হযরত শোয়েব (আঃ) এর কাহিনী -১ম পর্ব

হযরত শোয়েব (আঃ) হযরত ছালেহ (আঃ) এর বংশোদ্ভুত নবী ছিলেন। অবশ্য তাঁকে হযরত ইব্রাহীম খলিলুল্লাহর (আঃ) এর বংশোদ্ভুত নবী বলেও বলা হয়ে থাকে। কেননা তিনি পারস্যের অন্তর্গত মাদইয়ান নগরীর নবী ছিলেন। মাদইয়ান নামকরণ হয়েছিল এভাবে যে, হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর এক পুত্রের নাম ছিল মাদইয়ান। আর সে মাদইয়ানের বংশোদ্ভুত নবী ছিলেন হযরত শোয়েব (আঃ)। এদিক বিচার করে হযরত শোয়েব (আঃ) কে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বংশোদ্ভুত নবী বলাই অধিক যুক্তিযুক্ত।

হযরত শোয়েব (আঃ) এর পিতা ছিলেন ফাহমিল। ফাহমিলের পিতা ছিলেন এছজার। এছজারের পিতা ছিলেন মাদইয়ান এবং মাদইয়ান ছিলেন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর পুত্র।

হযরত শোয়েব (আঃ) নবীদের মধ্যে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর কণ্ঠস্বর ছিল সুললিত। তিনি ভাষাজ্ঞানেও যথেষ্ট অভিজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন। নিজ দেশের ভাষা ব্যতীত অন্যান্য বহু দেশের ভাষায়ত্ত তাঁর ব্যুৎপত্তি ছিল। অত্যন্ত বিশুদ্ধ ভাষায় তিনি ওয়াজ করতেন। এজন্য আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত শোয়েব (আঃ) কে খতীবুল উম্মত বা নবীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বক্তা নামে আখ্যাদান করেছিলেন।

আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীন হযরত শোয়েব (আঃ) কে তাঁর নিজের কওমের মধ্যে ধর্ম প্রচার করতে পাঠায়েছিলেন। কারণ ঐ যামানায় তথাকার লোকগণ বিভিন্ন গুনায় লিপ্ত হয়েছিল। একটি মারাত্মক অন্যায় কাজ করত তাঁদের মধ্যে বিক্রেতাগণ ক্রেতাগণকে মাপে কম দিয়ে তাঁদের নিকট হতে পুরাপুরি মূল্য আদায় করত। তা ছাড়া মাদইয়ানবাসীগণ দেশে জালমুদ্রা তৈরী করত। ঐ সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে তখন চুরি, ডাকাতি ও লুণ্ঠনাদি ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছিল। আর ধর্মের দিক দিয়ে কওমের লোকগণ প্রায় সকলেই দেব-দেবীর মূর্তিপূজা করত। আল্লাহ্‌ পাককে তারা মানতো না। তারা আল্লাহ্‌ পাকের নাখুশী ও শাস্তির ভয়ও করত না। হযরত শোয়েব (আঃ) এ ধরণের অসৎ ও পাপচারী লোকদের মধ্যে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর ধর্ম প্রচার করতেন। তাদেরকে তিনি এরূপ নছিহত করতেন যে, তারা যেন মাল ক্রয়-বিক্রয় করার সময় কাউকে মাপে কম না দেয়। কেননা এটা আল্লাহ্‌ পাকের পক্ষ হতে কঠিন আযাব অবতীর্ণ হবার কারণ।

হযরত শোয়েব (আঃ) এর কাহিনী -২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।