হযরত আবুল কাশেম নসরবাদী (রঃ) – শেষ পর্ব

হযরত আবুল কাশেম নসরবাদী (রঃ) – ২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

তিনি প্রতিনিয়ত বলতেনঃ

১. প্রকাশ্য ধ্যান করার যার শক্তি আছে সে নিরুপায় নয়। যার নেই সে উপায়হীন।

২. আল্লাহর রজ্জু দ্বারা যে আবদ্ধ, সে যাবতীয় বিঘ্ন-বিপর্যয় ও শয়তান প্রতারণা থেকে মুক্ত।

৩. প্রকাশ্য নয়, গুপ্ত বিদ্যায় মারফতী মুরিদকে পথ দেখানো চাই।

৪. আল্লাহর কাহফ আল্লাহর পুণ্যশীল দাস কোন মাধ্যম ছাড়াই আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছিলেন। সে জন্য তাঁদেরকে বীরপুরুষ ও সাহসী বলে।

৫. সুন্নতের অনুসরণ দ্বারা মারেফাত, ফরজ আদায় দ্বারা আল্লাহর সান্নিধ্য এবং নফল আদায় দ্বারা আল্লাহ ও রাসূলের ভালোবাসা পাওয়া যায়।

৮. যে নিজের প্রবৃত্তিকে শিষ্ট বানাতে পারে না, তাকে শিষ্টাচার অভিজ্ঞ বলা যায় না।

৯. একবার তাঁর কাছে লোকেরা বলল, কোন কোন পুরুষ মহিলাদের সাথে চলাফেরা করে বলে যে, আমরা নারীদের দেখলেও নিষ্পাপ থাকি। তিনি বললেন, যতক্ষণ বর্তমান ততক্ষণ পর্যন্ত শরীয়তের আদেশ-নিষেধ পালন করা চাই। তা থেকে কাকেও রেহাই দেয়া যায় না।

১০. পুণ্য কর্ম হল কুরআনের নির্দেশ পালন করা, রিপুর লালসা ও মন্দ স্বভাব দূর করে দেয়া, মুর্শিদের কথা মেনে চলা ও জগতকে অক্ষম মনে করা।

১১. আল্লাহ ছাড়া অন্য সব কিছু থেকে পালিয়ে যাওয়ার নাম তাকওয়া বা ধর্মনিষ্ঠা।

১২. লোকগণ বলল, হুযুর! আপনার মধ্যে আল্লাহ প্রেমের কোন নিদর্শন দেখি না। তিনি উত্তর দিলেন, তোমরা সত্যই বলেছ। তবে আমার অন্তর সদাসর্বদা আল্লাহর প্রেমের আগুনে জ্বলছে।

১৩. যে ব্যক্তি ধন লাভ করে ধনদাতার কৃতজ্ঞতা জ্ঞান করে, তার ধন বৃদ্ধি পায়। আর তার মারেফাত ও আল্লাহ প্রেমের উন্নতি হয়।

১৪. মানুষের দেহ একটি কারাগার সদৃশ। যদি দেহ পিঞ্জর থেকে মুক্ত হতে পারে, তখনই বুঝবে যে তুমি আরাম পেয়েছ।

১৫. যে ব্যক্তি নিজের সুখের প্রত্যাশী, তাকে বল আল্লাহ যে বিষয়ে খুশী, সে যেন সেই বস্তু ধরে ও তারই আশ্রয় গ্রহণ করে।

১৬. মনের পবিত্রতা আল্লাহর জ্যোতি সদৃশ। ঐ জ্যোতি আল্লাহর দিকে পথ দেখায়। মুক্তির আশা উপাসনা ও সাধনার দিকে আকর্ষণ করে, ভয় পাপ থেকে বিরত রাখে। সত্যের দিকে পথা প্রদর্শন করে।

১৭. কারামত কী? -এর উত্তরে তিনি বলেন, আমার কারামত এই যে, যে আমাকে নসররাবাদ থেকে পাগল বানিয়ে নিশাপুরে হযরত শিবলী (রঃ)-এর কাছে এনে ফেলেছে। তাতে প্রতিবছর হাজার দুতিন লোক আল্লাহর কাছে পৌঁছবে। কিন্তু আমি তার মধ্যে কিছুই নই।

১৮. সংসার বৈরাগ্য কী? এর উত্তরে তিনি বলেন, আল্লাহ ছাড়া আমার যা আছে তা থেকে বিমুখ হওয়াই সংসার বৈরাগ্য।

হযরত আবুল কাশেম (রঃ)-এর মৃত্যু হলে মদীনার জান্নাতুল বাকী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। হযরত আবু ওসমান (রঃ)-ও সেখানে সমাহিত হন।

সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত আবুল কাশেম নসরবাদী (রঃ) – প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।