হযরত শীস (আঃ) এর বংশ ও জন্ম
হযরত শীস (আঃ) হযরত আদম (আঃ) এর পুত্র। হাবিলের মৃত্যুর পাঁচ বছর পর আল্লাহ পাক হযরত আদম (আঃ)কে এক পুত্র সন্তান দান করেছিলেন। তিনিই হযরত শীস (আঃ)। তৌরাতের হিসাব মোতাবেক তখন হযরত আদম (আঃ) এর বয়স ১৩০ বছর। হযরত শীস (আঃ) অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী ছিলেন। তাঁর আখলাক চরিত্র হযরত আদম (আঃ) এর ন্যায় ছিল। তাই হযরত আদম (আঃ) সমস্ত সন্তানদের মধ্যে হযরত শীস (আঃ)কেই সর্বাধিক ভালোবাসতেন। এ জন্যই হযরত আদম (আঃ) মৃত্যুর পূর্বে হযরত শীস (আঃ) কে স্বীয় স্থলভিষিক্ত বলে ঘোষণা করেছিলেন। আর তাঁকে অসিয়ত করে যান যে, যখন নুহ (আঃ) এর যুগে মহা প্লাবন শুরু হবে তখন যদি তুমি জীবিত থাক তা হলে আমার হাড়গুলি নুহু নবীর নৌকায় তুলে দিও। আর যদি তুমি জীবিত না থাক তা হলে তোমার সন্তানদিগকে এ ব্যাপারে অসিয়ত করে যেও তারা যেন পরস্পরকে এ ব্যপারে অসিয়ত করে যায়।
হযরত শীস (আঃ) অধিকাংশ সময় হযরত আদম (আঃ) এর নিকট হতে বেহেস্তের বিভিন্ন বস্তুর বিভিন্ন অবস্থার বর্ণনা শুনতেন এবং আসমান হতে অবতীর্ণ গ্রন্থের ভাবার্থ জিঙ্গেস করতেন। অনেক সময় মানুষের সংস্পর্শ বর্জন করে নির্জন স্থানে গিয়ে যিকির ও এবাদতে মশগুল থাকতেন। স্বীয় সংশোধনের দিকে দৃষ্টি রাখতেন। হযরত শীস (আঃ) এর যুগে বনী আদম দু”ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। কতক লোক কাবিলের সন্তানাদির অনুসরণ করত। হযরত শীস (আঃ) কাবিলের সনুসারীদেরকে সৎ পথে আসার জন্য অনেক বুঝালেন। কিছু লোক তাঁর উপদেশ শুনে সঠিক পথে আসল আর কিছু লোক নাফরমানীতেই লিপ্ত রইল।
হযরত শীস (আঃ) ৯১২ বছর জীবিত ছিলেন। হযরত নুহু (আঃ) এর যুগে মহা প্লাবনে হযরত আদম (আঃ) এর সমস্ত বংশধর ধ্বংস হয়েছিল। একমাত্র হযরত শীস (আঃ) এর বংশধরই জীবিত ছিল। এজন্য পরবর্তী সমস্ত মানুষ তাঁরই বংশধর। সকলের বংশ পরস্পরা হযরত শীস (আঃ) এর মধ্যে মিলিত হয়। হযরত শীস (আঃ) পাথর দ্বারা কা’বা ঘরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। আল্লাহ পাক হযরত আদম (আঃ) কে পৃথিবীতে প্রেরণ করে বেহেস্ত হতে তাঁর জন্য তাবু প্রেরণ করেছিলেন। ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের পূর্বে হযরত আদম (আঃ) আল্লাহ পাক ফেরেস্তা দ্বারা এখানে সেই বেহেস্তের তাবু স্থাপন করেছিলেন। আল্লাহ পাক হযরত শীস (আঃ) এর প্রতি ৫০টি ছোট আসমাঈ কিতাব অবতীর্ণ করেন।
সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী। তৃতীয় খন্ড