হযরত নূহ (আঃ)- এর জাহাজ তৈরি -শেষ অংশ

হযরত নূহ আঃ এর জাহাজ তৈরী -পূর্বের অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

পনের দিন অতিবাহিত হওয়ার পরে জাহাজ যখন সম্পূর্ণ পরিস্কার হয়ে গেল তখন আল্লাহ তা’য়ালা হযরত নূহ (আঃ) কে আদেশ দিলেন যে তোমার খাটি উম্মতদেরকে এবং পৃথিবীর সমস্ত পশু-পাখি থেকে এক জোড়া করে জাহাজে উঠাও। হযরত নূহ (আঃ) আল্লাহর নির্দেশ শুনে খুবই বিব্রত বোধ করলেন। কারণ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রাণীর বাস। অতএব সারা পৃথিবী ঘুরে অল্প সময়ের মধ্যে কিভাবে এগুলো তিনি সংগ্রহ করবেন। বিষয়টি তাঁর কাছে অত্যন্ত কঠিন বলে মনে হতে লাগল। তখন জিব্রাইল (আঃ) নবীর কাছে উপস্থিত হয়ে বললেন, এ ব্যাপারে আপনি আদৌ চিন্তাযুক্ত হবেন না। আল্লাহ তা’য়ালা এবিষয়ে আপনাকে সাহায্য করবেন। একথা শুনে নবী আস্বস্ত হলেন। নবীকে আরো বলা হল, আপনি বিলম্ব না করে অতি সত্তর এ কাজ সমাধা করুন। কারণ কয়েক দিন পরেই এক মহা প্লাবন আসছে, তাতে পৃথিবী তলিয়ে যাবে।

নবী আল্লাহ তা’য়ালার নির্দেশক্রমে নানা জায়গায় সফর আরম্ভ করলেন এবং সকল জায়গা থেকে সম্ভাব্য সকল প্রাণী, বৃক্ষ সংগ্রহ করতে আরম্ভ করলেন। আত্মীয়-স্বজনদের মহাবিপদের পূর্বাভাস দিলেন এবং জাহাজে অবস্থান গ্রহণের জন্য বললেন। আত্মীয়-স্বজনরা তাঁর কথার প্রতি তেমন একটা ভ্রুক্ষেপ করল না। ইতোমধ্যে দেখা গেল বন জঙ্গল থেকে বিভিন্ন জাতের প্রাণীরা কোন খবর ব্যাতিরেকেই জাহাজের নিকট এসে ভীড় জমিয়েছে। হযরত নূহ (আঃ) জাহাজের নিকট এসে প্রাণীদেরকে তাদের নির্দিষ্ট স্থানে উঠিয়ে নিলেন।

জাহাজটি ছিল বহুতল বিশিষ্ট। উপরে কয়েক তলা ছিল মানুষের স্থান, পরবর্তী কয়েক তলা জীবজন্তু ও পশু-পাক্ষীর স্থান। তারপর কয়েক তলা ছিল উদ্ভিদ ও তরু-লতার স্থান। হযরত নূহ (আঃ) ও তাঁর উম্মতেরা অদম্য চেষ্টা করে সকল প্রাণীদের জাহাযে উঠানোর কাজ সমাপ্ত করলেন।

এর মধ্যে হযরত নূহ (আঃ) –এর আত্মীয়-স্বজনদের সংখ্যা ছিল খুবই কম। এমন কি হযরত নূহ (আঃ) এর ছেলে কেনান জাহাজে উঠতে রাজি হল না। হযরত নূহ (আঃ) বার বার তাকে বলেছেন, কিন্তু সে কোন কথা গ্রাহ্য করে নি। সর্বশেষে হযরত নূহ (আঃ) ক্রধান্বিত হয়ে ছেলেকে বললেন, “উঠ শয়তান, জাহাজে উঠ”। এ কথা বলার সাথে সাথে ইবলিশ সকলের অলক্ষ্যে লাফ দিয়ে জাহাজে উঠে বসল। কিন্তু কেনান আর উঠল না। তখন তিনি নিরুপায় হয়ে আল্লাহর দরবারে আরজ করে বললেন, হে খোদা! তুমি এক সময় আমাকে বলেছিলে যে, আমার পরিবারবর্গকে ধংসের কবল থেকে রক্ষা করবএ। সে মর্মে আমার সন্তান কেনান কে রক্ষা কর। আল্লাহ তা’য়ালা তার উত্তরে বললেন – তুমি আল্লাহর নবী আর কেনান কাফের। অতএব সে তোমার পরিবারবর্গের লোক হবার যোগ্য নয়। তার কথা ছেড়ে দাও।

হযরত নূহ (আঃ) এর জাহাজ তৈরীর ঘটনা-প্রথম অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।