হযরত আবু ইসহাক ইব্রাহীম শায়বানী (রঃ) – পর্ব ১

হযরত আবু ইসহাক ইব্রাহীম শায়বানী (রঃ) সমকালের শ্রেষ্ঠ তাপস। ধর্মনিষ্ঠ বিদ্বান। নির্মল চরিত্রের এই সাধক প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে সফল হয়েছিলেন। তাঁর সম্বন্ধে বিখ্যাত সাধক হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক (রঃ) বলেন, তিনি আল্লাহর প্রিয় বন্ধু। নির্জন সাধনায় তিনি জীবনের অধিকাংশ সময় অতিবাহিত করেন।

চল্লিশ বছর ধরে তিনি মক্কায় হযরত আবু আবদুল্লাহ মাগরেবী (রঃ) – এর সংস্পর্শে অবস্থান করেন। এই দীর্ঘকাল তিনি তেমন কিছু আহার করেননি বললেই চলে। আশ্চার্য এই যে, এ সময়ে তাঁর নখ ও চুল বাড়েনি। পরনের কাপড় ময়লা হয়নি। কাবা ছাড়া অন্য কোথাও শয়ন করেননি। আশি বছর পর্যন্ত তিনি লোভনীও কোন খাদ্য সামগ্রী গ্রহণ করেননি।

একবার শাম দেশে অবস্থানকালে তাঁর মসুর ডাল খাবার ইচ্ছা হয়। ইচ্ছা হতেই হাতের কাছে চলে এল এক পেয়ালা মসুর ডাল। বেশ তৃপ্তিভরে তিনি তা খেলেন। তারপর বাজারে গিয়ে এক গলিতে কতকগুলি মটকা দেখতে পেলেন। যখন জানলেন যে, সেগুলি শরাবভর্তি, তখন তাঁর মন খারাপ হয়ে গেল। মনে হল, মুসলমান হিসেবে মটকাগুলি তাঁর ভেঙে ফেলা উচিত। আর তিনি সেগুলি ভেঙেও ফেললেন। গলিফথে যেন শরাবের স্রোত বয়ে গেল। দোকানের মালিক তাঁকে প্রশাসন বিভাগের কর্তা মনে করে চুপ করে রইল।

কিন্তু পরে যখন সে বুঝল যে, তিনি প্রশাসক নন, তখন তাঁকে ধরে নিয়ে গেল প্রকৃত প্রশাসকের কাছে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁকে দু’শ বার বেত্রাঘাত করা হল। তারপর নিয়ে যাওয়া হয় কয়েদখানায়। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি কারাবাস করেছেন। একদিন সেখানে সফরে গেলেন হযরত আবদুল্লাহ মাগরেবী (রঃ)। তাঁর ব্যক্তিগত চেষ্টায় তিনি জেলখানা থেকে ছাড়া পেলেন। হযরত মাগরেবী (রঃ) তাঁর বিপর্যয়ের কথা জিজ্ঞেস করলে হযরত আবু ইসহাক (রঃ) তাঁর মসুর ডাল খাওয়ার ইচ্ছার কথা উল্লেখ করেন। ঐ ডাল খাওয়ার লোভেরই এটা পরিণাম বলে তাঁর বিশ্বাস। হযরত মাগরেবী (রঃ) – ও বললেন, অপরাধের তুলনায় শাস্তি সামান্যই হয়েছে বলতে হবে।

একবার হজ্জ উপলক্ষে প্রথমে তিনি মদীনায় রওজা পাকে গিয়ে সালাম জানানঃ আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ। সঙ্গে সঙ্গে কবর শরীফের ভেতর থেকে উত্তর আসে- ওআলাইকুমুস সালামু ইয়া ইবনে শায়বান। পরে হজ্জের জন্য তিনি মক্কা মোয়াজ্জমায় গমন করেন।

সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত আবু ইসহাক ইব্রাহীম শায়বানী (রঃ) – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।