওয়াজ শুনিতে পাইতেছিলাম। আমি সেখান হইতে ফেরৎ রওয়ানা হইলাম। আধা আধি পথ অতিক্রম করিবার পর বিশজনের মত পাগড়ী পরিহিত ঘোড় সওয়ারের সহিত আমার সাক্ষাৎ হইল। তাহারা বলিল, তোমার মনিব (অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে সংবাদ দিয়া দিও যে, আল্লাহ্ তায়ালা তাঁহার শত্রুদের নিজেই ব্যবস্থা করিয়াছেন।
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ফিরিয়া আসিয়া দেখিলাম তিনি একখানা ছোট চাদর জড়াইয়া নামায পড়িতেছেন। আল্লাহ্র কসম আমি ফিরিয়া আসার সঙ্গে সঙ্গে শীত আমাকে চাপিয়া ধরিল এবং আমি শীতের দরুন কাঁপিতে লাগিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযরত অবস্থায় আমার প্রতি ঈশারা করিলেন।
আমি তাঁহার নিকটে গেলাম। তিনি চাদরের এক কিনারা আমার উপর ছাড়িয়া দিলেন। তাঁহার অভ্যাস মোবারক এই ছিল যে, যখনই কোন ভয় ভীতি দেখা দিত তিনি নামাযে মনোনিবেশ করিতেন। নামাযের পর আমি তাহাকে শত্রুর খবরা খবর জানাইলাম এবং আমি ইহাও বলিলাম যে, আমি তাহাদিগকে এই অবস্থায় ছাড়িয়া আসিয়াছি যে, তাহারা চলিয়া যাইতেছে।
সূত্রঃ হায়াতুস সাহাবা
খন্দকের যুদ্ধে শীত, ক্ষুধা ও ভয়-ভীতি সহ্য করা – পর্ব ৩ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।