হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আকাশে আরোহণ- পর্ব ৫
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আকাশে আরোহণ- পর্ব ৪ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সে ফেরেশতা রাসূল (সাঃ) কে নূরের রফরফে উঠিয়ে নূরের সাথে নূর মিলিত করে দেন। সত্তর হাজার নূরের পর্দা অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত পৌছেন। শেষ পর্দায় পৌঁছার পর একজন ফেরেশতা তাঁকে নামাজের একামত শিক্ষা দেয়। যখন ফেরেশতা, আল্লাহু আকবর বলল তখন পর্দার অন্তরাল হতে আওয়াজ আসল, আমার বান্দা সত্য বলেছে। আমি সর্বমহান, আমি সর্বমহান! ফেরেশতা বলল, আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ। পর্দার আড়াল হতে শব্দ হল। আমি ব্যতিত আর কোন মাবুদ নেই। ফেরেশতা যখন বলল, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ। নূরের পর্দা হতে আওয়াজ হল আমার বান্দা সত্য বলেছে। আমি মুহাম্মাদকে রাসূল করে প্রেরণ করেছি। অতঃপর ঐ ফেরেশতা, হাইয়া আলাচ্ছালাহ হতে শেষ পর্যন্ত একামতের কালেমাগুলো উচ্চারণ করল।
রাসূল (সাঃ) বলেছেন, তারপর সম্পূর্ণ আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেল। সম্পূর্ণ নির্জনতার মধ্যে আমার মনে ভয়ের সঞ্চার হল। হঠাৎ আবু বকরের কণ্ঠে এক ব্যক্তি আমাকে ডাক দিয়ে বলল, আপনি অপেক্ষা করুন। আপনার পরওয়ারদেগার সালাতে (নামাজে) মশগুল আছেন।
আবু বকর (রাঃ)-এর শব্দ শুনে আমি আশ্চর্যান্বিত হলাম। আবু বকর কি করে এখানে আসল এবং তাও আমার পূর্বে আর আল্লাহ পাক বে নেয়াজ, তিনি কিভাবে নামাজে মশগুল হতে পারেন। এমন সময় আল্লাহর জাতে বে হামতা হতে আওয়াজ আসল, হে শ্রেষ্ঠ মাখলুক! নিকটবর্তী হও আহমদ। নিকটবর্তী হও মুহাম্মাদ। বন্ধুর নিকটে বন্ধু আস। তখন দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ বর্ণের একটি রফরফ হাজির হল। তার বিভা সূর্য কিরণ হতেও উজ্জ্বল। রাসূলে পাক (সাঃ) বললেন, তার উজ্জ্বল কিরণে আমার চক্ষু ঝলসিয়ে গেল।
রাসূল (সাঃ) বললেন, অতঃপর রফরফে আরোহণ করিয়ে আমাকে আরশের দিকে উঠানো হল। আরশের নিকটবর্তী হলে আমার মুখে একটি বিন্দু পতিত হল। উহা এত মধুর যে সৃষ্ট জগতে তদপেক্ষা মধুর বস্তুর স্বাদ কেহই গ্রহণ করেনি। সেখানে এমন এক মহান নিদর্শন দেখতে পেলাম যা মানবের ভাষায় বর্ণনা করা যায় না।
আল্লাহ পাক আমাকে কিছু প্রশ্ন করলেন, কিন্তু আমি উত্তর দিতে অক্ষমতা প্রকাশ করলাম। তখন আল্লাহ পাক তাঁর কুদরতের হাত আমার দু’স্কন্ধের মধ্যবর্তী স্থানে রাখলেন। তাতে আমি অত্যন্ত শীতলতা অনুভব করলাম। ফলে আমার ছীনা খুব প্রশস্ত হয়ে গেল। আমি আউয়াল আখের সমস্ত কিছুর জ্ঞান লাভ করলাম। আমার অন্তর এতই প্রশস্ত হয়েছিল যে, আকাশ জমীনের সমস্ত কিছু আমার চোখের সামনে ভাসতে লাগল। কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে যাবতীয় বিষয়ের জ্ঞান আমার আয়ত্ব হয়ে গেল। আল্লাহ পাক আমাকে বললেন, এ সমস্ত জ্ঞানের মধ্য হতে এক শ্রেণীর জ্ঞান যেন গোপন রাখি। আর এক শ্রেণীর জ্ঞান ব্যক্ত করা না করা আমার ইচ্ছার উপর ছেড়ে দিলেন। আর এক শ্রেণীর জ্ঞান উম্মতের খাস ও আমার নিকট প্রচার করার আদেশ দিলেন। আল্লাহ পাক আমাকে কুরআন শিক্ষা দিলেন, হযরত জিব্রাইল (আঃ) তাই আমাকে পরে স্মরণ করিয়ে দিত।
অতঃপর রাসূল (সাঃ) আল্লাহর নিকট আরজ করলেন, হে পরওয়ারদেগার! আমি এখানে আবু বকরের মাকাম কি আমার চেয়েও উপরে এবং আপনি বেনিয়াজ আপনি কিসের নামাজ পড়ছেন। তখন আল্লাহ বললেন, আমি করো উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ি না। আমি বেনিয়াজ।
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আকাশে আরোহণ- পর্ব ৬ পড়তে এখানে ক্লিক করুন