►শ্মাশানঘাট (শেষ অংশ)◄

ঘটনার শুরু এক রাতে, যখন আমরা সবাই একসাথে বসেছিলাম। সজল একটু সাহসী ছিল, তাই বাজি ধরে সে একা শ্মশানের দিকে রওনা দেয়। আমরা সবাই অপেক্ষা করছিলাম, কিন্তু আধ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও সজল ফিরল না। ধীরে ধীরে সবাই অস্থির হয়ে উঠলাম। মনে হচ্ছিল, যদি কিছু ঘটে যায়, তাহলে তার পরিবারকে কী বলব? ভয় আমাদের গ্রাস করছিল।

অবশেষে, আমরা ঠিক করলাম, সজলকে খুঁজতে যাব। বাপ্পি ভয় পেয়ে আমাদের সঙ্গে যেতে চাইল না। অগত্যা, আমরা তিনজন – আমি, ফিরোজ আর ছোটমামা – এগিয়ে গেলাম শ্মশানের দিকে।

হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ দেখলাম, এক ছায়ামূর্তি ধীর পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে। মনে হল, সে আমাদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, যদিও আমরা দ্রুত হাঁটছিলাম। মামা বললেন, “আমরা ভুল কিছুতে পা দিয়েছি!” আমাদের শরীর ঠান্ডা ঘামে ভিজে গেল।

মামার কথামতো আমরা ধীর পায়ে এগোতে থাকলাম। একসময় শ্মশানের গেটের কাছে পৌঁছাতেই দেখলাম, সামনে কিছু নেই। অথচ এতক্ষণ যা দেখছিলাম, তা কি মনের ভুল ছিল? আমরা সজলকে খুঁজতে থাকলাম, কিন্তু কোথাও সে নেই। হঠাৎ মামা এক কোণে একটি ছায়া দেখতে পেলেন।

আমরা ধীরে ধীরে তার দিকে এগোতে থাকলাম। হঠাৎ করেই সেই ছায়াটি উঠে দাঁড়াল এবং ভয়ঙ্কর কণ্ঠে বলে উঠল, “তুই কে রে?” আমাদের শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত নেমে গেল। ঠিক তখনই, দূর থেকে আরেকটি কণ্ঠ ভেসে এল, “থাম!”

ছায়ামূর্তিটি সঙ্গে সঙ্গে থেমে গেল এবং সেই নতুন ছায়ার দিকে ধেয়ে গেল। মুহূর্তের মধ্যে সেটি অদৃশ্য হয়ে গেল। আর ঠিক তখনই শ্মশানের গেট খুলে গেল। আমরা প্রাণপণে দৌড় দিলাম এবং এক দৌড়ে কর্টন মিলের গেটে এসে থামলাম।

সকালে দেখি, সজল আমাদের বাসায় এসেছে। সে আমাদের দেখে একটু লজ্জিত ভঙ্গিতে দু’শো টাকা বের করে দিয়ে বলল, “আমায় মাফ করে দে, আমি ভয়ে তোদের কাছে আসতে পারিনি।”

আমরা অবাক হয়ে গেলাম। তাহলে কাল রাতে শ্মশানে আমরা যাকে অনুসরণ করেছিলাম, সে কে ছিল? সজল যদি শ্মশানে না গিয়ে সরাসরি বাসায় চলে গিয়ে থাকে, তাহলে আমরা কাকে দেখলাম? প্রশ্নগুলোর উত্তর আজও অজানা রয়ে গেল…

►একটা পরীর সাথে◄

►ভূতুড়ে চুরি◄

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *