হযরত আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ফজল (রঃ) – পর্ব ১

হযরত আহমদ খাযরুইয়া (রঃ)-এর সুযোগ্য শিষ্য হলেন হযরত আব্দুল্লাহ (রঃ) । অধ্যাত্মতত্বে সুপণ্ডিত ও প্রেমিক হযরত আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ফজল (রঃ) হৃদয়ের কোমলতা ও মমত্ববোধের জন্য বিখ্যাত ছিলেন । হযরত তিরমিজি (রঃ)-এর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয় । হযরত আবু ওসমান হীরী (রঃ)-এর সঙ্গেও তাঁর ভালো সম্পর্ক ছিল । একবার হযরত হীরী (রঃ) চিঠি লেখে তাঁর কাছে জানতে চাইলেন, দুর্ভাগ্যের লক্ষন কী? জবাবে তিনি তিনটি লক্ষন এর কথা উল্লেখ করেন ।

যথা (১) বিদ্যা আছে, কিন্তু তার আনুশীলন নেই, (২) আনুশীলন আছে কিন্তু তার সঙ্গে বিশুদ্ধতা নেই, (৩) পুণ্যবান ও জ্ঞানীদের সাক্ষাৎ লাভ করেছে, কিন্তু তাদের সম্মান প্রদর্শনের সৌভাগ্য হয়নি । তার সমন্ধে হযরত ওসমান হীরী (রঃ) বলেন, হযরত আবদুল্লাহ আল্লাহর সিদ্ধ পুরুষদের মধ্যে তৃতীয় । যদি সুযোগ থাকত তা হলে আমি তাঁর সান্নিধ্যে গিয়ে আমরন অন্তরকে আলোকিত ও পবিত্র করে নিতাম । শোনা যায় , বলখবাসী তাঁর ওপর নানা ধরনের নির্যাতন করে তাঁকে বলখ থেকে বের করে দেয় । তখন খুবই দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় তিনি অভিশাপ দেন । তাদের মধ্যে থেকে আপনি সত্যের জ্যেতি দূর করে দিন ।

তারপর থেকে বলকে আর সত্যনিষ্ঠ খাঁটি লোকের অস্তিত্ব দেখা দেয়নি । হৃদয়ের প্রসারতা ও শান্তি কিভাবে পাওয়া যায়? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যথাযথ বিশ্বাসের ওপর সুদিঢ় থাকতে হয় । তার দৃষ্টান্ত এই যে, শিশু অন্ধকার ঘরে লালিত-পালিত হয়ে পরে বাইরে এসে সর্বপ্রথম সূর্যকে দেখে যেমন বিস্ময় বোধ করে এবং বহুকাল তার দিকে তাকাতে পারে না পরে সূর্য সম্বন্ধে তার কিছু কিছু ধারনা গড়ে ওঠে ।

আর সেই জ্ঞান ও ধারণার বলে সূর্য সম্পর্কিত গোপন কথাও অবিহিত হতে পারে । আল্লাহর ক্ষেত্রে মানুষের একই অবস্থা । প্রথমে আল্লাহ্ সম্পর্কে বিদ্যা অর্জন করে । পরে দিঢ় বিশ্বাস জম্নে । তারপর সৃষ্টি হয় চাক্ষুষ দিঢ় বিশ্বাসের ওপর সুদিঢ় থাকতে হয় । মানে আল্লাহর মহিমা, সৃষ্টি কৌশল ও শক্তি প্রভৃতি দেখে দেখে অন্তরের বিশ্বাস আরও দৃঢ় হওয়া । তারপর আসে সর্বোচ্চ যথাযথ বিশ্বাস । আর এই বিশ্বাস দিয়ে দ্বিধামুক্ত, সংশয়হীন অবস্থার সৃষ্টি হয়ে আল্লাহর প্রতি প্রেম-তন্ময়তা ও প্রকৃত শক্তির অভ্যুদয় ঘটে ।

সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ফজল (রঃ) – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!