সাধারণ সাহাবা (রাঃ) দের ক্ষুধার কষ্ট সহ্য করা – ১ম পর্ব

নবী কারীম (সাঃ)-এর সাহাবী হযরত আবু জিহাদ (রাঃ) কে তাঁহার পুত্র বলিলেন, আব্বাজান, আপনারা রাসূল (সাঃ) কে দেখিয়াছেন এবং তাঁহার সঙ্গলাভ করিয়াছেন! আল্লাহর কসম, আমি যদি তাঁহাকে দেখিতাম তবে এই করিতাম, সে করিতাম (অর্থাৎ মনে প্রাণে তাঁহার খেদমত করিতাম।) পিতা হযরত আবু জিহাদ (রাঃ) বলিলেন, আল্লাহকে ভয় কর এবং সরল পথে চলিতে থাক।

সেই পাক যাতের কসম, যাঁহার হাতে আমার প্রাণ, আমরা খন্দকের যুদ্ধের রাত্রিতে তাঁহার সহিত ছিলাম। তিনি বলিতেছিলেন, কে আছে তাহাদের (অর্থাৎ শত্রুদের) নিকট যাইয়া খবর আনিয়া দিবে? আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তাহাকে আমার সঙ্গী করিবেন। কিন্তু প্রচণ্ড ক্ষুধা ও শীতের দরুন এই কাজে গমন করিতে কেহ রাজী হইল না। অবশেষে তৃতীয় বারে তিনি হে হোযাইফা, বলিয়া আওয়াজ দিলেন।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ) সাহাবা (রাঃ)দের চেহারার ক্ষুধার চিহ্ন দেখিয়া বলিলেন, সুসংবাদ হোক তোমাদের জন্য? অতিসত্বর তোমাদের এমন দিন আসিবে যখন তোমরা সকালে এক পেয়ালা সারীদ খাইতে পাইবে এবং বিকালেও অনুরূপ পাইবে। সাহাবা (রাঃ) ইয়া রাসূলুল্লাহ! তখন তো আমাদের অবস্থা ভাল হইবে। রাসূল (সাঃ) বলিলেন, বরং তোমরা সেই দিন অপেক্ষা আজ ভাল আছ।

মুহাম্মাদ ইবনে সীরীন (রহঃ) বলেন, নবী কারীম (সাঃ)-এর সাহাবা (রাঃ) দের উপর তিনদিন এমন কাটিয়া যাইত যে, তাহারা আহার করিবার মত কিছুই পাইতেন না। তাহারা চামড়ার টুকরা ভুনিয়া খাইতেন, যখন তাহাও না পাইতেন তখন পেটে পাথর বাঁধিয়া কোমর সোজা করিতেন। (তারগীব)

হযরত ফাযালাহ ইবনে ওবায়েদ (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ) যখন নামাজ পড়াইতেন তখন অনাহারের দরুন আসহাবে সুফফার অনেকে নামাজের মধ্যে (মাথা ঘুরিয়া) পড়িয়া যাইতেন। তাহাদিগকে দেখিয়া গ্রামের লোকেরা বলিত, ইহারা পাগল হইয়া গিয়াছে।

রাসূল (সাঃ) নামাজ শেষে তাহাদের দিকে ফিরিয়া বলিতেন, আল্লাহর নিকট তোমাদের জন্য যে পুরস্কার রহিয়াছে, যদি তোমরা তাহা জানিতে তবে অভাব ও দারিদ্রের কষ্ট আরো বেশী হউক ইহাই কামনা করিতে। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ)-এর সাহাবা (রাঃ) দের মধ্যে সাতজন একটি খেজুর চুষিতেন এবং অনেক সময় তাহারা গাছের ঝরিয়া পড়া পাতা চিবাইতেন। ইহাতে তাহাদের মাড়ি ফুলিয়া যাইত।

সূত্রঃ হায়াতুস সাহাবা

সাধারণ সাহাবা (রাঃ) দের ক্ষুধার কষ্ট সহ্য করা – ২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!