হযরত আবু সালামা ও উম্মে সালামা (রাঃ) এর মদীনায় হিজরত – শেষ পর্ব
আল্লাহ্র কোন বান্দা আমার সঙ্গে ছিল না। তানঈম নামক স্থানে পৌছিবার পর বনু আব্দেদার গোত্রের হযরত ওসমান ইবনে তালহা ইবনে আবি তালহার সহিত সাক্ষাৎ হইল। তিনি বলিলেন, হে আবু উমাইয়ার বেটি, কোথায় যাইতেছ? আমি বলিলাম, আমার স্বামীর নিকট মদীনায় যাইতে চাহিতেছি। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমার সঙ্গে কেহ আছে কি? আমি বলিলাম, আল্লাহ্ এবং আমার ছেলে ব্যতীত আর কেহ আমার সঙ্গে নাই। তিনি বলিলেন, আল্লাহ্র কসম, তোমাকে এইভাবে একা ছাড়িয়া দেওয়া যায় না। অতঃপর তিনি আমার উটের রশি ধরিয়া আমার সঙ্গে চলিলেন এবং আমার উটকে অত্যন্ত দ্রুত চালাইলেন। আল্লাহ্র কসম, আমি তাহার ন্যায় ভদ্র ও চরিত্রবান, আরবের কোন ব্যক্তির সহিত চলি নাই। যখন কোন মনযিলে পৌছিতেন তখন উট বসাইয়া তিনি পিছনে সরিয়া যাইতেন।
আমি উট হইতে নামিয়া গেলে তিনি উট লইয়া পিছনে চলিয়া যাইতেন এবং উহার হাওদা নামাইয়া উটকে গাছের সহিত বাঁধিয়া দিতেন, তারপর তিনি পার্শ্বে কোন গাছের নিচে আরাম করিতেন। আবার রওয়ানা হওয়ার সময় হইলে উটের উপর হাওদা বাঁধিয়া আমার নিকট আনিয়া বসাইয়া দিতেন এবং নিজে পিছনে সরিয়া যাইতেন।
আমাকে বলিতেন, আরোহণ কর। অতঃপর আমি উটের উপর ঠিক হইয়া বসিয়া গেলে তিনি উটের রশি ধরিয়া সামনের মনযিল পর্যন্ত চলিতে থাকিতেন। সফরের শেষ পর্যন্ত তিনি আমার সহিত এই ব্যবহার করিয়াছেন এবং মদীনায় পৌছাইয়া দিয়াছেন। যখন কোবায় বনু আমর ইবনে আওফের বস্তি তাহার দৃষ্টিগোচর হইল তখন তিনি বলিলেন, তোমার স্বামী এই বস্তিতে আছেন, তুমি সেখানে যাও, আল্লাহ্ তোমাকে বরকত দান করুন।
হযরত আবু সালামা (রাঃ) সেখানে অবস্থান করিতেছিলেন। অতঃপর হযরত ওসমান ইবনে তালহা সেখান হইতে মক্কা ফিরিয়া চলিয়া গেলেন। হযরত উম্মে সালামা (রাঃ) বলিতেন, হযরত আবু সালামা (রাঃ) এর ঘরের লোকদের যত মুসীবত সহ্য করিতে হইয়াছে আমার মনে হয় আর কোন ঘরের লোকদের এত মুসীবত সহ্য করিতে হয় নাই। আর আমি হযরত ওসমান ইবনে তালহা অপেক্ষা অধিক ভদ্র ও চরিত্রবান সফরসঙ্গী আর কাহাকেও দেখি নাই। হযরত ওসমান ইবনে তালহা ইবনে আবি তালহা আবদারী (রাঃ) হুদাইবিয়ার সন্ধির পর মুসলমান হইয়াছেন। তিনি ও হযরত খালেদ ইবনে ওলীদ (রাঃ) এক সঙ্গে হিজরত করিয়াছেন।
সূত্রঃ হায়াতুস সাহাবা
হযরত আবু সালামা ও উম্মে সালামা (রাঃ) এর মদীনায় হিজরত – প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন