হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর দাওয়াত-১ম পর্ব

জনৈক বিশিষ্ট ছাহাবী থেকে বর্ণিত আছে, হযরত ছোলায়মান (আঃ) সমগ্র পৃথিবীর রাজত্ব ও নবুয়তী লাভ করেছিলেন।  সে সাথে তিনি লাভ করেছিলেন ধনসম্পদ, সুখ –স্বাচ্ছান্দ ও খাদকের প্রাচুর্য। তাই এক দিন তিনি মনের আনন্দে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করে বলেন, হে মহান প্রভু! আমি তোমার সৃষ্টি জীবকে একবেলা খাওয়াতে চাই। এ বিষয় তোমার আদেশ পেলে আমি আয়োজন শুরু করব। 

আল্লাহ তায়ালা হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর ফরিয়াদের কথা শুনে তাকে জানলানে, তুমি এ বিশাল আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সমাধা করতে পারেব না।  কারণ আমার সৃষ্টি জিবের সংখ্যা অনেক।  তাদেরকে আমি বিভিন্ন ব্যবস্থার মাধ্যমে খাবার দিয়ে থাকি।  কিন্তু তুমি তা দিতে পারবে না।  সকল প্রাণির খাদ্য যোগাড় করা তোমার পক্ষে সম্ভব  নয়।  হযরত ছোলায়মান (আঃ) এ কথায় আস্বস্ত হতে পারলেন না।  তাই তিনি আল্লাহর দরবারের আবদারের স্বরে বললেন, হে প্রভু! তোমার যদি সম্মতি থাকে তবে আমি নিশ্চয় পারব।  অতএব তুমি দয়া করে আমাকে সম্মতি প্রদান কর।  আল্লাহ তায়ালা নবীর আবেদন মঞ্জুর করে বললেন, হ্যাঁ আমি সম্মতি দিলাম।  এখন চেষ্টা করে দেখ। 

হযরত ছোলায়মান (আঃ) আল্লাহ তায়ালার অনুমতি লাভ করে আয়োজন আরম্ভ করে দিলেন।  জীন দ্বারা ময়দান পরিষ্কার করা ও সাজ-সজ্জার করার ব্যাবস্থা করলেন।  অতপর খাদ্য খাদক সংগ্রহ ও তৈরির কাজে মনোনিবেশ করলেন, মানুষ ও জিন উভয় জাতের কয়েক লক্ষ কর্মচারী নির্বাচন করলেন।  পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা ধরনের খাদ্য দ্রব্য এনে সেখানে জমা করা আরম্ভ হল।  এক হাজার বর্গ গজ আকৃতির ডেকসি জমা করা  হল সাত হাজার এর বেশি  গামলাগুলো ছিল একটি পুকুরের ন্যায়।  পেয়ালা, গামলা, গ্লাস ইত্যাদির মাপ সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব ছিল না।  এ অনুষ্ঠানের গরু জবেহ করা হল লক্ষাধিক।  মেষ, মহিশ, দুম্বা, ইত্যাদি জাতের পশুও অনুরূপ সংখ্যক জবেহ করা হয়েছিল। 

এ অনুপাতে পাহাড়ের ন্যায় স্তূপ করে অন্যান্য খাদ্যাদি জমা করা হয়েছিল মাঠের অর্ধেক জুড়ে।  দীর্ঘ আট মাস যাবত সংগ্রহ অভিযানের পরে হল রান্না ও খাদ্য তৈরির কাজ।  অসংখ্যক কর্মচারি একযোগ কাজ করার মাত্র চল্লিশ দিনের মধ্যে রান্না হয়ে গেল।  এক নির্দিষ্ঠ  তারিখে সমস্ত সৃষ্টি জীবকে দাওয়াত করা হয়েছিল।  তারা একদিন পূর্বে ময়দানে জমায়েত হতে আরম্ভ করল।  হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর উদর পূর্তির দাওয়াতের খবরে অনেকে দু’একদিন যাবত উপবাস থেকে হাজির হয়েছে যাতে উত্তম খাদ্য অধিক পরিমাণ খাওয়া যায়।  হযরত ছোলায়মান (আঃ) ময়দানের পাশ্ববর্তী সমুদ্রের মধ্যে শুন্যে বাতাসের উপর তাঁর সিংহাসন দাড় করে রাখলেন।  যাতে তাঁর পক্ষে মেহমানের দেশাশুনা করা সম্ভব হয়।  নির্দিষ্ট দিনে ভোরবেলা সমুদ্র থেকে বিশাল পাহাড়ের ন্যায় দানবাকৃতির এক মাছ সমুদ্র পানি ঠেলে মাথা উত্তোলন করে বলল, হে আল্লাহর নবী ছোলায়মান! তোমার দাওয়াত পেয়ে আমি এখানে এসেছি।  এখন খাবার কি আছে আমাকে দাও ।  প্রতিদিন আল্লাহ তায়ালা সূর্য উদয়ের পূর্বেই আমাকে খাবার দেন।  আজকে তোমার দাওয়াতের কারনে সে খাদ্য খেতে পারি নি।  অতএব ক্ষুধার যন্ত্রণায় খুবই অস্থির হয়ে পড়েছি।  দয়া করে আমাকে খাবার দাও।  

 হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর দাওয়াত-শেষ পর্ব  পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।