হযরত আছিয়ার জন্মলাভ – ২য় পর্ব

হযরত আছিয়ার জন্মলাভ – ১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

স্বামীর নিকট এরূপ কথা শ্রবণ করে কোন রমণীরই নীরব হয়ে থাকা সম্ভব নয়। এরূপ কঠিন মন্তব্য অন্য যে কোন লোকের মুখে শুনে তা হজম করে নেয়া চলে কিন্তু স্বামীর মুখের এরূপ কথা নারীদের মনে ভীষণ আঘাত হানে। মোজাহাম পত্নীও মনে ব্যাথা পেলেন।

ইচ্ছা হল, মুখের উপর বলে ফেলেন, সন্তান না হওয়ার দুঃখ আমার হৃদয়েও সামান্য নহে। আপনার মত দুর্ভাগা পুরুষের গৃহে না এসে যদি অন্য কারও গৃহে যেতাম, হয়তবা এতদিনে নিশ্চয়ই আমি সন্তান লাভ করতাম।

কিন্তু সতী নারীগণ এরূপ কখনই বলে না। এটা তাঁদের বলার কথা নয়। তাই মনের এ কথা মনের ভিতরই চেরে রেখে নির্জীবভাবে মৃদুকণ্ঠে বললেন, স্বামী! নিশ্চয়ই আমি ভাগ্য বিড়ম্বিতা নতুবা এরূপ হবে কেন? আপনি আর একটি বিবাহ করে অন্য স্ত্রী গৃহে আনুন।

কথাটা বললেন, কিন্তু মোজাহাম পত্নীর কণ্ঠস্বরে মর্মবেদনার তীব্র দহন ফুটে উঠল। মোজাহাম তা স্পষ্টরূপেই অনুভব করলেন। পত্নীর এ হৃদয়ের আঘাত বুঝতে পেরে সহসা তাঁর হুঁশ হল, এ প্রকার কথার দ্বারা অবলা নারীকে ব্যথা দেয়া তাঁর ঠিক হয় নেই। জবাবে পত্নী যে কথা বললেন, তা তাঁর অন্তরের কথা নয়, তা নারীদের প্রচণ্ড অভিমানেরই বহিঃপ্রকাশ।

অতএব তিনি তন্মমূহুর্তে প্রিয় পত্নীর কণ্ঠের উপর হস্ত রেখে স্নিগ্ধস্বরে বললেন, প্রিয়তমা ! তোমার মত ভার্যা থাকতে অন্য নারীর পাণিগ্রহণ করা যে কোন নরের পক্ষে নির্বুদ্ধিতা। সন্তান দ্বারা কি লাভ হবে? আল্লাহ্‌র যদি ইচ্ছা না থাকে, সন্তানের কোন প্রয়োজন নেই।

কিন্তু এ কথা সত্য জানিও তোমার মত রমণী রত্নের স্বামী হয়ে সত্যই আমি ধন্য হয়েছি। এ সংসার আমার নিকট স্বর্গের মত মনে হচ্ছে। আমি একটু পূর্বে যে কথাটি বলেছি তাতে তোমার মনে ব্যথা পাইও না। ও কথা আমার হৃদয়ের কথা নয়, কেবল মাত্র তোমার সাথে রহস্যচ্ছলে বলছিলাম।

স্বামীর এরূপ অকপট সান্তনা এবং প্রবোধদানে মুহূর্তে তাঁর পত্নীর মন হালকা হয়ে গেল। দু’চোখে তাঁর দু’ফোটা অশ্রু মুক্তার মত চিক চিক করে উঠল। মোজাহাম তা স্বীয় হস্তে পরম যত্নে মুছে দিলেন।

এ ঘটনার কিছুদিন পর একদা রাত্রে মোজাহাম-পত্নী স্বামী সকাশে উপস্থিত হয়ে বললেন, ওগো! আপনার কাছে একটি সংবাদ দিতে আসছি। মোজাহাম বললেন, এমন কি সংবাদ প্রিয়তমা !

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।