হযরত মুছা ও হারুন (আঃ) এর পরলোকগমন-১ম পর্ব
হযরত মুছা (আঃ) খেজের (আঃ) এর নিকট থেকে বিদায় গ্রহন করে তিয়া ময়দানে বনি ইসরাইল কওমের নিকট আসলেন। তখন তার জিজ্ঞাসা করলেন, হে নবী! আপনি খেজের (আঃ) থেকে কি লাভ করলেন? হযরত মুছা (আঃ) তার উত্তরে বললেন, যা লাভ করেছি তা তোমাদের শোনার বিষয় নয়। বিষয়টি নবীদের একান্ত খাস বিষয়। তোমরা আমার বিষয় চিন্তা না করে নিজেদের ভাবনা ভাব। হযরত মুছা (আঃ) ও হযরত হারুন (আঃ) তিয়া ময়দানে বনি ইসরাইল দের মায়ায় দুঃখ-কষ্ট স্বীকার করে ত্রিশ বছর কাটালেন। অথচ যদি তারা ইচ্ছা করতেন তিয়া ময়দান থেকে বের হয়ে ভাল কোন স্থানে গিয়ে আরামে ও সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারতেন।
কিন্তু তার মায়া ভরা হৃদয় তাকে নিজ কওমেকে ছেড়ে কোন দিন অন্যত্র যেতে সায় দেয় নি। তাই কওমের সাথে দুঃখ-কষ্টের ভাগি হয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন। একদিন আল্লাহ তায়ালা হযরত মুছা (আঃ) কে হারুন (আঃ) ইন্তাকালের খবর জানিয়ে দিলেন। এমন কি ইন্তাকালের তারিখ ও স্থান সম্পর্কে জানিয়ে দিলেন। হযরত মুছা (আঃ) এর খবর শুনে খুবই মর্মাহত হয়ে পড়লেন। যেহেতু হারুন (আঃ) এর শুধু ভাই নয়, তার সহকারি একজন নবী। আজীবন তিনি ভাইয়ের সাথে সাথে অশেষ নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন।
উপবাস অনাহার থেকে শুরু করে জীবনে অসংখ্য কষ্ট সহ্য করেছেন। দুই ভাই ছিলেন অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। শয়নে স্বপনে পাশা পাশি থেকে জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত কাটিয়ে দিয়েছেন। সে ভাইয়ের বিচ্ছেদে আজ হযরত মুছা (আঃ) এর অন্তর বিদীর্ণ অতি স্বাবাভিক। হযরত মুছা (আঃ) হারুনের ইন্তাকালের দিন ভোর বেলা অজু গোছল করে নির্দিষ্ট স্থানে এক বাগানে গিয়ে উপস্থিত হলেন। দেখানে তারা দুই খান সিংহাসন দেখতে পেলেন। দুই ভাই সিংহাসনে উপবেশ করে তৌরাত কিতাব পাঠ করছিলেন। এমন সময় একটি লোক হাতে ফুল নিয়ে হারুন (আঃ) এর নাকে ধরলেন। অমনি তার প্রাণ আয়ু উড়ে বের হয়ে গেল। হযরত মুছা (আঃ) তখন উঠে গিয়ে ভাই কে জড়িয়ে ধরলেন। কিছু সময় কান্নাকাটি করে হযরত মুছা (আঃ) তখন হারুন কে ছেড়ে দিলেন, অমনি সিংহাসন আসমানে উঠে গেল। হযরত মুছা (আঃ) সে দিকে তাকিয়ে রইলেন, একটু পরে সিংহাসনের চিহ্ন দেখা গেল না। হযরত মুছা (আঃ) তখন পাঠ করলেন “ইন্নালিল্লাহি অইন্না ইলাহি রাজিউন”।
সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী
হযরত মুছা ও হারুন (আঃ) এর পরলোকগমন-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন