হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতি (রঃ) – পর্ব ৮ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আনা সাগরের তীরবর্তী মন্দিরঃ একথা সর্বজন বিদিত যে, রাজকীয় রাখালদের উৎপীড়নে সাধক কুলের শিরোমণি হযরত খাজা সাহেব ঐতিহাসিক আনা সাগর তীরবর্তী ঝর্ণার নিকট আস্তানা স্থাপন করেন, তিনি সেখান থেকে ইসলাম প্রচার করে চলেছেন। ইতিহাসবেত্তাদের মতে, ঐতিহাসিক আনা সাগরের দুই তীরে বহু সংখ্যক মন্দির বিদ্যমান ছিল। এখানে এসে তিনশত পূজারী পূজা করত। দেশের নামি দামি ব্যক্তিবর্গও রাজ পরিষদের লোকজন মাঝে মাঝে এসে এই সকল মন্দিরে পূজা করত। ইতিহাস বেত্তাদের মুখে একথাও শুনা যায় মন্দিরে প্রতিদিন তিন মন তেল খরচ হতো। বহুদিন ধরে পূজা সাধনের কাজ নির্বিঘ্নে চলে আসছিল। একদিন সন্ধ্যা আহ্নিকের সময় পূজারীরা মধুমাখা আজানের ধ্বনি শুনতে পেয়ে ম্লেচ্ছ ফকীরের স্পর্ধা দেখে অবাক হয়ে গেল। পূজারীগণ রাজ সিংহাসনে গিয়ে অভিযোগ করল। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় অভিযোগ শুনে রাজা ক্রোধান্ধ হয়ে সেই মুহুর্তে একদল সিপাহী প্রেরণ করলেন। সত্যি কথা বলতে হয় রাজার আদেশ পেয়ে সিপাহীদল রুহানী জগতের খাঁটি প্রজ্ঞাদাতা হযরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী (রঃ) সাহেবের উপর খেপে গেল। আক্রোশ করে খ্যান্ত হলেন না, বরং খাজা সাহেবের তাড়াইয়া দিতে উদ্যত হল। রাজকীয় সৈন্য বাহিনীরা সূফী কুলের শিরোমণি হযরত খাজা সাহেবের নিকটবর্তী হয়ে নানা প্রকার গালাগালি বর্ষন করতে লাগল। এদিকে সত্যের সৈনিক হযরত খাজা সাহেব আল্লাহ্র ধ্যানে মগ্ন ছিলেন। রাজকীয় সৈন্যবাহিনীরা যে তাকে বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ দিতেছে সেদিকে মোটেই তার খেয়াল ছিল না। যাই হোক খাজা সাহেব ধ্যান শেষে তাদেরকে নরমভাবে জিজ্ঞেস করলেন তোমরা কি চাও? সত্যি, তোমাদের আমি বলি তোমরা সামনে আর এক কদমও এসো না, তাহলে তোমাদের উপর আল্লাহ্র গজব বর্ষিত হবে। ইতিহাস পাঠে জানা যায়, রাজকীয় বাহিনী খাজা সাহেবের এই আদেশ অমান্য করে সামনে অগ্রসর হতে লাগল।
অগত্য খাজা সাহেব তাদের দিকে এক মুষ্টি ধুলি নিক্ষেপ করলেন। সত্যি, ধুলি নিক্ষেপ করা মাত্রই রাজকীয় বাহিনীর সৈন্যদল পাগল হয়ে চীৎকার করতে করতে পালায়ে বাঁচল। ইতিহাস বেত্তাদের কাছে একথা সুস্পষ্ট যে সৈন্য দলের কেউ অন্ধ, কেউ বধির, কেউ মাতাল হয়ে গেলেন অল্প সময়ের মধ্যেই রাজার নিকট এই অলৌকিক কাণ্ডের কথা পৌছাল। প্রিয় পাঠক-পাঠিকাগণ এখান থেকেই অনুধাবন করতে পারেন যে, সত্যের সেনানী সূফী সাধক হযরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী কত উচ্চ পর্যায়ের আল্লার ওলী ছিলেন।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া
হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতি (রঃ) – পর্ব ১০ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।