হযরত ইউসুফ (আঃ) -এর বিবাহ-পঞ্চম পর্ব
হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর বিবাহ-৪র্থ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
জোলেয়খা রাজা রায়ানের কথ শুনে বললেন, হে মহাত্মন। আপনি মহান আল্লাহ তায়ালার অধিক সন্তুষ্টি লাভের পন্থা দেখিয়ে যা কিছু করতে বলেন আমি নির্ধিদায় রাজি আছি। কারণ আমি হৃদয় উজাড় করে আল্লাহকেই ভালবাসি। সে স্থানে আমি দুনিয়ার কাউকে কোন দিন দিতে পারব না। রাজা রায়হান তখন জোলেখাকে বললেন, তাহলে তুমি প্রস্তুতি নাও। আগামী শুক্রবার দিন হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর সাথে তোমার শুভ বিবাহ সুসম্পন্ন হবে।
রাজার নির্ধারিত তারিখ অনুসারে রাজকীয় পরিবেশে দেশি-বিদেশী মেহমানদের এক বিরাট সমাবেশে বিরাট ধুমধামের সাথে হযরত ইউসুফ (আঃ) ও জোলেখার বিবাহ সম্পন্ন হল। হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর অন্তরের আশা পূর্ণ হল। বাসর রাতে হযরত ইউসুফ (আঃ) জোলেখাকে কুমারী দেখে প্রশ্ন করলেন, তুমি কুমারী থাকলে কি করে? উত্তরে জোলেখা বললেন, আমার পূর্ব স্বামী আজিজ মেছের ছিলেন একজন নপুংসক ব্যক্তি। তাঁর সাথে জীবনে আমার কোন দিন মিলন হয় নি। আল্লাহ তায়ালা তোমার জন্যই আমাকে অদ্য পর্যন্ত পাক-পবিত্র রেখেছেন।
হযরত ইউসুফ (আঃ) সত্তর বছর জীবিত ছিলেন। এর মধ্যে তাঁর দুটি পুত্র সন্তান জন্ম লাভ করে। তিনি দুর্ভিক্ষের দিনে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মানুষকে ক্ষুধার করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করেছেন। দেশবাসীকে পরিতৃপ্ত রাখতে সক্ষম হয়েছেন।
কথিত আছে দুর্ভিক্ষের শেষ চল্লিশ দিন মিশরের গুদাম শূন্য হয়ে গিয়েছিল। তখন তিনি আল্লাহ তায়ালার এক নির্দেশে প্রতিদিন দুইবেলা মায়দানে গিয়ে জনসাধারণকে সাক্ষাৎ দিতেন। এতে মানুষ ক্ষুধার তাড়না থেকে রক্ষা পেত। সকলে পেট ভর্তি খাদ্যের তৃপ্তি লাভ করত। এটা ছিল আল্লাহ তায়ালার এক বিশেষ কুদরতের খেলা।
হযরত ইউসুফ (আঃ) রাজা রায়হানের ইন্তেকালের পরে পরিপূর্ণ রাজ রাজাধিরাজ হিসেবে সিংহাসনে সমাসীন হলেন। দীর্ঘদিন তিনি পিতা, পুত্র, ভাই ভগ্নি ও আত্মীয়- স্বজনকে নিয়ে মহা জৌলুসে রাজকার্য পরিচালনা করেন। একই সাথে তিনি নবুয়তীর দায়িত্ব ও পালন করতেন। এভাবে পৃথিবীর বুকে এক অনন্য ইতিহাস রেখে তিনি তাঁর মহান রাব্বুল আলামীনের সান্নিধ্যে চলে যান।
সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী