হযরত আবুল হাসান বুশঙ্গী (রঃ) – পর্ব ১
আবুল আবুল হাসান বুশঙ্গী (রঃ) বুশঙ্গ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু বসবাস করতেন ইরাকে। বহুদিন পরে তিনি যখন জন্মভূমিতে ফিরে আসেন, তখন তাঁর দেশবাসী তাঁকে অগ্নিপূজক কাফের বলে অপবাদ দেন। ফলে তিনি নিশাপুরে চলে যান। আর সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। অথচ তিনি উচ্চস্তরের সাধক ছিলেন। সে যুগের বিখ্যাত তাপস হযরত আবু ওসমান (রঃ), হযরত আতা (রঃ) হযরত আবু আমর (রঃ) প্রমুখের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল।
শোনা যায়, একটি লোকের গাধা হারিয়ে যায়। কোথাও সেটি খুঁজে না পেয়ে সে শেষ পর্যন্ত এল আবুল আবুল হাসান বুশঙ্গী (রঃ)-এর কাছে। তার ধারণা, গাধাটি ইনিই নিয়েছেন। অতএব, হযরতের কাছে সে গাধা ফেরত চাইল। হযরত হাসান (রঃ) যতই তাকে বোঝান, তিনি তার গাধা চুরি করেননি, ততই তার সন্দেহ ঘনীভূত হয়।
সকাল-দুপুর সব সময়েই সে আসে। আবুল আবুল হাসান বুশঙ্গী (রঃ) একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেন। তখন বাধ্য হয়ে আল্লাহর কাছে এ বিপদ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার প্রার্থনা জানালেন। আল্লাহ তাঁর প্রিয় দাসের দোয়া কবুল করলেন। সঙ্গে সঙ্গে গাধাটি এসে হাজির। তখন গাধার মালিক কিছুটা লজ্জার ভঙ্গিতে বলল, আপনি যে আমার গাধা চুরি করতে পারেন না, তা আমি আগে থেকেই জানতাম। কিন্তু গাধাটি ফিরে পেতে আপনার মতো একজন সিদ্ধ পুরুষের প্রয়োজন যে! তাই আপনার সঙ্গে এরূপ বেয়াদবী করেছি। আমাকে ক্ষমা করুন।
একদিন পথে চলাকালীন এক তুর্কী তাঁর ঘাড়ে সজোরে ধাক্কা মারল। প্রত্যক্ষদর্শীরা লোকটিকে ভৎর্সনা করে বলল, তুমি এর পরিচয় জান কি? ইনি হযরত আবুল হাসান (রঃ)। লোকটি সঙ্গে
সঙ্গে তাঁর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করল। তিনি বললেন, তুমি নিশ্চিত থাকতে পার। কেননা এ ঘটনা যে তোমার থেকে ঘটেছে, আমি তা মনে করি না। আর যিনি এটা ঘটিয়েছেন তিনি ভুল করেননি।
একদিন স্নান করতে তাঁর মনে হল, তাঁর গায়ের জামাটি অমুক দরবেশকে দান করা দরকার। আর তখনই তিনি চাকরকে ডেকে জামাটি দিয়ে আসতে বললেন। চাকর বলল, খানিকটা দেরী করুন। তিনি বললেন, ভয় হয় কী জান? গোসলখানা থেকে ফিরতে ফিরতে শয়তান আমার ইচ্ছাটা বদল করে দেবে।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া
হযরত আবুল হাসান বুশঙ্গী (রঃ) – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন