►আমরা তিনজন ও একটি রাত◄

মাস দেড়েক আগের কথা।। রাতে খেয়ে আমি সুমন আর মিলু যে যার মত পড়ছিলাম।। সারাদিন প্রচুর খাটুনি ছিলো।। ল্যাব আর ক্লাস।। ঘুম ঘুম ভাব সবার চোখে।। তারপরেও কেন যেন ঘুম আসছিল না।। তিন জন গল্প শুরু করলাম।। যদি ঘুম আসে এই ইচ্ছায়।। মিলু বোতল নিয়ে পানি আনতে গেল।। আমি আর সুমন প্লান করলাম মিলু ফিরে আসার সময় ওকে দরজার পাশ থেকে ভয় দেখাব।। তাড়াতাড়ি লুকিয়ে পড়লাম আমরা।। মিলূ দরজা খুলতেই আমরা হো হো করে হেসে উঠি।। কিন্তু মিলুর কোন ভাবান্তর হল না!!

আমরা হতাশ হয়ে বসে পড়লাম।। আমার কাছে বিস্কুট ছিলো।। তাই খেয়ে পানি খেলাম আমরা।। মিলু বলল,“আমার কাছে একটা নতুন ইংলিশ ম্যুভি আছে।। ভ্যাম্পায়ারের।। চল দেখি সবাই মিলে”।।

অনেকদিন ধরে রুমে একসাথে মুভি দেখা হয় না।। ওর কথায় আমি আর সুমন রাজি হয়ে গেলাম।। মিলুর খাটে গিয়ে বসলাম।।

বুধবার রাত।। একটা মুড়ি পার্টি হলে মন্দ হয় না।। পাশের রুমের ইমরানকে ডাকলাম।। ইমরান মুড়ি আনতে গেল।। আমরা সবাই গোল হয়ে বসলাম।। মুড়ি ঢালার জন্য মিলুর খাটে পেপার বিছানো হল।। মুড়ির গন্ধ পেয়ে এর মধ্যে আবার কোত্থেকে যেন মাসুদ এসে হাজির হয়েছে।। আজকের পার্টি জমবে ভালই।।

মুভি শুরু হয়ে গিয়েছে।। হরর মুভি দেখে আমাদের ভয় লাগার বদলে চরম হাসি পাচ্ছিল।। ভ্যাম্পায়ারদের কীর্তিকলাপ দেখে মজা পাচ্ছিলাম।। মুভির নাম ড্রাকুলা।। নায়ক হল ম্যাট্রিক্স মুভির নিও।। তিনটা নারী যে উদাম ভঙ্গিতে নায়কের রক্ত চোষার চেষ্টা করছে তাতে করে আমাদের ভয় লাগার বদলে যৌন সুরসুরিতে কেপে কেপে উঠছি।। মিলু তো ভাল মুভি চালিয়েছে দেখছি।।

মাসুদের আবার এইসব মুভিতে হাল্কা এলার্জি আছে।। ও ফোনে কথা বলার নাম করে বারান্দায় গেল।। মনে হয় ছাত্রীহল থেকে জরুরি কোন ফোন।। অবশ্য জিজ্ঞেস করলে বলবে যে তার ছোটবেলার বন্ধু কল দিয়েছিল।।

মুড়ি খাওয়া শেষ হবার সাথে সাথে যেন আমাদের মুভি দেখার আগ্রহ দমে গেল।। মিলু বলল,“চল বারান্দায় বসে চাঁদ দেখি”।। সুমন আর আমার তেমন কোন সাড়া না পেয়ে একাই গেল বারান্দায়।। আবার ডাকলো আমাদের।। বেচারা ডাকছে, না গেলে খারাপ দেখায়।। তাই আমি আর সুমন গেলাম তার আতলামিতে সামিল দিতে।।

না, আসলেই বেশ ভাল চাঁদ উঠেছে।। পুরো পরিস্কার আলো, বই পড়া যাবে মনে হয়।। প্রাচীন মণীষীদের কথা মনে পড়ে গেলো।। তারা তো আলোর অভাবে রাতের বেলায় চাঁদের আলোয় পড়তেন।। আচ্ছা আমি বুঝিনা, উনারা দিনের বেলায় কি করতেন?? ঘুমাতেন নাকি ঘোড়ার ঘাস কাটতেন!!

এমন সময় সুমনের ফোনে একটা কল এল।। বেশ বিরক্ত মনে হল সুমনকে।। এত রাতে কল এলে কার না বিরক্ত লাগার কথা!! তাও আবার ঘুম ধরছে না এমন রাতে।।

রিসিভ করতে করতেই কলটা কেটে গেল।। কেটে যাবার একটু পরেই মিলুর ফোনে কল।। সাথে সাথেই আমার ফোনে।। আমিও রিসিভ করতে পারলাম না, কেটে গেল তার আগেই।।আমরাতো তিনজনেই অবাক।। কে মজা করতেছে আমাদের সাথে?? সেট বের করে আমরা নাম্বারগুলো দেখলাম।। ভিন্ন ভিন্ন নাম্বার, তবে একটার সাথে আরেকটার মিল আছে।। কিন্তু আমাদের আর রাতের বেলা খুজতে ইচ্ছে করল না কী সেই মিল।। আমরা আবার গল্প করতে শুরু করলাম।।

কিছুক্ষন পরে আবার কল, সুমনের কাছে।। এইবার ও রিসিভ করল।। ওপাশ থেকে কি বলল আমরা জানিনা, তবে সুমনকে দেখে মনে হল কিছু সিরিয়াস হবে হয়ত।। ও শুধু “হ্যা হ্যা” করতে লাগল।। শেষে “আসছি” বলে কল কেটে দিল।। আমি আর মিলু কিছু বুঝলাম না,হাবার মত একে অপরের দিকে তাকালাম।। সুমন ফোন রেখে বলল, “ঢাকা মেডিকেল থেকে কল করছিল।। তাদের কাছে একটা মুমূর্ষু রোগী আসছে কিছুক্ষণ আগে, প্রচুর ব্লিডিং হয়েছে।। রক্ত দরকার।। এই মুহূর্তে কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না দেখে সুমন কে কল দিছে সেখানকার লোক।। যেতে বলছে এখনি।।

সুমন তারাতারি ড্রেস চেঞ্জ করে নিল।। আমাদেরকেও রেডি হতে বলল।। আমি আর মিলু ভাবলাম ওকে এত রাতে একলা ছাড়া ঠিক হবে না।। তাই আমরাও রেডী হয়ে নিলাম।। রুমে তালা দিয়ে বের হলাম হল থেকে।। রিকশা পাওয়া যাবে না এত রাতে, হেটেই রওনা দিলাম।। বুয়েট থেকে তো আর বেশি দূরে না, হেটে যেতে কয়েক মিনিট লাগবে মাত্র।। আর রাস্তা তো আমাদের চেনাই আছে।।

আমি কানে এফ.এম. রেডীও লাগালাম।। মিলু আর সুমন গল্প করতে করতে এগুতে থাকে।। আমি হালকা হালকা শুনতে পাচ্ছি মিলু আতলামি শুরু করছে।। চাদের বর্ণনা দিচ্ছে, জ্যোতস্নার গুণকীর্ত্তন করছে।।। আমি মনে মনে হাসতে থাকি।। যে ছেলেটা প্রোগ্রামিং করতে গিয়ে খাওয়া-গোসল ভুলে যায় তার মুখে মেঘে ঢাকা চাদের কথা শুনে একটু অবাকই হতে হয়।।

বুয়েট শহীদ মিনার পার হয়ে আমরা আহসানুল্লাহ হলের পাশ দিয়ে ঢাকা মেডিকেলের দিকে চলতে থাকি।। আমি খেয়াল করলাম, আসলেই সুন্দর চাদ উঠেছে।। ই.এম.ই. বিল্ডিং এর ঠিক উপরে,যেন ছাদে উঠলেই ছোয়া যাবে।। হা হা হা,আমিও দেখি মিলুর মত আতেল্ হয়ে গেলাম!

বকশী বাজার মোড়ে গেলাম খুব তাড়াতাড়ি।। আজবতো!! একদম ফাকা।। সবগুল দোকান বন্ধ।। অবশ্য এত রাতে খোলা থাকার কথাও না।। তবে পেনাং তো বন্ধ থাকার কথা না!!

আমি খেয়াল করলাম মেডিকেলের হলের দিকে।। সব লাইট বন্ধ মনে হচ্ছে।। সবচেয়ে ভয় পেলাম তখনই যখন দেখি রাস্তায় আজ কোন টহল পুলিশ নাই।। এরকম তো হবার কথা না!! একটা মানুষজন নাই, গাড়িও না।। আমার খুব ভয় পেতে লাগল।। তবে ভাব নিলাম যেন কিছুই হয় নি।। ওরা দুজন জানতে পারলে পরে জ্বালিয়ে মারবে।। তাই চুপচাপ ওদের সাথে হাটতে থাকলাম।।

আমরা মোড় ধরে যাচ্ছি।। মিলু জিজ্ঞেস করল,“বামে যাব নাকি ডানে যাব”?? আমি কিছু বললাম না।। সুমন বলল ,“ইমারজেন্সিতে যেতে বলেছে।।” তাই সোজা চানখারপোলের দিকে এগোতে থাকলাম।। রাস্তার দু পাশের দোকান গুলোর সাটারগুলোকে কেমন জানি জেলখানার রডের মত মনে হচ্ছে।। আমি সুমন আর মিলুর মুখের দিকে তাকালাম।। ওদের মুখও শুকনো লাগছে।। বুঝতে পারলাম, ওরাও ভয় পাচ্ছে।। কিন্তু স্বীকার করছে না, আমার মত ভাব নিচ্ছে।।

অবশেষে আমরা ইমারজেন্সি গেটের কাছে পৌছালাম।। আজই প্রথম দেখলাম এখানকার ফার্মেসী বন্ধ।। অথচ আমি দেখছি সারারাত এগুলো খোলা থাকে।। কাউকে যে জিজ্ঞেস করব ব্লাড সেন্টারটা কোনদিকে তারও চান্স নাই।। কেউ থাকলে তো জিজ্ঞেস করা যায়!!

আন্দাজে আমরা চলতে থাকি।। দেখি কে যেন ঘুপটি মেরে কলাপ্সিবল গেটের পাশে বসে আছে।। সারা গায়ে চাদর জড়ানো, মাথায় মাফলার পেচানো।। আমার তো হাসি পেয়ে যাচ্ছিল।। এই গরমের সময়ে এমন পোশাক দেখলে কার না হাসি পাবে!! তবে আমার হেসে ফেলার আগেই মিলু ফিসফিস করে ওঠে, ,“এই যে, শুনতে পাচ্ছেন”??

এক বার ডাক দিতেই লোকটা মাথা তুলে তাকালো।। মনে হয় জেগেই ছিলো।। আমি অন্ধকারেও খেয়াল করলাম তার চোখ দুটো জ্বলজ্বল করছে।। কেন জানি মনে হচ্ছে লাললাল একটা আভা।।

সুমন বলল ,“ব্লাড নেয় কোথায় বলতে পারেন??”

লোকটা এমন ভাবে তাকালো যেন আমরা তাকে প্রশ্ন করে মহা অপরাধ করে ফেলেছি।। এক্ষুণি আমাদের গর্দান নেয়া হবে।।

“এত দেরি হল কেন??” কর্কশ কণ্ঠে কে যেন কথা বলে ওঠে।। খেয়াল করে দেখলাম লোকটি বলছে।। মানুষের স্বর যে এমন বাজে আর বিশ্রি হতে পারে আমার জানা ছিল না।। “আমি কি সারারাত জেগে থাকব নাকি??”

আমি খুব অবাক হলাম।। বাপরে!! মনে হয় আমরা আমাদের নিজের প্রয়োজনে এসেছি!! তাকে সময় দিয়ে আমরা দেরি করে ফেলেছি।।

“আসেন আমার সাথে” বলেই গেট খুলে ভেতরে যেতে বলে আমাদের।। আমরা বুঝতে পারলাম আমাদের জন্যই বসে ছিল লোকটা।। আমরা তাকে ফলো করলাম।। ভেতরে ঢুকলাম।। আমাদের কে একটা ওয়ার্ডের দিকে নিয়ে গেল।। আমাদেরকে ভেতরে দিয়েই সে বাইরে চলে গেল।। যাবার সময় বলে গেল আমরা যেন কথা না বলি আর বাইরে না যাই।।

সুমন কিছু বলতে যাচ্ছিল।। মিলু ওকে আটকাল।।

লোকটা বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে দিল।। বুঝলাম না দরজা বন্ধ করার কী আছে??

আমি কান থেকে রেডিও এর হেডফোন খুলে ফেলি।। কেন যেন ভয়টা বেশি লাগছে।। এবার বলেই ফেললাম ওদের ভয়ের কথাটা।। ওরাও স্বীকার করল।।

আধা ঘন্টা ধরে বসে আছি কারও আসার নামগন্ধ নাই।। আমরা জড়সড় হয়ে বসে আছি চুপচাপ।। কার মুখে কোন কথা নাই।।

হঠাৎ ভেতরের দরজা খুলে গেল।। কিন্তু কাউকে দেখা গেল না।। সুমন গিয়ে উকি দিল।। কেউ নাই ভেতরে।। ফিরে আসার সময় একটা কন্ঠ ডেকে ওঠে,“সুমন, তুই প্রথমে আয়”!! “তুই তোকারি করে ডাকছে কেন?”আমি মিলুকে জিজ্ঞেস করলাম।।

আমার কথা শেষ না হতেই আবার ভেসে আসে সেই কন্ঠ।“কে কথা বলে রে?? যে বলছিস সে আসবি সুমনের পর।তারপর অন্যজন”।।

আমার রক্ত ঠান্ডা হয়ে যায়।। আমি আর মিলু কেন?? আমাদের তো রক্ত দেবার কথা না।। তাহলে??

আমার মাথা ঘুরে ওঠে।। মিলুর দিকে যে তাকাব সেই সাহস টাও পাচ্ছি না।। মনে হচ্ছে তাকিয়ে দেখব মিলু আমার দিকে লাল লাল চোখে তাকিয়ে আছে।। আমি আমার পায়ের দিকে তাকাই।। দেখি ফোটা ফোটা রক্ত।। ভাল করে খেয়াল করে দেখি পুরো মেঝে জুড়েই রক্ত।। কেউ যেন কিছুক্ষণ আগে মুছে দিয়ে গেছে।।

এরকম ভাবে তো রক্ত পড়ে থাকার কথা না।। আমি মিলুকে দেখাব ভাবলাম।। ওর দিকে তাকাতেই যে দরজা দিয়ে ঢুকেছিলাম তা খুলে গেল।। দেখি পাহারাদার লোকটা।। তবে চাদর আর মাফলার নাই।। খালি গায়ে এসেছে।। গায়ে একফোটা মাংস নাই।। হাড় জিড়জিড়ে।। দেখে আমার তো পড়ে যাবার মত অবস্থা।। কোনমতে মিলুকে আকড়ে ধরি।।

“তোদের মোবাইল ফোনগুলো দিয়ে দে।। তাড়াতাড়ি”!!আমি নিজের অজান্তেই আমার পকেট থেকে আমারটা বের করে মিলুর হাতে দেই।। মিলু আমাদের দুইটা ফোন তার হাতে তুলে দেয়।।

লোকটা হাসতে থাকে।। আমি তাকিয়ে দেখি লোকটার উপরের পাটির দুইটা দাত বড়বড়।। আমার রক্ত হিম হয়ে আসে।। আমার ধারনা মিলুও দেখেছে।। সিওর হলাম যখন দেখলাম মিলু আমার হাত শক্ত করে আকড়ে ধরেছে।।

আমার মনে হল আজ বোধ হয় আমি শেষ।। আজই মনে হয় আমাদের জীবনের শেষ রাত।। আমি আল্লাহ আল্লাহ করতে লাগলাম।। চোখ বন্ধ করে ফেললাম।। বারবার মনে হচ্ছিল এই বুঝি কেউ আমার গলায় কামড় বসালো।। চোখ বন্ধ করে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম আমাদের দুজনকে কিছু অশরীরী প্রাণী কামড়ে কামড়ে খাচ্ছে।। আমি চোখ খুলতে পারছি না।।

হঠাত সুমনের কথা মনে হল।। বেচারা মনে হয় এতক্ষণে শেষ।। আমার কান্না আসে।। ভাবলাম চীতকার করি।। দিতে গেলাম।। দেখি গলায় জোর নাই।। কেউ যেন আমার গলা চেপে ধরে রেখেছে।। আমি চোখ খুললাম।। দেখি সত্যি সত্যি আমার গলা চেপে ধরে আছে কিম্ভুত কিমাকার একটা প্রানী।। জীভটা ইয়া বড় হয়ে আছে।। একহাতে আমার গলা আর অন্য হাতে মিলুর গলা চেপে ধরে আছে।। আমাদের টেনে নিয়ে এগুতে থাকে ভেতরের ঘরের দিকে।। যেখানে সুমনকে নিয়ে গেছে।।

আমি বাধা দিতে থাকি।। মিলুও পিছু টান দেয়।। লোকটার গায়ে প্রচণ্ড শক্তি।। আমাদের দুজনকে টেনে হিচড়ে নিয়ে যেতে থাকে।। চামড়া ঢিলা মানুষের গায়ে এত শক্তি হতে পারে আমার জানা ছিল না।। অবশ্য ওটাতো মানুষ না,রক্ত খেকো মানুষ।।

আমি আমার শেষ সময়টুকু ভাবতে থাকি।। এমন সময় বীকট একটা চীতকার।। সুমনের কন্ঠ মনে হল।। তারমানে ও এখনো বেচে আছে।। চীতকারটা আরো কাছে আসতে থাকে।। মনে হচ্ছে সুমন দৌড়াচ্ছে আর চীতকার করছে।। খুব কাছে দরজার ওপাশে এসে গেছে মনে হচ্ছে।। হঠাত দরজা খুলে গেল।। সুমন দৌড়াচ্ছে।। সুমনের ধাক্কায় আমাদের যে লোকটা ধরে ছিল পড়ে যায়।। আমি আর মিলুও পড়ে যাই।।

“আমীন পালা,দৌড়া”।।

সুমন ডেকে ওঠে।। আমি আর মিলু কী বুঝলাম জানি না।। মনে নাই।। শুধু মনে আছে প্রচন্ড একটা দৌড় দিয়েছিলাম সেই রাতে।। পিছনে ফিরে তাকাইনি।। কলাপ্সিবল গেট খোলা ছিলো।। তারা ভাবতে পারেনি যে এমন হতে পারে!! তাই আর গেট লাগায়নি।।

এখনো ভাবি যদি গেটটা বন্ধ থাকত তবে কী হত!!

না আর ভাবতে চাই না সেই রাতের কথা, যেটা মনে হলে এখনো গায়ের লোম খাড়া হয়ে ওঠে।।

ইমারজেন্সি থেকে বের হয়ে দেখি আকাশে চাঁদ নাই, সবদিকে অন্ধকার।। দৌড়ানোর সময় মিলু পড়ে গিয়েছিলো হোচট খেয়ে।। আর আমার পায়ের যে আঙ্গুলটা উঠে গেছে ডাক্তার বলেছে আর ভাল হবে না।। তাতে কী!! বেঁচে যে আছি সেটাই বা কম কী!! বাস্তবে যে এমন হবে কল্পনাও করিনি কখনো।।

সুমনের গলায় দাঁত বসিয়ে ছিল।। রুমে ফিরে দেখি সারা শরীর রক্তে মাখামাখি।। এখনো সারেনি পুরোপুরি।। আর কিছুদিন লাগবে মনে হয়।। তবে দাগটা থেকে যাবে মনে হয় সারাজীবন!!

দুঃখিত!