হযরত ইয়াহইয়া মাআয (রঃ) – শেষ পর্ব
হযরত ইয়াহইয়া মাআয (রঃ) – পর্ব ৬ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
স্বপ্নের নির্দেশ অনু্যায়ী খোরাসানের নিশাপুরে গিয়ে তিনি সর্বসাধারণের সমাবেশে ভাষণ দিতে শুরু করেন। প্রথমেই তিনি রাসূলে কারীম (সঃ)-এর নির্দেশের কথা উল্লেখ করলেন। তাঁর ঋণের কথাও চেপে রাখলেন না।
এ কথা শোনামাত্র সঙ্গে সঙ্গে একজন চল্লিশ হাজার ও অন্য একজন দশ হাজার টাকা দান করলেন। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ না করে বললেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ)- এর নির্দেশ ছিল, একজনেই আমার এক লক্ষ টাকা ঋণ শোধ করে দেবেন। যাহোক, এরপর তিনি এমন ওজস্বিনী বক্তৃতা দিতে শুরু করলেন যে, তাঁর তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে সভাস্থলে সাত ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। অতঃপর নিশাপুর থেকে তিনি গেলেন বখলে। আর সেখানে পণ্ডিত্যপূর্ণ বক্তৃতায় অভিভূতঃ হয়ে (বক্তৃতা বিষয় ছিল ধ্ন-সম্পদের ফজীলত) একজন শ্রোতা তৎক্ষণাৎ এক লক্ষ টাকা উপহার দিলেন। একজন দরবেশ বিরক্ত হয়ে বললেন, ধন-প্রাচুর্যের এরকম ফজীলত বর্ণনা করা ঠক হয়নি।
তিনি আবার বেরিয়ে পড়লেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তাঁর সব টাকা লুট হয়ে গেল। তখন দরবেশের বিরক্তির কথা তাঁর মনে পড়ে গেল। হয়ত ঐ বিরক্তির ফলেই তিই হৃতসর্বস্ব হলেন। এবার ভাষণ দিলেন হীরায়। সেখানেও তিনি তাঁর স্বপ্নের বিররণ পেশ করলেন। ঐ সভায় উপস্থিত ছিলেন এক আমীর দুহিতা। তিনি বললেন, যে রাতে হযরত ইয়াহইয়া (রঃ) স্বপ্ন দেখেন, ঠিক সেই রাতে তিনিও স্বপ্নে রাসূলে কারীম (সঃ)-এর নির্দেশ পেয়েছেন যে, অমুকের দেনা পরিশোধ ও অন্যান্য কাজের জন্য তিন লক্ষ টাকা দান করতে হবে। তাঁকে নিজে গিয়ে টাকা দিতে হবে কিনা তাও তিনি নবী মুস্তফা (সঃ)-কে জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু রাসূলে (সঃ) জানান, না তিনি নিজেই আসবেন।
আমীর কন্যা টাকা দিতে রাজি হওয়ার পরও তাঁকে একটি অনুরোধ করলেন, হযরত ইয়াহইয়া যেন সেখানে আরও চার দিন ভাষন দেন। তিনি সে অনুরোধ রাখলেন। কিন্তু ঐ চার দিনের দৃপ্ত ভাষণে পঁয়তাল্লিশ জন প্রাণ হারান। ভাষণ শেষে তিনি যখন বিদায় নেবেন, তখন আমীর কন্যার নগদ তিন লক্ষ টাকা, সোনা, রুপা ও অন্যান্য সামগ্রী এনে হাজির করলেন।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া