হযরত ইমাম জাফর সাদেক (রঃ)- শেষ পর্ব

হযরত ইমাম জাফর সাদেক (রঃ)- দ্বিতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

আল্লাহর পথের যারা পথিক, তার ধ্যানে যারা মগ্ন। পৃথিবীর কোন শক্তি তাদের এতটুকু অনিষ্ট করত পারে না।  অপরিমেয় খোদায়ী শক্তি তাঁদের রক্ষা করে চলে অনুক্ষন। মহাসাধকগণ সেই শক্তির অধিকারী। সমকালের আরও  একজন বিখ্যাত সাধকের নাম হযরত দাউদ তায়ী (রঃ)। একদিন তিনি এলেন ইমাম জাফর সাদেক (রঃ)-এর কাছে।  বললেন, হুযুর, মনে হয় আমার অন্তর মলিন হয়ে গেছে। কিছু উপদেশ দিন। হযরত জাফর (রঃ) বললেন, আপনি এ কালের সর্বশ্রেষ্ট তাপস। আপনার উপদেশের কি প্রয়োজন?

দাউদ (রঃ) বললেন, হযরত! আপনি রাসূলুল্লাহর বংশধর।  এ যুগের শ্রেষ্ট মানুষ হিসাবে আমাদের উপদেশ দেওয়া আপনার কর্তব্য। 

তখন জাফর সাদেক (রঃ) জবাব দিলেন শুনুন, শেষ বিচারের দিনে নামাযী (রাসূলে কারীম) যদি প্রশ্ন করেন, তুমি কেন আমার তাবেদারী করলে না, তখন আমি কি  উত্তর দেব। সেই ভয়েই আমি তটস্থ। মনে রাখবেন, বংশ দিয়ে কিছু হয় না, আমল বা সাধনা দরকার। আমলই মুক্তি আনে। এবার দাউদ তায়ী (রঃ) কেঁদে ফেললেন। 

ওগো মাবুদ! যার দেহ নবী-কারীমের রক্তপ্রবাহ, যার স্বভাব-চরিত্রে নবী চরিত্রের আদর্শ, যার নামাজী প্রিয় রাসূল, যার জননী ধর্মনিষ্ঠা আদর্শ নারী- সেই তাপস-প্রধান জাফর সাদেকই যখন আপনার কর্মে সম্বদ্ধে হতাশ এবং মুক্তির বিষয়ে উৎকন্ঠিত, তখন দাউদ তায়ী আর এমন কি মানুষ যে নিজের কর্ম সম্বদ্ধে গৌরববোধ করবে?

আর একদিন হযরত জাফর সাদেক (রঃ) তার সহচর বন্ধুদের বললেন, এস, আমরা আজ সকলে শপথ নিই, রোজকিয়ামতে আমাদের মধ্যে যে মুক্তিলাভ করবে, সে আর সকলের গুনাহ মাফীর জন্য স্বয়ং আপনার নানাজী উপস্থিত থাকবেন, সেখানে আমাদের এমন শপথের কি কোন দরকার আছে?

জাফর সাদেক (র) বললেন, শোন, আমার নিজের ব্যাপারে ঐদিন তার দিকে তাকেতে আমার লজ্জা হবে। তাই তোমাদের এমন প্রস্তাব দিয়েছি।

এ ধরনের প্রচুর ঘটনা হযরত ইমাম জাফর সাদেক (রঃ) –এর জীবনে আছে। প্রতিটি ঘটনাই বর্ণনাবহুল, চমকপ্রদ, আলোচিত। আত্মনিবেদিত একটি মানুষের এ কাহিনী আমাদেরও আধার-হৃদয়ে আলো এনে দেয়। 

সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত ইমাম জাফর সাদেক (রঃ)- প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।