হযরত মুছা (আঃ) এর প্রতি জেনার তোহমত -১ম পর্ব
কারুন বনি ইসরাইল বংশের একজন লোক। সে সম্পর্কে হযরত মুছা (আঃ) এর চাচাত ভাই, সে হযরত মুছা (আঃ) এর জামানায় শ্রেষ্ঠ ধণী বলে পরিচিত ছিল। হযরত মুছা (আঃ) তাকে হেদায়াতের দাওয়াত দিলেন এবং এক হাজার টাকায় এক টাকা যাকাত দিতে হুকুম দিলেন। এ ছাড়া তাকে অন্যায় কার্যবলীর বিশেষ করে নারী সম্ভোগের মত জঘন্য কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার আদেশ দেন। হযরত মুছা (আঃ) এর এসব হুকুম সে অমান্য করে এবং তার জৌলুসি জীবন যাত্রার অন্ত্ররায় মনে করে সে হযরত মুছা (আঃ) এর বিরধীতা আরম্ভ করে।
কারুনের ধন-সম্পদ উৎস জানা যায় যে, একদা আল্লাহ তায়ালার তৌরাতের প্রস্তর ফলকগুলো কে স্বর্ণের পাত দ্বারা মুড়ে সুশোভীত করার জন্য হযরত মুছা (আঃ) কে আদেশ দেন। হযরত মুছা (আঃ) এ আদেশ পেয়ে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করে বললেন যে, হে খোদা আমি এত স্বর্ণ কোথায় পাব? তখন আল্লাহ তায়ালা হযরত জিবরাঈল (আঃ) কে পাঠীয়ে তামার উপর কিছু রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রন করে স্বর্ণ তৈরির কৌশল বলে দিলেন।
হযরত মুছা (আঃ) ইউসুফ ও কালুত নামক দুই বিশ্বস্ত লোকের সাথে এ বিষয় আলাপ করেন। কারুন এই সময় গোপনে তাদের কথা বার্তা শোনে। পরবর্তী সময়ে কারুন অনেক চেষ্টা করে স্বর্ন তৈরির ফরমূলা সংগ্রহ করে। এবং স্বর্ন তৈরির ফরমূলা সে আবিষ্কার করে ফেলে। তখন কে আর তার নাগাল পায়। সে দিবা রাত্র কাজ করে কয়েক বছরের মধ্যে বিশাক সম্পদের মালিক হন। যদিও সে প্রথম জীবনে ইসলামের অনুগত ছিল ধন-সম্পদ অধিকারি হওয়ার পর আল্লাহর অস্তিত্বকে অস্বীকার করে নাফার মানের অন্তভুক্ত হয়ে যায়। কারুনের বন্ধু-বান্ধব ও আত্নীয়-স্বজনেরা সর্বদা তার উদ্ধত্যপনার জন্য তাকে উপদেশ দিত। আল্লাহ তোমার অনেক ধনসম্পদ দিয়েছে তুমি গরিব দের দান কর। সাহায্য কর। জাতির কল্যানের জন্য খরচ কর। শুধু নিজের ব্যক্তি গত জৌলুস বৃদ্ধির চেষ্টা কর না। আল্লাহ তায়ালা জৌলুস কারিকে পছন্দ করেন না। তারা আরও বলেন, হে কারুন একদা তুমি খুবি দরিদ্র ছিল আজ আল্লাহ তোমাকে ধনসম্পদ দিয়েছে, তুমি এর সদ্ব্যবহার কর। যাকাত দাও। দরিদ্র অসহায় ব্যক্তি দের হাসায্য কর এবং নবীর উপদেশ অনুসারে চল। যে আল্লাহ তোমার ধনসম্পদ দিয়েছে তিনি আবার তোমার কাছ থেকে তা নিয়ে নিতে পারেন। অতএব আল্লাহ তায়ালাকে ভয় কর। উত্তরে কারুন বলত ধন সম্পদ আল্লাহ দেয় নি। এ গুলা আমি আমার চেষ্টা দ্বারা করেছি। অতত্রব এই ধনসম্পদ থেকে আল্লাহর কিছুই পাওয়ার অধিকার নেই। এই বলে সে বন্ধু-বন্ধব আত্নীয়-স্বজন দের বিদায় করত। কারুন গোপনে গোপনে হযরত মুছা (আঃ) এর বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র তৈরি করল।
দলের লোকদের তিনি বেশ টাকা পয়সা দিত। এতে দিন দিন তার দলের প্রসার লাভ করতে থাকে। সে একদা বনিইসরাইল দের দাওয়াত করে বিরাট ভোজ সভার আয়োজন করে। সেখানে অধিক অংশ নাস্তিকবাদীরা সমবেত হয়। বিরাট দুমধামের সাথে সকল কে আপ্যায়ন করে সে তার দলের আর্দশ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়। তার বর্ণনায় জাতির সেবা মুলক কাজের কথার উল্লেখ ছিল। যাতে মানুষেরা তার দলের প্রতি আকৃষ্ট হয়। সেখানে তার দলীয় মানুষ দের অনেক দান খয়রাত করত। তাদের দলের অন্তভুক্ত না হলে কেউ দান পেত না। এর পর থেকে বনি ইসরাইলদের মধ্যে সমান সমান দুই দলের সৃষ্টি হয়।
সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী
হযরত মুছা (আঃ) এর প্রতি জেনার তোহমত -২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন