
ভৌতিক অভিজ্ঞতা: মংলার ফ্ল্যাটবাড়ি
আমার শৈশব ও কৈশর কেটেছে খুলনার মংলায়। আমরা তখন একটা সরকারি ফ্ল্যাটবাড়ির চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে থাকতাম। সেখানে ওঠার কিছুদিন পরই জানতে পারলাম, আমাদের পাশের ফ্ল্যাটের এক মেয়ে ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছে।
বিল্ডিংয়ের ছাদে অনেক উঁচু রেলিং ছিল, তারপরও কীভাবে সে পড়ে গেল, তা কেউ বুঝতে পারেনি। সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়নি, অনেকক্ষণ পর খুলনার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। মারা যাওয়ার আগে সে শুধু এটুকুই বলতে পেরেছিল—“আমার মনে হয়েছে, কেউ আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে!”
এরপর থেকেই ছাদে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়।
আমি কৌতূহলী হয়ে কয়েকবার লুকিয়ে ছাদে গিয়েছিলাম, যদি কিছু দেখতে পাই এই আশায়। কিন্তু কিছুই চোখে পড়েনি।
অলৌকিক অভিজ্ঞতা
একদিন রাতে আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। আমার খাট ছিল একদম জানালার পাশে। গরমকাল হওয়ায় জানালা খোলা রেখেই ঘুমিয়েছিলাম। আমাদের বাসার সামনের রাস্তায় স্ট্রিট ল্যাম্পের আলো জ্বলছিল, তাই বাইরের কিছুটা অংশও দেখা যেত।
হঠাৎ প্রচণ্ড গরম আর অস্বস্তিবোধ হওয়ায় আমার ঘুম ভেঙে গেল। জানালার দিকে তাকাতেই দেখি—নীল রঙের কামিজ পরা ১৩-১৪ বছরের একটি মেয়ে করুণ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে!
সাধারণত এমন দৃশ্য দেখে আমি নিশ্চয়ই ভয়ে জড়সড় হয়ে যেতাম। কিন্তু তখন ছিলাম আধো ঘুম, আধো জাগরণে। সেই করুণ চোখ দেখে ভয় না পেয়ে ঘুমজড়িত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলাম—
“কি চাই?”
এই কথা বলার সাথে সাথেই সে যেন বাতাসের মতো হাওয়ায় মিলিয়ে গেল!
এটা দেখে আমার হুঁশ ফিরল, আর তখনই ভয় পেয়ে গেলাম। সঙ্গে সঙ্গে আম্মাকে ডাকলাম এবং তাকে সব বললাম। আম্মা বিভিন্ন দোয়া পড়ে আমাকে ফুঁ দিয়ে দিলেন।
কিন্তু সেদিনই আমার প্রচণ্ড জ্বর এলো!
চমকে ওঠার আরেক ঘটনা
অনেক দিন পর, একদিন পাশের ফ্ল্যাটে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে একটি ছবি দেখে আমি চমকে উঠলাম!
নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল। কারণ ছবির মেয়েটিকেই আমি জানালায় দেখেছি!
সে-ই ছিল… যে ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিল!