হযরত যায়িদ (রাঃ) -২২পর্ব

হযরত যায়িদ (রাঃ) -২১পর্ব -পড়তে এখানে ক্লিক করুন

মারওয়ান ইবনুল হাকাম, আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) অনুযায়ী, একজন উচ্চ মর্যাদার সাহাবীকে মারার জন্য ছড়ি উঠিয়েছিলেন, তবু তিনিও যায়িদকে (রাঃ) অত্যন্ত সম্মান করতেন। দরবারে গেলে মারওয়ান তাঁকে আসানের পাশে বসাতেন।

যায়িদ (রাঃ) অন্যান্য সাহাবী ও তাবেঈদের মাঝে মাঝে চিঠির মাধ্যমে উপদেশ দিতেন। প্রখ্যাত সাহাবী উবাই ইবন কা’বকে (রাঃ) তিনি এমন একটি উপদেশমূলক চিঠি লিখেছিলেন। এটি সীরাত ও হাদীসের বিভিন্ন গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে।

সত্য কথা বলতে যায়িদ (রাঃ) কাকেও পরোয়া করতেন না। তাবারানী বর্ণনা করেছেন, খলিফা উমার (রাঃ) একদিন গোপনে খবর পেলেন আবু মিহ্জান আস-সাকাফী নামক একজন ব্যক্তি তার এক বন্ধুর সাথে ঘরের মধ্যে মদ পান করছে। উমার (রাঃ) তৎক্ষণাৎ রওয়না দিলেন এবং সরাসরি তার ঘরে ঢুকে পড়লেন।
সেখানে আবু মিহ্জানকে বললেন, “এ কাজটি আপনি ঠিক করেননি, কারণ আল্লাহ ক্ষাপনাকে গুপ্তচাগিরি করতে নিষেধ করেছেন।”

উমার (রাঃ) সাথে সঙ্গীদের প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, “এ কি বলে?”
যায়িদ ইবন সাবিত ও আবদুর রহমান ইবন আল-আরকান (রাঃ) বললেন, “আমীরুল মুমিনীন, সে ঠিক বলেছে। এ এক ধরনের গুপ্তচরবৃত্তি।”
উমার (রাঃ) তাকে ছেড়ে দিয়ে বেরিয়ে আসেন।

যায়িদ (রাঃ) পরিবার পরিজন ও আত্মীয় স্বজনদের প্রতি খুবই সদয় ছিলেন। ঘুমানোর সময় দু’আ করতেন,
“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে পরিবার পরিজনের স্বাচ্ছন্দ্য ও প্রাচুর্য কামনা করি। আর যদি কোনো আত্মীয়ের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করি, তার বদ দুআ থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি।”

পরিবার পরিজনদের মধ্যে তিনি খুব রসিক ছিলেন, যেসকল মজলিসে থাকতেন সেখানে অত্যন্ত গম্ভীর।

তাঁকে নিয়ে তাঁর নিজ গোত্র খাযরজীদের গর্বের অন্ত ছিল না। মদীনার চির প্রতিদ্বন্দ্বী দুই গোত্র আউস ও খাযরাজ ইসলাম গ্রহণের পরও মাঝে মাঝে নানা বিষয় নিয়ে একে অপরের ওপর আভিজাত্য ও শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করত। এমনিভাবে একবার খাযরাজীরা বললো, “আমাদের মধ্যে এমন চার ব্যক্তি আছেন, যাঁদের সমকক্ষ কেউ তোমাদের মধ্যে নেই। তাঁরা রাসূলুল্লাহ (সা)-এর জীবদ্দশায় গোটা কুরআন সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁদের একজন হলো যায়িদ ইবন সাবিত।”

যায়িদ (রাঃ)-এর জীবন ও কর্ম ছোট কোনো প্রবন্ধে তুলে ধরা সম্ভব নয়। হাদীস ও সীরাতের গ্রন্থসমূহে তাঁর সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়।

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!