হযরত আবু বকর (রাঃ) কে দাওয়াত প্রদান – শেষ পর্ব

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহাকে কোরআন পড়িয়া শুনালেন। হযরত আবু বকর (রাঃ) হা-না কিছুই বললেন না, বরং ইসলাম গ্রহণ করিয়া ফেলিলেন এবং মূর্তিপূজা পরিত্যাগ করিলেন। অংশীদারদিগকে অস্বীকার করিয়া ইসলামের সত্যতা স্বীকার করিয়া লইলেন এবং মুমিন ও মুসাদ্দিক (অর্থাৎ সত্য স্বীকারকারী) হইয়া ফিরিলেন।

অপর এক রেওয়ায়াতে বর্ণিত হইয়াছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, আমি যাহাকেই ইসলামের দাওয়াত দিয়াছি সে ইতস্ততঃ দ্বিধাগ্রস্ত হইয়াছে চিন্তা করিয়াছে; কিন্তু আবু বকরকে যখন দাওয়াত দিয়াছি তিনি না বিলম্ব করিয়াছেন, আর না কোনরূপ ইতস্তত করিয়াছেন। ইবনে ইসহাক (রহঃ) হইতে বর্ণিত উপরোক্ত রেওয়ায়াতে হাঁ-না কিছুই বলিলেন না’ যে কথাটি বলা হইয়াছে তাহা ঠিক নহে।

কারণ ইবনে ইসহাক ও অন্যান্য বর্ণনাকারীগণ সকলেই উল্লেখ করিয়াছেন যে, হযরত আবু বকর (রাঃ) নবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্বে হইতেই রাসূলুল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গী ছিলেন। তিনি তাঁহার সততা, আমানতদারী ও উত্তম স্বভাব-চরিত্র সম্পর্কে পূর্ব হইতে অবগত ছিলেন।

এরুপ ব্যক্তি ত মানুষের সম্পর্কেই মিথ্যা বলিতে পারে না, আল্লাহর সম্পর্কে কিরুপে মিথ্যা বলিবে! অতএব তাঁহার শুধুমাত্র এই কথার উপর যে, আল্লাহ তায়ালা তাঁহাকে রাসূল বানাইয়া পাঠাইয়াছেন, কালবিলম্ব না করিয়া তিনি তাহা সত্য বলিয়া মানিয়া লইলেন। কোনরূপ ইতস্ততঃ বা দেরী করিলেন না।

বোখারী শরীফে হযরত আবু দারদা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, একবার হযরত আবু বকর (রাঃ) ও হযরত ওমর (রাঃ) এর মধ্যে কোন বিষয় লইয়া বিবাদ হইলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়াসাল্লাম বলিলেন, আল্লাহ তায়ালা যখন আমাকে নবী বানাইয়া পাঠাইয়াছেন তখন তোমরা বলিয়াছ, আমি মিথ্যা বলিয়াছি, আর আবু বকর আমাকে সত্য বলিয়াছে।

সুতরাং তোমরা আমার জন্য আমার সঙ্গীকে ছাড়িয়া দিবে কি? তিনি এই কথা দুইবার বলিয়াছেন। অতএব ইহার আর কেহ তাঁহাকে কখনও কষ্ট দেয় নাই। এই হাদীস হযরত আবু বকর (রাঃ) এর প্রথম মুসলমান হইবার পক্ষে স্পষ্ট প্রমাণ বহন করে। (বিদায়াহ)

সূত্রঃ হায়াতুস সাহাবা

হযরত আবু বকর (রাঃ) কে দাওয়াত প্রদান – প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।