হযরত হাসান বসরী (রঃ) – ৮ম পড়তে এখানে ক্লিক করুন
একদিন এক ব্যক্তিকে কবরস্থ করে তিনি মাথায় দিকে বসে কান্না শুরু করলেন। চোখের পানিতে ভিজে গেল কবরের মাটি। উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে তাঁর কান্নার কারণ জানতে চাইলেন। তিনি বললেন, কবর হল পার্থিব জীবনের শেষ ও পরজীবনের প্রথম আবাস। এ দুনিয়া কত অসার, চোখের ওপর এটা দেখেও তোমরা কী করে হাসি-তামাশায় মত্ত হতে পার? উদাসীনতা পরিহার করে এখনও কেন তোমরা কবরবাসের উপকরণ সংগ্রহে লেগে পড়ছো না? তাঁর কথায় মর্ম উপলব্ধি করে এবার সবাই কান্নায় ভেঙে পড়ল।
শোনা যায়, ছেলেবেলায় তিনি একটি পাপকর্ম করেন। এটি যাতে ভুলে না যান, তার জন্য যখনই নতুন কাপড় পড়তেন, তখনই ঐ কাপড়ে তা লিখে রাখতেন। আর এই পাপটির পরিণামের কথা ভেবেই তিনি অবিরাম কান্নাকাটি করতেন। আল্লাহ্র প্রেমে, ভয়ে অস্তির-আকুল হৃদয়ের কান্না কতো মধুর! কতো পবিত্র!
এ পবিত্র হৃদয়ের উপদেশবাণী শোনার জন্য খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আযীয (রঃ)-এর মতো বিখ্যাত ব্যক্তিও লোভাতুর ছিলেন। খলীফার অনুরোধে হযরত হাসান (রঃ) তাঁকে উপদেশ দেন যদি স্বয়ং আল্লাহ্ আপনার সঙ্গে থাকেন, আর তার প্রতি যদি আপনার আস্থা অটুট থাকে, তাহলে অন্যের উপদেশে খুব একটা ফল হবে না। খলীফাকে এসব কথা তিনি চিঠি লিখে জানান। চিঠির শেষে লিখলেন, সে দিনটির কথা খুব বেশী মনে করুন, যেদিন সবকিছু ধ্বংস-প্রাপ্ত হবে।
একবার মহামান্য বিশর হাফী (রঃ) তাঁকে এক চিঠিতে লিখলেন, শুনলাম আপনি নাকি এ বছর হজ্জে যাচ্ছেন। তো আমিও আপনার সহযাত্রী হতে চাই।
পত্রোত্তরে হযরত হাসান (রঃ) জানালেন, দেখুন আল্লাহ্র পবিত্র প্রেমময় রাজ্যে একা একা বাস করাই ভালো। আমরা যেই একত্র হবো, অমনি পরস্পরের দোষ-ত্রুটি জেনে ফেলব। আর সেগুলি জেনে পরস্পরের প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করব। তাই অনুরোধ, হজ্জ যাত্রায় আমার সঙ্গী হওয়ার আশা ছেড়ে দিন।
হযরত হাসান বসরী (রঃ) – ১০ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।