আমরা সবাই জানি, এখন থেকে ১২৭ বৎসর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজ করার অধিকার কায়েম করতে যে আন্দোলন গড়ে তুলেছিল, তারই রক্তাক্ত পরিণতি ঘটে পুলিশের গুলিতে, ১লা মে ১৮৮৬সালে। রক্তাক্ত আত্মত্যাগের ভেতর দিয়েই তারা অর্জন করে দৈনিক ৮ ঘণ্টা শ্রমদানের অধিকার। এই আত্মত্যাগকে চিরস্মরণীয় ও মহিমান্বিত করার লক্ষ্যে ’বিশ্ব শ্রম দিবস’ পালনের রেওয়াজ চালু হয় ১৮৯০ সাল থেকে।
এটাও জানি, ১৮৫৪ সালের ১৫ অগাস্ট হাওড়া ও হুগলীর মধ্যে চলেছিল প্রথম ট্রেনটি। সকাল সাড়ে আটটায় হাওড়া স্টেশন ছেড়ে ৯১ মিনিটে হুগলী পৌঁছেছিল ট্রেনটি।
কিন্তু, এটা জানি কি , শ্রমিকের অধিকার অর্জনের লড়াই শুরু হয়েছিল এই পশ্চিম বঙ্গের হাওড়ায় ?
সেটা ১৮৫২ সাল ! পুরাদস্তুর কাজ চলছে রেল লাইন পাতার । কোম্পানি খাটিয়ে নিচ্ছে শ্রমিকদের অমানুষিক ভাবে । কোনো সময় নেই কাজ করার । বিশ্রাম নামেমাত্র । খাবার অপর্যাপ্ত ।
অসুস্থ হয়ে পড়লেন অনেক শ্রমিক । অবস্থা দেখে বিদ্রোহ করলেন এদের সুপারভাইজার গণেশ ভট্টাচার্য ।
অমানুষিক অত্যাচার নামিয়ে আনলো কোম্পানি । তবু অদম্য গণেশ ভট্টাচার্য । অবস্থা বেগতিক দেখে, গুলি চালিয়ে হত্যা করল ৫ জন শ্রমিককে, “ চার্লস” (পুরো নাম পাওয়া যায় নি) নামের এক ইংরেজ ।
তাদের রক্তমাখা মেরজাই তুলে ধরে গণেশ ভট্টাচার্য এক দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন । শেষে, অবস্থা বেগতিক দেখে, ইংরেজরা কিছুটা নমনীয় হয় ।
অধিকার আদায়ের প্রথম শহীদ এই পাঁচ জন । এদের নাম নেই ইতিহাসে । গণেশ ভট্টাচার্যের নামও নেই । সেই দিনটিও ছিল পয়লা মে, ১৮৫২ । চোদ্দ বছর পর শিকাগোর ঘটনা ইতিহাসে আছে, কিন্তু ইতিহাস সৃষ্টিকারী এরা এখনও অজ্ঞাত এবং অবহেলিত । আজকের দিনে, লাল সেলাম এই শহীদের প্রতিও ।
###########সূত্র :- ছোট্ট একটা চটি বই নাম :- অজানা শহীদ । প্রকাশকাল, যতদূর মনে পড়ছে ১৯৬২ সাল । বইটা আমার কাছেও নেই । পড়েছিলাম, ১৯৭২ সালে । বইটা তাড়াহুড়োতে ফেরত দিতে হয়েছিল ইতিহাসটা পড়েই । পরে, অনেক খুঁজেছি- কোত্থাও পাই নি । স্মৃতি থেকে লিখলাম, এই অজানা ঘটনা । তথ্য সব সঠিক, তবে তারিখটা পয়লা মে , এটা আমি নিশ্চিত ।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।