হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুদ্ধ যাত্রা – পর্ব ২

হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুদ্ধ যাত্রা – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

পরী আমাকে বলল, তুমি এখানের কোন খবর রাখ না, তবে তুমি কি বিদেশী? আমি বললাম, হা আমি এক দৈত্য।  আমার দেশ হযরত ছোলায়মান (আঃ) বাদশার অন্তর্গত।  হযরত ছোলায়মান (আঃ) সম্বন্ধে সে পরী কিছুই জানে না।  তাই সে জিজ্ঞাসা করল আমাদের রাজ্য ছাড়া পৃথিবীতে আরো রাজ্য আছে?  

শামুনধন বলল, তোমাদের রাজ্য তো হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর রাজ্যের তুলনায় অতি ক্ষুদ্র।  এ ধরনের কয়েক হাজার রাজ্যের বাদশা হলেন হযরত ছোলায়মান (আঃ) । যদি কোন দিন সুযোগ হয় তবে তোমাকে নিয়ে আমি রাজ্য দেখাব। এখন তোমার রাজমহলের কিছু তথ্য বল, এখানের বাদশা কে, মিনারের উপর বাঘের মূত্যি নড়াচড়া করছে কেন এবং মানব মূর্তিগুলো কিসের জন্য তৈরি করা হয়েছে? তখন পরি বলতে আরম্ভ করল।      

তুমি যে শহরে পৌঁছেছ। এ শহরের নাম ছাইদুন। এটা জীন রাজ্য। যে মহিলাকে তুমি উপবিষ্ট দেখছ তিনি হলেন আমাদের বাদশার বেগম।  বাদশার অনুপস্থিতিতে তিনি রাজ্য সিংহাসনে বসেন এবং রাজ্য পরিচালনা করেন।  যে যুবতীকে তাঁর পাশে দেখলেন তিনি হলেন বাদশার শাহাজাদি।  প্রধান ফটকে যে সমস্ত ছোট ছোট মূর্তি দেখছ তাঁরা হল সতর্ককারী মূর্তি। যদি কোন দুশমন আমাদের রাজ্য আক্রমণ করার  জন্য এগিয়ে আসে, তাহলে মূর্তিগুলো বিভিন্ন রকমের আওয়াজ করে সংকেত প্রদান করে। 

আবার রাজ্যের মধ্যে কেউ যদি খুন খারাপি অথবা অত্যাচার অনাচার করে তাহলে মূর্তি গুলো নতুন ধরনের আওয়াজ করে তা জানিয়ে দেয়। তখন নিরাপত্তা বাহিনী সে অপরাধ দমনে এগিয়ে আসে।  এভাবে বিভিন্ন সমস্যার আগমন খবর পরিবেশনের জন্য মূর্তিগুলোকে স্থাপন করা হয়েছে।  প্রধান ফটকের মিনারের উপর যে দুটি বাঘের মূর্তি স্থাপন করে হয়েছে তাঁর হল বিচারক।  বাদশাহের নিকট যে সমস্ত জটিল বিচার আসে তা তিনি বাঘের নিকট পৌঁছে দেন।  বাঘ অপরাধী ও মিথ্যাবাদীকে ছিড়ে খেয়ে ফেলে এবং নিরাপত্তা ও সত্যবাদিকে মুক্তি দেয়।

 সম্মুখে যে একটু বড় মানব মূর্তি রয়েছে সে আমাদের এবাদাতের সময় সংকেত প্রদান করে আযান দেয়।  আমরা তাঁর আযান শুনে বাদশাকে পূজা করার জন্য তাঁর নিকট গমন করি।  আমাদের রাজ্যের এ সমস্ত ব্যবস্থাদি থাকার কারনে এখানে তেমন কোন অপরাধ সংঘটিত হয় না।  বাদশার কোন দায়িত্ব নিয়ে মাথা ঘামতে হয়না।  এজন্য তিনি বেগমের উপর রাজ কার্য ফেলে রেখে নিজে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান।  বাদশার নিকট সারা বছর কোন মামলা আসে না।   প্রজাবৃন্দ  যথেষ্ট আরামে দিন কাটায়।  সম্প্রীতি ও বন্ধুত্ব আমাদের দেশের প্রধান বৈশিষ্ট্য।  শামুনধন এ পর্যন্ত বলে শাহেন শাহার নিকট আরজ করল।  হুজুর! এ ঘটনাই আমার নিকট আশ্চার্যনক বলে মনে হয়েছে। কারণ আপনার অজ্ঞাত এ ধরনের রাজ্যের অস্তিত্ব এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে বহাল থাকা খুবই আশ্চার্যজনক ব্যাপার।   

হযরত ছোলায়মান (আঃ) শামুনধনের কথা শুনে বললেন, তুমি আমাকে এ ঘটনা শুনিয়ে জেহাদের দায়িত্ব চাপিয়ে দিলে। মানুষ পূজা ও জীণ পূজার খবর জানার পর নবী হিসাবে আর মুহূর্তকাল বসে থাকা সম্ভব নয়। এ মন্তব্যের পরে নিজ লস্করদের মধ্যে থেকে একদল দৈত্য, একদল পরী একদল মানুষ  সৈন্যকে যুদ্ধে যাত্রার প্রস্তুতি নিতে আদশ দিলেন। এ ছাড়া কয়েক  হাজার সেবক সেবিকা তাঁর সাথে যাত্রা করার আদেশ দিলেন।

হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুদ্ধ যাত্রা – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন    

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।