আমার দাদার ছোট বেলা থেকেই মাছ ধরার মাছ ধরার দিকে খুব টান ছিল। তিনি খুব ভালবাসতেন মাছ ধরতে। আমাদের দেশের বাড়ি তখন অনেক চাকর ছিল। তাদের ২ জনকে নিয়ে একদিন রাতে তিনি মাছ ধরতে বের হলেন। তখন ছিল বর্ষাকাল। খুব বর্ষার কারনে নদীর পানি অনেক বেড়ে যায়। তো তারা খাওয়া দাওয়া করে রাত ৯ টায় বাড়ি থেকে বেড় হলেন। তখনকার দিনে রাত ৯ টা গ্রামে অনেক রাত। বের হয়ে তারা ৩০ মিনিট নৌকা বেয়ে একটা বড় মোহনায় এসে পৌছলেন। সেই মোহনা থেকে চার দিকে চারটি নদী গেছে। তারা যখন মোহনার মাঝামাঝি তখন হঠাত্ নদীর পানি খুব জোরে তাদের নৌকা দোলাতে লাগল। আকাশ ঘুটঘুটে অনধকার। তারা পূর্ব দিকে মাছ ধরতে যেতে চেয়েছিলেন কিনতু বাতাস যে তাদের উওর দিকে নিয়ে যাছিল তারা আঁধারে বুঝতে পারেন নি। এভাবে অনেক সময় চলে যাবার পর একসময় তারা বুঝতে পারেন যে তাদের নৌকা একটা পাড়ে এসে ঠেকেছে। তাদের কাছে আগুন বলতে ছিল একটি মাত্র দেয়াশলাই এর বাক্স। কিন্তু সেটিও ভিজে গেছে। কিছুতেই তারা আগুন ধরাতে পারলেন না। তাদের কাছে রেডিও ছিল কিন্তু সেটিও কাজ করছিল না। তারা বাড়ির দিকে ফিরে যাবার জন্য নৌকা বাইতে লাগলেন। এভাবে প্রায় ১ ঘনটা চেষ্টা করেও নৌকা একটুও এগোয়নি। ক্লান্ত হয়ে তারা বসে রইলেন সকাল হবার জন্য। একটু পরে আকাশ পরিষ্কার হতে লাগল। চাদের আলোয় তারা দেখলেন তারা একটা উঁচু পাড়ের ঠিক নিচে তারা একটা ছোট নদীর একপাশে আছেন। তারা কেউই জায়গাটা চিনতে পারলেন না। নদীর ওপারে ছিল অনেক বেত আর হোগলা গাছের সারি। নৌকা নিয়ে তারা নদীর ওপার গিয়ে ঢোকা মাত্রই তারা দেখতে পান অনেক মাছ পানির ভিতর ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু সেখান পানি ছিল পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত। যাই হোক তারা অনেক মাছ ধরলেন। এভাবে ধরতে ধরতে তারা তিন জনই তিন দিকে চলে গেলেন। একপর্যায়ে তারা একে অপরের ডাকাও শুনতে পারছিলনা। আমার দাদা মাছ ধরতে ধরতে কখন যে গলা পানিতে নেমে গিয়েছিলেন বুঝতে পারেন নি। হঠাত্ তিনি দেখলেন তার সামনে অনেক গুলো ছেলেমেয়ে কোথা থেকে যেন বেরিয়ে এল। তিনি তাদের ডাকতে যাবেন এমন সময় দেখলেন তার চোখে দেখা ছেলেমেয়েগুলোর কারো হাত নেই কারো চোখ নেই কারো মাথার খুলি অরধেক নেই। তিনি ভয়ে জায়গা থেকে নড়তে পারলেন না। একটু পরে দেখেন সেখানে এক বুড়ি এল। সাদা কাপড় পরা। সে এসেই একসাথে সবগুলো ছেলেমেয়েকে দুধ খাওয়াতে লাগলেন। আমার দাদা আরো ভয় পেলেন। কোনমতে একটা গাছের আড়ালে গিয়ে দাড়ালেন। এমন সময় দেখলেন সেই মহিলা তার মাথাটা ছিঁড়ে তার ডান হাতে নিয়ে দেখতে লাগলেন। চারপাশ মাথাটার ভিতরে দুটো চোখের মনি লাল হয়ে জলছিল। তার হাতটা লমবা হয়ে অনেক দুরে যাচছিল। এটা দেখে তিনি পাগলের মত চিত্কার দিয়ে দৌড়াতে লাগলেন। নৌকার কাছে এসে দেখেন নৌকাটি বালির ভিতরে ডুবে যাচিছল। তিনি বাকি দু জনকে ডাকলেন কিনতু কেউ আসলনা। নৌকাটাকে জোর করে নদীতে তুলে চালাতে লাগলেন। একটু পরে দেখেন তার সাথের বাকি ২ জন বালির ভিতরে ঢুকে আছে। তাদের তুলে তাড়াতাড়ি তিনি নৌক চালানোর চেষটা করেন। অবশেষে তারা সেই জায়গা পার হলেন। নদীর পার দিয়ে তারা বেয়ে যেতে লাগলেন। তাদের ধরা মাছগুলো নৌকার চালির ভিতরে লাফাচছিল। হঠাত্ একটি লোক তাদের ডাক দিলেন নদী পার হবার জন্য। তারা তাকে চিনতে পারনেন। তিনি ছিনেন আমার দাদার ফুফাতো ভাই। নদীর ওপারে ওঠে তিনি তাদের চোখের সামনে হাওয়ায় মিশে গেলেন। তারা এরপর অনেক কষটে বাড়ি ফিরলেন। বাড়ি আসার পর তারা দেখলেন তাদের ধরা মাছগুলো সব মানুষের হাড়। সেই নৌকাটি এই ঘটনার ২ দিন পরে নিজে থেকেই ভেংগে যায়। সেই তিনজন খুব আসুখে পড়েন। তাদের ভিতরে একজন মারা যান আর একজন পাগল হয়ে যান আমার দাদার সার গায়ে গুটি উঠেছিল চার মাস পরে তিনি সুসথ হন।