হযরত হুসাইন মানসুর হাল্লাজ (রঃ) – শেষ পর্ব
হযরত হুসাইন মানসুর হাল্লাজ (রঃ) – পর্ব ১০ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
হযরত মূসা (আঃ) সম্পর্কে তাঁর অভিমত জানতে চাওয়া হলে হযরত মানসুর হাল্লাজ (রঃ) বলেন, তিনি ছিলেন সর্বাবস্থায় সত্য ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ফেরাউন সম্পর্কে তাঁর বক্তব্যঃ সে-ও খাঁটি ছিল। কেননা, আল্লাহ্ ‘খাস’ ও ‘আম’ (বিশেষ ও সাধারণ) দুই শ্রেণীর মানুষ সৃষ্টি করেছেন। উভয় শ্রেণীই নিজ নিজ পথে চলে। আর উভয় শ্রেণীর পথ-প্রদর্শক হলেন আল্লাহ্।
তাঁর তত্ত্বকথা সমূহ খুবই উচ্চাঙ্গের তিনি বলেনঃ
১. আল্লাহ্র স্মরণে লিপ্ত হয়ে যারা ইহলোক-পরলোক সবকিছু ভুলে যায়, তারাই আল্লাহ্র নৈকট্য লাভ করে।
২. সুফী ব্যক্তি বড় একা এই কারণে যে, আল্লাহ্ ছাড়া তিনি কোন কিছুর খবর রাখেন না। অন্যরাও তাঁর সম্বন্ধে কোন কিছু জানতে পারে না।
৩. ঈমানের আলোয় আল্লাহ্র অনুসন্ধান কর।
৪. হেকমত তীর সদৃশ্য। আল্লাহ্ তীরন্দাজ। আর তাঁর নিশানা সৃষ্টিজগত।
৫. মুমিন তিনিই যিনি ধন-সম্পদকে দূষণীয় মনে করে স্বপ্নের রাজ্যে সন্তোষ অবলম্বন করেন।
৬. সৃষ্টি বিপর্যয়ে ধৈর্যধারণ করা ও আল্লাহকে ভালোভাবে জেনে নেয়াই হল সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্র।
৭. আমলকে অসততা থেকে পবিত্র রাখাই হল আখলাক।
৮. সাধারণ মানুষের জ্ঞান, তত্ত্বজ্ঞানীয় অধ্যাত্ম-চিন্তা, বিদ্বানগণের জ্যোতি এবং পূর্ববর্তী মুক্তিপ্রাপ্তদের পথই হল প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একই আল্লাহ্র পথে সম্পৃক্ত ও জড়িত।
৯. বাদশাহ যেমন ভোগবিলাস, রাজ্য দখল প্রভৃতি কাজে ব্যস্ত, অনুরূপভাবে আমরাও সদা-সর্বদা বিপদ-আপদ আশায় ব্যস্ত থাকি।
১০. উপাসনার মঞ্জিল পার হবার পর মানুষ স্বাধীনতা লাভ করে।
১১. বেশী লম্বা হাত কী দোয়ার না এবাদতের? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কোন হাতই লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে পারে না। কেননা, প্রার্থনার হাত পৌঁছাতে পারে স্বীকৃতির সীমা পর্যন্ত। আর এবাদতের হাত পৌঁছায় শরীয়তের দামান পর্যন্ত। খাঁটি দাসগণের কাছে এর কোনটিই অপছন্দনীয় নয়।
১২. আল্লাহ্র হাকীকত যার জন্য খুলে যায়, সামান্য কাজের মাধ্যমেই তা হয়ে যায়। পক্ষান্তরে যার প্রতি তা উন্মুক্ত হবার হয়, বহু সৎ কাজের বিনিময়েও তা কখনই হয় না।
১৩. যতক্ষণ পর্যন্ত বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ করা না যাবে, আল্লাহ্র এনায়েত সে পর্যন্ত হাসিল করা সম্ভব হবে না।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া
হযরত হুসাইন মানসুর হাল্লাজ (রঃ) – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন