হযরত আবু ইয়াকুব ইবনে ইসহাক নহর জওয়ান (রঃ) – পর্ব ১

হযরত আবু ইয়াকুব ইবনে ইসহাক নহর জওয়ান (রঃ) মক্কার একজন বিখ্যাত সাধক পুরুষ ছিলেন। পূত নির্মল চরিত্রের এই তপসের চেহারাও ছিল জ্যোতির্ময়। কঠোর সাধনাবলে তিনি যে সাফল্য অর্জন করে, তা তাকে সমকালের এক শ্রেষ্ঠ তাপসে উন্নীত করে। হযরত আমর ইবনে ওসমান (রঃ)-সান্নিধ্যে এবং সংস্পর্শে তাঁর অধ্যাত্ম জ্ঞানের বিকাশ ঘটে।

একবার এক ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে বলেন যে, তাঁর হৃদয় অত্যন্ত কঠিন হয়েছে বলে তাঁর মনে হয়। তিনি বহুজনের কাছে গিয়েছেন। তাঁরা নানাজনে নানা কথা বলেছেন। কেউ বলেছেন রোজা রাখতে, কেউ পরামর্শ দিয়েছেন দেশ ভ্রমণের। সকলের সব কথা তিনি শুনেছেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি।

তাঁর কথা শুনে হযরত ইয়াকুব (রঃ) বললেন, তাঁরা সকলেই ভুল পথের নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর ব্যধির চিকিৎসা হল, গভীর রাতে মসজিদে গিয়ে কান্নাকাটি করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। অথবা তিনি যেন দিশেহারা বিভ্রান্ত মানুষটিকে সাহায্য করেন।

লোকটি পরে বলেন তাঁর নির্দেশমতো কাজ করে তিনি অভাবিত সাফল্য লাভ করেন। তার অন্তরের ব্যাধি সম্পূর্ণরূপে নিরাময় হয়।

একজন তাকে বললেন যে, তিনি নামাজ পড়েন বটে, তবে তার কোন স্বাদ অনুভব করেন না। হযরত ইয়াকুব (রঃ) বললেন, তুমি নামাজে দাঁড়িয়ে অন্তরের খবর নিলে নামাজের স্বাদ কিরূপে অনুভব করবে? যেমন একটা প্রবাদ আছে, গাধার পায়ে দড়ি বেঁধে সফরে বের হলে দাঘা পথ অতিক্রম করতে পারে না।

হযরত আবু ইয়াকুব ইবনে ইসহাক নহর জওয়ান (রঃ) একবার এক অন্ধ লোককে কাবা গৃহ তওয়াফ করতে দেখেন এবং সে বলছিল, আউযু বিকা মিনকা। অর্থাৎ আমি তোমার নিকট তোমা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি। তিনি তাকে জিজ্ঞেস করেন। এ কোন ধরণের দোয়া? সে বলল, সে একবার এক সুদর্শন লোকের দিকে কুদৃষ্টি নিক্ষেপ করে। তাতে তার মনে এক ধরণের সুখবোধ জেগেছিল। এমন সময় না জানি কোথা থেকে বাতাসের ঝাপটা এসে তার চোখে লাগে আর তা অন্ধ হয়ে যায়। তখন অদৃশ্য শব্দ শোনা যায়- তুমি একবার দৃষ্টিপাত করায় চড় খেয়েছে। যদি আবারও দৃষ্টিপাত করতে, তাহলে তা হতো আরও বেশী শান্তিযোগ্য।

সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত আবু ইয়াকুব ইবনে ইসহাক নহর জওয়ান (রঃ) – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।