হযরত ইমাম শাফেয়ী (রঃ) – পর্ব ৩
হযরত ইমাম শাফেয়ী (রঃ) – পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এমন সময় এক বালক সভাস্থলে দাঁড়িয়ে বলল, আমাকে এ মাসআলার সমাধান দিতে আজ্ঞা হোক। বলে কী ছেলেটা! পাগল নাকি? বিদগ্ধজনেরা যা পারলেন না, সে তা পারবে বলে স্পর্ধা দেখায়! কিন্তু খলীফা তাকে অনুমতি দিলেন।
বালক বলল, জাহাপানা, আপনার নিকট আমার প্রয়োজন, না আমার নিকট আপনার প্রয়োজন? খলীফা বললেন, তোমার নিকটই আমার প্রয়োজন। তাহলে আসন থেকে নেমে আসুন। তার কারণটা সে বলে দিল। অর্থাৎ আলেমগণের স্থান উচ্চে। আল্লাহ তাঁদের বেশী সম্মান দিয়েছেন। খলীফা হারুনুর রশীদ সঙ্গে সঙ্গে নিচে নেমে এসে তাঁর আসনে বালককে বসিয়ে দিলেন।
এবার সে বাদশাহকে প্রশ্ন করে, আপনি কি কখনও শক্তি ও সুযোগ থাকা সত্ত্বেও পাপের কাজ না করে কেবল আল্লাহর ভয়ে তা থেকে বিরত থেকেছেন? খলীফা বললেন, আল্লাহর কসম, বহু ক্ষেত্রেই এমনটি হয়েছে। ছেলেটি বলল, তাহলে আমি ঘোষণা করছি, নিঃসন্দেহে আপনি জান্নাতী। সঙ্গে সঙ্গে শোরগোল পড়ে গেল। বিদগ্ধ জনেরা সমস্বরে বলে ওঠলেন, তুমি কোন যুক্তি-প্রামাণে বলে একথা বলছ? সে বলল, কেন, পাক কোরআনেই তো এর স্পষ্ঠ প্রমাণ আছে। আল্লাহ ঘোষণা করেছেন, আল্লাহর ভয়ে ভীত হয়ে যে ব্যক্তি প্রবৃত্তিকে পাপকর্ম থেকে বিরত রাখে, নিশ্চয় জান্নাত তার জন্য অবধারিত।
সভা স্তম্ভিত হয়ে গেল। এত অল্প বয়সে যার এমন বিরল প্রতিফা, পরিণত বয়সে না জানি আল্লাহ তাঁকে আরও কত আলোকিত করবেন। আমরা জেনেছি, স্বপ্নযোগে যে বালক রাসূলুল্লাহ (সাঃ)- এর পবিত্র মুখ- বিহবরের লালা লাভ করেছিল, আংটি পেয়েছিল বীরল-কেশরী হযরত আলী (রাঃ)-এর, এ সেই বালক। আর সেদিনের সেই বালকই পরিণত বয়সে হযরত ইমাম শাফেয়ী (রঃ) হিসেবে জগদ্বিখ্যাত হয়েছে।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া