হযরত যাকারিয়া (আঃ) – পর্ব ১

সীরাতবিদদের মধ্যে হযরত যাকারিয়া (আঃ)-এর পিতার নাম সম্পর্কে মতপার্থক্য রয়েছে। এসব অভিমতের কথা হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী (রঃ) উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন কারো মতে তার পিতা নাম ছিল উদন। কারো কারো মতে লুদন। আবার কেউ কেউ তার পিতার নাম বরখায়া বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু বংশধরের ক্ষেত্রে সকল সীরাতবিদই একমত যে, তিনি হযরত দাউদ (আঃ)-এর বংশধর।

পূর্বেই উক্ত হয়েছে যে, নবী বাদশাহ হলেও বায়তুলমাল হতে তাঁরা তাদের এবং পরিবার পরিজনকে খরচ নির্বাহ করতেন না। স্বীয় জীবন নির্বাহের জন্য কারও উপর নির্ভর করতেন না। স্বীয় পরিশ্রম লব্ধ অর্থ দ্বারা নিজের এবং পরিবারে ব্যয় নির্বাহ করতেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে-

وَمَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ ۖ إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ الْعَالَمِينَ

অর্থঃ আমি দ্বীন প্রচারের জন্য তোমাদের কাছে কোন বিনিময়ে চাচ্ছি না। বিশ্ব প্রতিপালক ছাড়া অন্য কারও দায়িত্বে আমার বিনিময় নেই।

হযরত যাকারিয়া (আঃ) ও দ্বীন প্রচারের বিনিময় কোন অর্থ গ্রহণ করতেন না। মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে যে, হযরত যাকারিয়া (আঃ) স্বীয় জীবিকা নির্বাহের জন্য কাঠ মিস্ত্রির কাজ করতেন। সারাদিন কাঠ মিস্ত্রির কাজ করে যা আয় করতেন তা দিয়ে তিনি তাঁর পরিবারের ভরণপোষণের কার্য আঞ্জাম দিতেন। তার স্ত্রীর নাম ছিল ইশা। তিনি ছিলেন হযরত যাকারিয়া (আঃ) এর বংশে ইমরান ইবনে নাশী নামক এক ব্যক্তি। তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল হান্না বিনতে ফাকুদ! উভয়ে নেককার ও পবিত্র চরিত্রের অধিকারী ছিলেন।

এ হান্না বিনতে ফাকুদেরই সহোদরা ভগ্নি ছিলেন ইশা। হযরত যাকারিয়া (আঃ) নিঃসন্তান ছিলেন। অনুরূপভাবে ইমরান বিন নাশীরও কোন সন্তান ছিল না। হান্না বিনতে ফাকুদ সন্তানের জন্য আল্লাহর দরবারে আবেদন করলেন। তিনি মান্নত করলেন যে, তাঁর যদি সন্তান হয় তবে তিনি তাকে বায়তুল মাকদাসের খিদমতের জন্য ওয়াকফ করবেন। তার আশা ছিল যে, আল্লাহ পাক তাকে পুত্র সন্তান দিবেন। আল্লাহর ইচ্ছা ছিল ভিন্ন। তাই তাঁর

এক কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করল। তিনি তাঁর নাম মরিয়ম রাখলেন। হান্না বিনতে ফাকুদ মান্নত আদায়ের লক্ষ্যে কন্যা হওয়া সত্বেও মরিয়মকে বায়তুল মুকাদ্দাসের খিদমতের জন্য উৎসর্গ করলেন। মরিয়ম মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় তাঁর পিতা ইমরানের মৃত্যু হয়।

আরো পড়তে পারেন...

ভাঙ্গা খেলনার গল্প

রাতুল ছিল তার বাবা-মায়ের একমাত্র আদরের সন্তান। তার কোনো কিছুরই অভাব ছিল না। সে যা…

সীতাভোগ খাওয়ার জ্বর

গোপাল আর তার প্রাণের বন্ধু নেপাল নৌকায় করে একবার চাঁদপুর যাচ্ছিল। নৌকোয় ছয়জন মাঝি ছাড়া…

লোকসান দু’পয়সা

গোপাল একবার নদীর ঘাটে ঘাটের ইজারা নিয়েছিল। নদীর ফেরী ঘাটের ইজারাদার গোপাল ভাড়া ছয় পয়সা…