হযরত আবু আলী শাকীক বখলী (রঃ) – শেষ পর্ব

হযরত আবু আলী শাকীক বখলী (রঃ) – পর্ব ৩  পড়তে এখানে ক্লিক করুন

মক্কা থেকে তিনি আবার ফিরলেন বাগদাদে।  বাগদাদে এক জনসভায় প্রসঙ্গেক্রমে তিনি বললেন, আমার এ বিদেশযাত্রায় আমি চার দাং (চব্বিশ রতি) রুপা রেখেছিলাম।  তা এখনও আমার কাছ আছে, একথা শুনে এক তরুন বলল, হজু্র! আপনি যখন আমার সঙ্গে ঐ রুপা নেন তখন কি আল্লাহ ছিলেন না।  না, তাঁর উপর আস্থা ছিল না? তরুণের কথা শুনে তিনি বিমর্ষ হলেন।  বললেন, তুমি ঠিকই বলেছ।  বলেই আমি বহু পাপ করেছি।  আমাকে তওবা করিয়ে দিন।  তিনি বললেন, আপনি বড় দেরি করে ফেলেছেন,  আগে এলেন না কেন? বৃদ্ধ বললেন, না আমি তাড়াতাড়ি এসেছি।  মৃত্যুর আগে যে তওবা করতে আসে, সে কি তাড়াতাড়ি এল না?

বৃদ্ধের কথা বেশ অর্থবহ ও যুক্তিপূর্ণ।  হযরত শাকীক (রঃ) বললেন, হ্যাঁ, আপনি তাড়াতাড়ি এসেছেন।  আর সত্য কথাই বলেছেন। 

তাঁর অমূল্য উপদেশবাণীসমূহঃ

(১) তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম কেউ বলেছে, যে ব্যক্তি রুজির ব্যাপারে আল্লাহর ওপর নির্ভর করে, তাঁর স্বভাব উত্তম হয়।  এবাদতে তার প্রেরণা আসে।

(২) বিপ্নন হয়ে চিৎকার করে যে অস্থির হয়, সে যেন তীর ধনুক নিয়ে আল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়।

(৩) উপাসনার আসল বস্তু হল আল্লাহকে ভয় করা, তাঁর রহমতের আশা করা ও তাঁর ওপর বিশ্বাস বজায় রাখা।

(৪) যার সঙ্গে তিনিটি বস্তু নেই সে জাহান্নাম থেকে রেখাই পাবে না।  সেগুলো হল

(১) শান্তি, (২) ভয়, (৩) ব্যাকুলতা।

(৫) তিনটি বস্তু সাধকগণের সাথী যথা- (১) মনের স্বাধীনতা, (২) হিসাব-নিকাশে অপরিক্কতা ও (৩) হৃদয় প্রশান্তি বা সুখ।

(৬) মৃত্যুর জন্য সদা-সর্বদা প্রস্তুত থাকা চাই।  কেননা, মৃত্যু হাজির হবেই।  আর তা হাজির হলে কখনও ফিরে যাবে না।

তাঁরা এই একই জবাব দিয়েছেন-

(১) যে ব্যক্তি দুনিয়ার সঙ্গে প্রেম করে না, দুনিয়াদারীর লোভে পড়ে না, প্রতারিত হয়, সেই জ্ঞানী।  (২) যে আল্লাহর ভাগ-বটোয়ারায় খুশী, সেই ধনী (৩) যার অন্তরে বেশী ধন লাভের আকাঙ্খা নেই, সেই দরবেশ।  (৪) যে আল্লাহর মালপত্রের  হক আদায় করে না সেই কৃপণ। 

সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত আবু আলী শাকীক বখলী (রঃ) – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।