হযরত শাহজালাল (রঃ ) – পর্ব ৩
হযরত শাহজালাল (রঃ ) – পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
মামার আশ্রয় দান ও শিক্ষা দীক্ষাঃ
একথা দিবা লোকের ন্যায় উজ্জ্বল, যে সকল মনীষী ধরার বুকে উচ্চ মর্যাদা লাভ করেছে হযরত শাহজালাল (রঃ) ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। অতি অল্প বয়সে পিতামহ হারালেমামা সৈয়দ কবির আহম্মদ তাঁর লালন-পালন করেন। কোন দিক থেকে কোন অভাব অনুভব করতে হয়নি। তার কারণ তাঁর মামা এই মনোভাব নিয়ে ভাগীনার প্রতিপালন করেছেন যেন কোন সময়ই পিতামাতার কথা তাঁর মনে না ওঠে। বা পিতামাতার অভাব অনুভব না করতে পারে অর্থাৎ সৈয়দ আহম্মদ কবির তাঁর আপন সন্তানদের চেয়ে বেশী স্নেহ করতেন। আবার শুধু স্নেহ ভালবাসা দিয়েই বড় করেননি বরং সাথে সাথে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলেছিলেন।
তাঁর মামা আহম্মদ কবিরও ছিলেন একজন ত্যাগী তাপস ও ধর্ম প্রাণ ব্যক্তি। এক দিকে যেমন ছিলেন বিদ্যোৎসাহী অন্য দিকে ছিলেন কামেল অলি। ফকির বা সুফীলোকদের রীতি-নীতি অনুযায়ী তিনিও অতি সাধারণ ভাবে জীবন যাপন করতেন। সকল খারাবিয়াত পরিহার করে একজন ত্যাগী পুরুষে পরিণত হয়েছিলেন। যারা আল্লাহর প্রেমের সুধা পান করেছেন তারা নির্জনতাকে পছন্দ করতেন এবং নির্জনে বসে দিন রাত মহা প্রভুর আরাধনা করে জগতের বুকে সিদ্ধ পুরুষ হয়েছিলেন। নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত যথা নিয়মে আদায় করতেন। সাথে সাথে ওয়াজ নছিহতের কাজও চালাতেন। অর্থাৎ ধর্ম বিরোধি মানুষের মাঝে ওয়াজ নসিহত করে তাদেরকে ধর্মের দিকে আকৃষ্ট করতেন।
শিশু শাহজালাল তাঁর শিশুকাল থেকেই কঠোর সাধনায় আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। আর অতি সযত্নের সাথেই নানাবিধ শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে লাগলেন। হযরত শাহজালাল বাল্যকাল থেকেই ছিলেন বিদ্যোৎসাহী তেমনি ছিলেন আবার ধী-শক্তিসম্পন্ন। সেহেতু অল্প সময়ে বিভিন্ন শিক্ষায় পারদর্শী হয়েছিলেন। সৈয়দ আহম্মদ কবির তাঁর ভাগীনাকে শুধু পার্থিব শিক্ষায় শিক্ষিত করলেন না বরং পার্থিব শিক্ষার সাথে সাথে আধ্যাত্মিক শিক্ষা, ইবাদত সংযম ও নৈতিক শিক্ষার ভেতর দিক, যথাঃ- শরীয়ত ও মারেফত শিক্ষা করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারেন সে শিক্ষাও তাঁকে তাঁর মামা দিয়েছিলেন। এজন্য তাঁর মামা তাকে প্রথমে আরবী ভাষা শিক্ষা দেন। এক সময় আদরের ভাগনাকে নিয়ে মক্কা শরীফও সফর করেছিলেন।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া