হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর চতুর্থবার বক্ষ বিদারণ

চতুর্থ বারের বক্ষ বিদারণ মে’রাজের রাতে মহানবী (সাঃ)-এর ৫২ বছর বয়সে মতান্তরে ৪৭ বছর বয়সে হয়েছিল। হযরত জিব্রাইল (আঃ) হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে উম্মে হানী (রাঃ) এর ঘর হতে তলে নিয়ে হাতীমে কা’বার মধ্যে শোয়ায়ে তাঁর বক্ষ বিদারণ বা শককে ছদর করেন। বেহেস্তে হতে একটি স্বর্ণের বর্তন হেকমত ও নূরে ঈমানের দ্বারা পরিপূর্ণ করে নিয়ে আসছিলেন। জমজমের পানি দ্বারা ছীনা মোবারক ধৌত করার পর সোনালী প্লেটে রক্ষিত হেকমত ও ঈমান কলবের মধ্যে ঢুকায়ে পেট সেলাই করে দেন। যেহেতু তিনি আলমে-বালার সফরে রওয়ানা হয়েছেন। সেখানে বহু অস্বাভাবিক বিষয় বস্তু দেখতে পাবেন। যথা আলমে মালাকুত, আলমে জাব্বারুত, আলমে লাহুত, রাফরাফ, জিব্রাইলের প্রকৃত রূপ ও গঠন, আল্লাহ পাকের নূর, আরশ, কুরছি ইত্যাদি। এ সময় রাজ্যের পরিভ্রমণের শক্তি, বিভিন্ন তাজাল্লীয়াতের ঝলসানো সুতির জ্যোতি সমূহের দর্শন শক্তি, আধ্যাত্মিক জগতের নিগুঢ় তত্ত্ব ও মহান নিদর্শন সমূহ উপলব্ধি করার ক্ষমতা এবং রাব্বুল আলামীনের খাছ নূর ও তাজাল্লী দর্শনের ক্ষমতা ও শক্তি সঞ্চার করাই ছিল মে’রাজ রজনীতে বক্ষ বিদারণের উদ্দেশ্য। তা ছিল তাঁর জন্য এক বিশেষ নেয়ামত এবং বৈশিষ্ট্য। কারণ অপারপর নবীগণের এক একজনকে আল্লাহ পাক এক এক বৈশিষ্ট্য। দান করেছেন। যথা- হযরত ইব্রাহীমকে খলীলুল্লাহ, হযরত মুসাকে কালিমুল্লাহ, হযরত দাউদ (আঃ)-কে সুমধুর কণ্ঠস্বর এবং লৌহ ও পাহাড়কে তাঁর জন্য নম্র ও বাধ্য করেছেন।

হযরত সোলায়মান (আঃ) সমগ্র বিশ্বের রাজত্ব দান ও বাতাসকে তাঁর বাধ্যগত করেছেন। কিন্তু ছরকারে দো-আলোম (সাঃ)-কে জিছবানী ও দৃশ্য জগতের নেয়ামতের তুলনায় অদৃশ্য ও রুহানী জগতের নেয়ামত অধিক পরিমাণে দান করেছেন। এবং তাই যখন পেয়ারা রাসূল (সাঃ) আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করলেন। হে আল্লাহ! আপনি এক এক নবীর জন্য এক এক বৈশিষ্ট্য দান করেছেন। কিন্তু আমার জন্য কি বৈশিষ্ট্য রেখেছেন? তখন উত্তরে আল্লাহ পাক সূরায়ে আলাম নাশরাহলাক অবতীর্ণ করেন। এ সূরাতে বিশেষ আধ্যাত্মিক নেয়ামতের বর্ণনা দিয়েছেন। ১. শরহে ছদর ২. তাঁর পৃষ্টদেশ ভগ্নকারী নবুয়তের দায়িত্ব পালনের গুরুভার অপসারণ। ৩. তাঁর প্রশংসা ও সুনাম অর্থাৎ তাঁর জিকিরকে বুলন্দ বা উচ্ছসিত করা।

নবী কারীম (সাঃ)-এর দরখাস্তের উত্তরে আল্লাহ পাক তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি তাঁর বক্ষ সম্প্রসারণ করেছেন। এটাই যাবতীয় কালামাতের ও বৈশিষ্ট্যের মুল খাজিনা। এ নেয়ামতের ফলে একদিকে যেমন তিনি পৃষ্ট ভঙ্গকারী গুরুভার নিষ্কৃতি লাভ করেছেন। অপর দিকে আল্লাহ পাক তাঁর হাবীবের শান ও তাঁর মর্যাদা এবং তাঁর জিকির এবং স্মরণ কে বুলন্দ করে দিয়েছেন। আজানে একামতে, তাশাহুদে, দোয়া মুনাজাত ইত্যাদিতে আল্লাহ্‌র নামের সাথে সাথে তাঁর হাবীবের নামও অবশ্যই থাকতে হয়।   

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর প্রথমবার বক্ষ বিদারণ ঘটনা পড়তে এখানে ক্লিক করুন

দুঃখিত!