হযরত মুসা (আঃ)এর জন্ম বংশ ও পরিচয়-২য় পর্ব
হযরত মুসা(আঃ) এর জন্ম বংশ ও পরিচয়-১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
জনসাধারণ তার এই ঘোষণাকে আন্তরিকভাবে স্বাগতম জানায়। সেই থেকে ফেরাউন মিশরে অধিপতি হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেন। ফেরাউন রাষ্ট্রপতির পদলাভ করার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধু হামানকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ করেন। দুই বন্ধু মিশর রাজ্যের হর্তাকর্তা হিসাবে সুপ্রতিষ্ঠিত হবার পরে একদা ফেরাউন বন্ধু কে বলল, হামান, আমার মনে চায় আমি খোদা দাবি করি। এ বিষয় তোমার মন্তব্য কি? হামান বলল, তোমার প্রস্তাব অত্যন্ত প্রসংশাযোগ্য বটে তবে সময় উপযোগী নয়। তুমি খোদায়ী দাবি করার পরে যদি তোমার বীরুদ্ধে যদি কোন আন্দোলন উঠে অথবা বিদ্রোহ দেখা দেয় তবে সেটা অত্যন্ত বিপজ্জনক ও ভয়াবহ।
তখন তোমার রাষ্ট্র প্রধাণ হিসাবে টিকে থাকার প্রশ্ন দেখা দিবে। সকল আরাম হারাম হয়ে যাবে। দিবারাত্র এক মহা দুশ্চিন্তায় নিমগ্ন থাকতে হবে। অতএব এজন্য অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করার কাজ প্রথমে সমাধা কর। পরে খোদাই দাবি খুবি সহজ ও নিরাপদ হবে। ফেরাউন জিজ্ঞাসা করল কিভাবে পরিবেশ সৃষ্টি করব? হামান বলল প্রথমে দেশের শিক্ষাদীক্ষা বিনাশ করতে হবে। তার পর শিক্ষিতদের কে অর্থ প্রদান এর মাধ্যমে হস্তগত করতে হবে। যারা অর্থ গ্রহন করতে আগ্রহী হবে না তাদের কে সরিয়ে দিতে হবে। এক কোথায় এমন একটি উর্বর ময়দান তৈরি করতে হবে যেখানে আকাশের খোদার অস্তিত্ব জানার লোক থাকবে না। তখন তুমি যা বলবে মানুষ এক বাক্যে তা কবুল করবে। অতএব প্রথমে দেশের শিক্ষার ব্যাবস্থার মূলোৎপাটনের কাজ করতে হবে। ফেরাউন হামানের পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে কার্যকারি করার লক্ষ্যে গ্রহন করল।
প্রথমে সে সারা দেশে ঘোষণা দিল যারা দেশে বেকার রেয়েছ তারা রাজ ভান্ডার থেকে নিয়মিত বেকার ভাতা পাবে। আর এ বেকার ভাতা পূরন করতে হলে শিক্ষাখাত থেকে কিছু বাজেট কমিয়ে তা পূরন করতে হবে। রাষ্ট প্রধানের এই ঘোষনায় দেশবাসী অনেক খুশি হল। রাষ্টের সকল নাগরিক তাকে ধন্যবাদ জানাল। পরবর্তী সময়ে সে শিক্ষকদের বেতন কমিয়ে দিল, শিক্ষা প্রতিষ্টানের উন্নয়ন মুলক কাজ কর্ম শীথিল করে খেলা ধুলার প্রতি মানুষ কে আর্কষ্ট করার জন্য খেলার সরঞ্জাম ফ্রি প্রদাণ, খেলোয়ারদের ভাতা প্রদাণ ও সম্নানী পুরস্কার দেওয়ার ব্যাবস্থা গ্রহণ করল। ফেরাউন নিজ অর্থ ধনদৌলৎ ও খোদাই দাবির নিরঙ্কুশ সমর্থক দেখে মহা আনন্দে দিনকাটাতে লাগল। আনন্দ ও ফুর্তির জন্য সে নীল নদের তীরে একটি প্রমোদ উদ্যান নির্মাণ করে। যেখানে অতি সুন্দর ইমারাত ও ফুলবাগানের পরিপূর্ণ ছিল। মাঝে মাঝে সে সেখানে আনন্দ করে সময় কাটাত। দেশে জুয়া, তাস ও লটারির পচুর ব্যাবস্থা হল। সাথে সাথে নাচ, গান ও প্রমোদ বালা সৃষ্টি করা হল। উলঙ্গপনা ও লজ্জহিনতার দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়া হল। মানুষের ভোগবিলাশের ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করা হয়। এতে শিক্ষার প্রতি মানুষের অনুরাগ কমে গেল। একাধারে বিশ বছর এ পরিকল্পনা কার্যকর করার ফলে দেশে নগ্ন ব্যক্তি ছাড়া কোন শিক্ষিত মানুষ দেখা যেত না। তারও অনেকে রাষ্টীয় ভাতা গ্রহন কারীর অন্তর্ভুক্ত হয়ে শিক্ষার আদর্শ ও চেতনা হারিয়ে ফেলে।
সূত্রঃ আল কোরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী
হযরত মুসা(আঃ) এর জন্ম বংশ ও পরিচয়-৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন