
রাখী (ছদ্মনাম) মা-বাবার একমাত্র মেয়ে। বাবা দেশের বাইরে থাকায় এবং মা ডাক্তার হওয়ায়, তারা খুব একটা রাখীর দিকে খেয়াল রাখতে পারেনি। ফলে, সে খারাপ সঙ্গের মধ্যে পড়ে এবং নিজের পথে চলে যায়। ক্লাস ১০-এ তার প্রেমিকের সংখ্যা ৪ এ গিয়ে পৌঁছায়। জয় ছিল তার সর্বশেষ প্রেমিক, যে রাখীকে সত্যিই ভালোবাসত, বলা যায় পাগলের মতো। ৪ মাসের এই সম্পর্কের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক ছাড়া কিছুই বাদ থাকে না। এতে জয়ের প্রতি রাখীর ভালোবাসা আরও গভীর হয়ে ওঠে, কিন্তু রাখী এই সম্পর্কটিকে খুব গুরুত্ব দেয় না। একসময় তার খামখেয়ালির কারণে সে সম্পর্কটা ভেঙে দেয়।
জয় অনেক চেষ্টা করে, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করে। সে তার দুই হাতে রগ কেটে রক্তক্ষরণের মাধ্যমে মারা যায়। মৃত্যুর পর তিনদিন পর শ্মশানে তার দেহ পোড়ানো হয়। জয় কোনো সুইসাইড নোট রেখে যায়নি, ফলে তার পরিবার কিছুই বুঝতে পারে না। তার বন্ধুরা রাখীর ব্যাপারে কিছু জানায়নি।
জয়ের মৃত্যুর কয়েক মাস পর, যখন রাখী ও সবাই তার কথা ভুলতে বসেছে, তখন কালী পূজা আসে। পূজার দিন, রাখী তার মাকে নিয়ে শ্মশানঘাটের কালী পূজায় যায়। শ্মশানে ঢোকার পর থেকেই রাখীর মনে হতে থাকে যেন কেউ তাকে নজরবন্দি করে রেখেছে। প্রথমে বিষয়টি স্বাভাবিক মনে হলেও, কিছু সময় পর সে প্রচণ্ড আতঙ্কে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
পূজার মাঝেই এই অদ্ভুত ঘটনা ঘটায় সবাই ভীড় করে ফেলে। জল ছিটানো হলে রাখীর জ্ঞান ফিরে আসে, কিন্তু সে যেন এক ঘোরের মধ্যে রয়েছে। আচমকা, রাখী উঠে দাঁড়ায় এবং সবার অজান্তে কালী মূর্তির হাতে থাকা দা নিয়ে নেয়। সবাই ভয়ে সিঁটিয়ে যায়, কারণ সে যে অশরীরী আত্মার প্রভাবে কথা বলছে তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
রাখী দা হাতে নিয়ে জয়ের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা বলতে থাকে—যেভাবে তারা একে অপরকে চুমু খেতো, একে অপরকে স্পর্শ করতো, সব কিছু। তার পর সে দৌড়ে শ্মশানের মাঠে চলে যায়, যেখানে জয়কে পোড়ানো হয়েছিলো। সবাই তাকে অনুসরণ করলেও, কেউ তাকে আটকাতে পারেনি। শ্মশানে গিয়ে, রাখী নিজের দুটি হাতে দা দিয়ে কোপ দেয় এবং ঠিক যেমন জয় মারা গিয়েছিলো, তেমনই রক্তক্ষরণের মাধ্যমে তার মৃত্যু হয়। এইভাবে, জয় তার প্রতিশোধ নেয় এবং রাখী তার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে।