হযরত দাউদ (আঃ)-এর জ্যৈষ্ঠ পুত্র সলুমের হত্যার ঘটনা-১ম পর্ব
হযরত দাউদ (আঃ) যখন আউরিয়ার ঘটনার বিহ্বল হয়ে আল্লাহ্ পাকের দরবারে কান্নাকাটি করতেছিলেন, তখন তাঁর সাম্রাজ্য, দেশ শাসন ও বিচার আচার সব কিছুই পড়ে রয়েছিল। কোন কিছুরই প্রতি তাঁর কোন খেয়াল ছিল না। বাদশাহ বর্তমান থাকতেও যেন শাসক শূন্য দেশের ন্যায় হয়ে পড়ল। এমতাবস্থায় দেশের জ্ঞানীজন হযরত দাউদ (আঃ)-এর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার অপেক্ষা করতেছিলেন। কিন্তু জাহেল ও স্থূলদর্শী লোকগণ হযরত দাউদ (আঃ)-এর জন্য বৃথা অপেক্ষা না করে হযরত দাউদ (আঃ)-এর জ্যৈষ্ঠ পুত্র অর্থাৎ তালুতের নাতী সমুলকে দেশের বাদশাহ ঘোষণা করল।
ইতিমধ্যে হযরত দাউদ (আঃ) আল্লাহ্ পাকের রহমতে তাঁর সমূহ বিপদ হতে মুক্ত এবং আল্লাহ্ পাকের মার্জনা লাভ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসলেন। তখন তাঁর প্রজা শাসন, প্রজাপালন এবং লোক হেদায়েত প্রভৃতি দায়িত্বের কথা সকলই মনে হল। ইতিমধ্যে তাঁর জ্যৈষ্ঠ পুত্রের রাজ সিংহাসনে প্রাপ্তির কথা তাঁর কর্ণগোচর হল। পক্ষান্তরে তাঁর পুত্র সমুলও জানতে পারলেন যে, তাঁর পিতা হযরত দাউদ (আঃ) সর্বরকম বিপদাপদ মুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। কিন্তু এমন সময় তাঁর বন্ধু বান্ধব অনেকে কু-পরামর্শ দিল যে, দেশের জনসাধারণের মাধ্যমে যখন তুমি শাহী আসনে উপবিষ্ট হয়েছ, তখন আর তোমার সুবর্ণ সুযোগ ও স্বার্থ স্বেচ্ছায় পরিত্যাগ করা উচিত নয়। কেননা যেভাবেই হোক বাদশাহ হয়ে গিয়েছ। এখন তোমার বাদশাহী পদ কারো কেড়ে নেবার ক্ষমতা নেই। কিন্তু এ সুযোগ হেলায় হারালে পিতার মৃত্যুর পর পুনরায় তা লাভ হবে কি না তা অনিশ্চিত।
অবশ্য কিছু কিছু সৎ এবং খাঁটি লোক সলুমকে সৎ পরামর্শ দিলেন যে, যেহেতু পিতা পুরাপুরিভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন, তাছাড়া তাঁর মধ্যে বার্ধক্যজনিত কোন দুর্বলতা দেখা দেয়নি সুতরাং আপনার একান্ত উচিত তাঁর রাজ্যাসন করে দেয়া।
সলুম এ পরামর্শ পছন্দ করলেন না। তিনি পিতাকে রাজ সিংহাসন প্রত্যার্পনের প্রস্তাব প্রত্যাখান করল। এ খবর পিতার নিকট পৌঁছাল। কিন্তু স্নেহ বৎসল পিতা পুত্রের সাথে সিংহাসন নিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করা পছন্দ করলেন না। তিনি শান্তিপূর্ণ উপায়ে কার্যোদ্ধারের চেষ্টা করলেন। ভ্রাতৃস্পুত্র ইউয়ার এবং জনৈক উজিরসহ তিনি পুত্রের দরবারের দিকে রওয়ানা হলেন। দরবারের নিকটবর্তী হলে পুত্র পিতাকে বন্দী করার জন্য রক্ষীদেরকে নির্দেশ দিলেন। কিন্তু তারা নবীকে বন্দী করতে পারবে না সলুমের সামনেই বলে দিল।
হযরত দাউদ (আঃ)-এর জ্যৈষ্ঠ পুত্র সলুমের হত্যার ঘটনা-শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন