হযরত মূসা (আঃ) ও মিশরের দক্ষ যাদুকর – পর্ব ১

নিদির্ষ্ট দিনে নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ার পর হযরত মূসা (আঃ) স্বীয় গৃহে ফিরে গেলেন। এদিকে ফেরাউন তার সভাসদদের নির্দেশ দিল যেন রাজ্যের প্রতিটি এলাকায় ঘোষণা করে দেয় যে, যাদু বিদ্যায় পারদর্শী এমন প্রত্যেক ব্যক্তি যেন মেলার দিন শহরে আগমন করে।

এটা তাদের রব ফেরাউনের নির্দেশ। ঘোষণা পাওয়া মাত্র সাম্রাজ্যের চতুর্দিক হতে জাদুকরেরা জড় হতে লাগল। আজ মেলার দিন। হযরত মূসা (আঃ)-এর সাথে আজ মিশরের জনসাধারণের প্রতাপশালী সম্রাট ফেরাউনের প্রতিযোগিতা।

যাদু বিদ্যায় পারদর্শী মিশরের যাদুকরদের সাথে যাদুবিদ্যায় প্রতিদ্বন্দিতার জন্য হিম্মত দেখিয়েছে মূসা নামক এক ব্যক্তি। সে নাকি আবার নবুয়তেরও দাবীদার। বড়ই দুঃসাহসের কথা! এমন কি আমাদের প্রভু ফেরাউনের সাথেও নাকি পাল্লা দিতে চাচ্ছে। চল সেথায় যাই।

আজ আমাদের জাদুকরেরা তার বাহুবল পরীক্ষা করবে। এ কথাগুলো মিশর অধিবাসীদের মুখে মুখে। মেলার ময়দানে অভিমুখে জনতার ঢল নেমেছে। রাস্তায় রাস্তায় কেবল একই আলোচনা। হযরত মূসা (আঃ)-এর পরাজয় ও তাদের রব ফেরাউনের বিজয় স্বচক্ষে দেখার জন্য আজ তারা সকাল থেকেই মাঠে একত্রিত হচ্ছে।

মাঠের এক প্রান্তে একটি উচ্চস্থানে ফেরাউনের জন্য শাহী আসন স্থাপন করা হয়েছে। আর তার উভয় পার্শ্বে তার পরিষদ সদস্যদের মর্যাদা অনুসারে আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার ঠিক ডান পার্শ্বে তার আসনের কাছেই তার বন্ধু ও মন্ত্রী হামানের রাখা হয়েছে। বিভিন্ন রংয়ের নিশান ও কাগজের ফুল দ্বারা মাঠ সুসজ্জিত করা হয়েছে।

দেখেত দেখতে নির্ধারিত সময় এসে গেছে সূর্য প্রখর ও উজ্জ্বল আলো বিকিরণ সাজানো এ মাঠকে আরও শোভনীয় করে তুলেছে। মিশরবাসীর চোখে মুখে আজ আনন্দের ঢেউ খেলছে। কেননা, অল্পক্ষণ পরেই তাদের প্রভুর বিজয় ঘণ্টা বেজে উঠবে। এটা তো তাদেরও গৌরব। জাদুকরেরা সব মাঠে উপস্থিত। হযরত মূসা (আঃ) ও হযরত হারুন (আঃ) ও মাঠে উপস্থিত। অতিসাধারণ বেশভূষা কিন্তু নির্ভীক। তাদের চোখে মুখে বিজয়ের আভাস ফুটে উঠছে। কিন্তু মিশরীয়রা তা বুঝতে অক্ষম। অবশ্য এমন কিছু লোকও মেলায় ছিল যারা হযরত মূসা (আঃ) কে সত্য বলে জানত তারা হযরত মূসা (আঃ) -এর মুখ দেখে বুঝতে পারছিল যে, আজ ফেরাউন চরমভাবে পরাজিত হবে। কিন্তু তারা নির্বাক। অতি গোপনে নিজেদের বিশ্বাসকে সংরক্ষণ করছে। কেননা, ফেরাউনের লোকেরা তাদের অবস্থা বুঝতে পারলে বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে।

হযরত মূসা (আঃ)-এর বিজয়ের জন্য বনী ইসরাইলীরা মনে মনে আল্লাহর দরবারে দোয়া করছিল। সমস্ত ময়দান কানায় কানায় ভর্তি। এমন সময় দেখা গেল, হাজার হাজার সরকারী কর্মচারী, আমীর ওমরাহ, পরিষদ মণ্ডলী ও মিশররের সেনাবিভাগের প্রধান প্রধান অফিসার পরিবেষ্টিত অবস্থায় ফেরাউন শাহী পোশাকে সুসজ্জিত হয়ে দাম্ভিকভরে মাঠের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ময়দানের সমস্ত লোকের দৃষ্টি ফেরাউনের প্রতি। মাঠে উপস্থিত হয়ে ফেরাউন স্বীয় আসনে বসে পড়ল। অতঃপর তার সভাসদরা স্ব স্ব আসনে বসে পড়ল।

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।