হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জন্মের পূর্বে জমজম কূপের পুনঃখনন-শেষ পর্ব
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জন্মের পূর্বে জমজম কূপের পুনঃখনন-৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আবদুল্লাহ হযরত ইসমাইল (আঃ) এর ন্যায় পিতার ছুরির নিচে গলা পেটে দিলেন। আবদুল মুত্তালিব ও আল্লাহর এশকে পাগল হয়ে গেলেন এবং পুত্রকে কুরবানী দেয়ার প্রস্তুতি নিলেন। কিন্তু আবদুল্লাহর কোমল চেহারা সমগ্র আরববাসীকে পূর্ব হতেই মুগ্ধ করে রেখেছিল।
সকলের অন্তরে তাঁর স্নেহ ও মহাব্বতের অগ্নি প্রজ্বলিত করেছিল। সারাদেশে চিৎকার উঠল। চতুর্দিক হতে দলে দলে লোক এসে আবদুল মুত্তালিবকে বাঁধা দিতে লাগলো। বিশেষ করে আবদুল্লাহর মাতৃকুল বনী মাখজুম কিছুতেই ছুরি চালাতে দিলেন না। আবদুল মুত্তালিব এখন নিরুপায় হয়ে গেলেন। তাহাদিগকে প্রশ্ন করলেন, এখন আমার মান্নত আদায় করার কি ব্যবস্থা হবে? তারা বলল, আমাদের এলাকার একজন গণক মহিলা আছেন। তাঁর নিকট চলুন আবদুল মুত্তালিব সে মহিলার নিকট গিয়ে আদি অন্ত সমস্ত ঘটনা বললেন। তখন ঐ মহিলা তাকে জিজ্ঞেস করলেন আপনাদের মধ্যে যদি কেউ কোন ব্যক্তিকে হত্যা করে তাহলে তাঁর বিনিময় কি দিয়ে আদায় করে থাকেন। আবদুল মুত্তালিব বললেন, আমরা এক হত্যার বদলে দশটি উট দিয়ে থাকি। স্ত্রী লোকটি বললেন, তাহলে দশটি এবং আবদুল্লাহর মধ্যে লটারী দিবেন। যদি উটের নাম উঠে তাহলে দশটি উট কুরবানী করে দিবেন। আর যদি আবদুল্লাহর নাম ওঠে তাহলে আরও দশটি উট যোগ করে লটারি দিবেন। যে পর্যন্ত উটের নাম লাটারিতে না উঠবে সে পর্যন্ত দশটি করে উট যোগ করতে থাকবেন।
এ পরামর্শ অনুযায়ী তারা গৃহে ফেরার পর উট ও আবদুল্লাহর মধ্যে লটারি দিতে আরম্ভ করলেন। পরিশেষে যখন দশবার দশ দশটি উট যোগ করে মোট একশত উট ও আবদুল্লাহর মধ্যে লটারি দেয়া হল তখন উটের নাম উঠল। আবদুল মুত্তালিব একশত উট যবেহ করে মিসকিনদের মধ্যে বিলিয়ে দেন এবং পুত্র আবদুল্লাহকে নিয়ে আনন্দের সাথে গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন। সে হাতে একটি খুনের বদল একশত উট স্থির করা হল এবং ইসলাম ধর্ম আসার পরও এ প্রথা বলবৎ ছিল। এ কারণেই আবদুল্লাহকে জবিহুল্লাহ বলা হয় এবং মহানবী (সাঃ) নিজেই বলেছেন, আনা ইবনুজ জাবীহাইন অর্থাৎ আমি জবেহ হওয়া দু’ব্যক্তির পুত্র। একজন হযরত ইসমাইল (আঃ) এবং অপরজন আবদুল্লাহ।
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জন্মের পূর্বে জমজম কূপের পুনঃখনন-১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন