হযরত আদম (আঃ)-এর প্রথম অপরাধ -১ম পর্ব

আল্লাহ তায়ালা হযরত আদম হওয়াকে পরম আনন্দে বেহেস্তে বসবাসের হুকুম দেন এবং নির্দিষ্ট একটি গাছের নিকট যেতে ও তাঁর ভক্ষণ করতে নিষেধ করেন । গাছটির নাম ছিল গন্ধম গাছ । গাছটি ছিল স্বর্ণ ও রৌপ্যের তৈরি । ডালপালা  ছিল মণিমুক্তা সজ্জিত । ফলগুলো দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ছিল এবং খেতে ও ছিল সুস্বাদু ।  

হযরত আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়া অতিব আনন্দে ও আরামে বেহেস্তে বসবাস করতে লাগলেন । মাঝে মাঝে হযরত আদম (আঃ) গন্ধম গাছ সম্বন্ধে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশের রহস্য নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতেন । আল্লাহ তায়ালা তাঁদের জন্য বেহেস্তের সকল কিছু করে দিয়েছেন । সব কিছু ভোগের অনুমতি দিয়েছেন, এমন কি অনেক কিছুর মালিকানা পর্যন্ত তাদেরকে দান করেছেন । কিন্তু গন্ধম ফল সম্বন্ধে এত কঠিন নির্দেশ কেন দিলেন । এ ধরণের চিন্তা ভাবনার সময় আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলা হত । শয়তান কিন্তু তোমাদের চির শত্রু। সে সর্বক্ষণ তোমাদেরকে বিপথগামী করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।

এভাবে হযরত আদম (আঃ)-এর  নিকট প্রায়ই সতর্কবাণী আসত । হযরত আদম (আঃ) এ সব বানী শুনে সতর্ক হতেন ।  তিনি গন্ধম গাছের দিকে ফিরেও তাকাতেন না । অধিকাংশ সময় ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকতেন এবং আরশে ঝুলন্ত লিপির কালামগুলো পাঠ করতেন। যদি ও তিনি বারবার পাঠ করতেন কিন্তু সব কিছুর নিগুঢ় তথ্য তিনি আয়ত্ত করতে সক্ষম হননি । এজন্য মাঝে মাঝে হযরত আদম (আঃ)-কে প্রশ্ন করতেন । জিব্রাইল বলতেন ঐ লিপির অর্থ যতটুকু আল্লাহ তাঁকে শিক্ষার অনুমতি দিয়েছেন, তততুকু তিনি অবগত আছেন । বাকী তথ্য তাঁর জ্ঞানের বহির্ভূত ।

এ সময় শয়তানকে আল্লাহ তায়ালা বেহেস্তের বাইরে ববাসের নির্দেশ দেন । শয়তান সেখানে বসে হযরত আদম (আঃ) এর সর্বনাশের চিন্তায় দিবারাত্র ফেকের করতে থাকে । একদা সে চিন্তা করল, যে কোন  উপায়ে আদম-হাওয়ার সাথে একবার সাক্ষাত করতে হবে।  তাই সে এক নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করল । বেহেস্তে থাকাকালীন সময়ে সে যে সব দোয়া দুরুদ পাঠ করে কঠিন সমস্যাবলী উত্তীর্ণ হতে প্রার্থনা করল । তখন তাঁর ভাগ্য প্রসন্ন হল । এসমে আজমের বরকতে সে বাস্তবিকই বেহেস্তের দরজায় গিয়ে পৌঁছাতে সক্ষম হল । সেখানে গিয়ে সে দেখল একটি ময়ূর প্রাচীরের উপর বসা । ময়ূর শয়তানকে দেখে চিনল না । সে জিজ্ঞাসা করল তুমি কে ? শয়তান উত্তর দিল আমি একজন ফেরেস্তা । ময়ূর জিজ্ঞেস করল, এখানে কি চাও ? শয়তান বলল, আমি বেহেস্তের মধ্যে প্রবেশ করতে চাই । ময়ূর বলল, হযরত আদম (আঃ) সেখানে থাকাকালীন সময়ে সেখানে কারো প্রবেশের অনুমতি নেই ।

সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

হযরত আদম (আঃ)-এর প্রথম অপরাধ -২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!