হাঁস ও কতিপয় মৃত্যু

করিম ও কুদ্দুস। বাচ্চা হাঁসের মতো ছোটবেলা থেকে একসাথে সাঁতার কেটে কেটে বড়ো হচ্ছে। বড়ো হওয়ার আগেই করিম ‘সাহেব বাবু’ হওয়ার প্রক্রিয়ায় ঢুকে গেছে,মানে পড়ালেখার জগতে প্রবেশ করেছে। ফলত দুজনের ‘বড়োর’ ভেতরে করিমের ‘বড়ো’ হওয়াটা তুলনামূলক অধিকতর ‘বড়ো’র মর্যাদাসম্পন্ন। বোঝাই যাচ্ছে, কুদ্দুসের ওসব বালাই নেই।
আল্লাহ পাক যতটুকু ‘বড়ো’ হওয়া তার জন্য বরাদ্দ রেখেছেন ঠিক ততোটুকুই সে হচ্ছে/ হয়েছে, একচুল এদিক সেদিক নয়! চেষ্টার বালাই নেই! করিম সাহেব এখন একটা সরকারি কলেজে পড়ান। রসায়নের জনপ্রিয় শিক্ষক। বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার পথে একদিন আবিষ্কার করেন, তিনি কুদ্দুসের রিকসায়!
অনেকগুলো বছর কাটে। বাচ্চা হাঁস থেকে ডিমপাড়া হাঁসের সময় আসে, যায় রুগ্ন কিছু ‘হাঁস’ সময়!
সেদিন শুনি মাইকে ‘একটি শোক সংবাদ!’… করিম সাহেব ইন্তেকাল করিয়াছেন…..ইন্নালিল্লাহি ……’
মাদ্রাসায় গিয়ে জানাজায় উপস্থিত হলাম। দেখলাম দুটো লাশের জানাজা হচ্ছে। একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, অন্য লাশটা কার? তিনি সংক্ষেপে উত্তর দিলেন! করিম সাহেব কুদ্দুসের রিকসায় কলেজে যাওয়ার পথে বাস এক্সিডেন্টে দুজনই স্পট ডেড! দুজনের জন্যই ‘বুগলি’ কবর খোড়া হয়েছে! বেচারা কুদ্দুস, লবণের দ্রবণ সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান না নিয়েই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটা ‘বুগলি’ কবর বাগিয়ে নিল!

দুঃখিত!